সিরিজ জয়ের জন্য বাংলাদেশের সামনে সহজ লক্ষ্য

আজ সিরিজে সমতা ফেরাতে বাংলাদেশকে আগুনের জবাব আগুন দিয়েই দিতে চেয়েছে নিউজিল্যান্ড। চতুর্থ টি-টোয়েন্টিতে আগে ব্যাট করে সেটা কতটা করতে পেরেছে এখনই বলার উপায় নেই। স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে উইল ইয়াংয়ের ব্যাটে পাওয়া ৯৩ রানের পুঁজি মিরপুরের পিচে লড়াকু সংগ্রহ। কিন্তু নাসুম আহমেদের স্পিন ঘূর্ণির সাথে মুস্তাফিজুর রহমানের কাটার বিষে নিজেদের প্রত্যাশা যে পুরোপুরি পূরণ হয়েছে সেটা বলা যাবেনা।

নাসুম নিজের ক্যারিয়ার সেরাতো বটেই, দেখা পেয়েছেন বাংলাদেশের হয়ে পঞ্চম সেরা বোলিং ফিগারের। ৪ ওভারে ২ মেইডেন সহ ১০ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট। ১২ রান খরচায় মুস্তাফিজের শিকারও ৪ উইকেট। সতীর্থ ব্যাটসম্যানদের আসা যাওয়ার মিছিলে একাই লড়ে যাওয়া ইয়াংয়ের ব্যাট থেকে আসে সর্বোচ্চ ৪৬ রান।

২-১ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে আজ মিরপুর শের-ই-বাংলা জাতিয় ক্রিকেট স্টেডিয়ামে চতুর্থ ম্যাচে মাঠে নামে বাংলাদেশ। টাইগার একাদশে আসেনি কোনো পরিবর্তন, নিউজিল্যান্ড একাদশে দুই পরিবর্তন। স্কট কুগেলেইন ও জ্যাকব ডুফি বাদ পড়েছেন, একাদশে ঢুকেছেন ব্লেয়ার টিকনার ও হামিশ বেনেট। টস জিতে আগে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিউজিল্যান্ডের।

ইনিংসের প্রথম বলেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন বাঁহাতি স্পিনার নাসুম আহমেদ। পঞ্চম বলে সুইপ খেলতে গিয়ে স্কয়ার লেগে মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনকে ক্যাচ দেন রাচিন রবীন্দ্র। সিরিজের দ্বিতীয় বার ফিরলেন খালি হাতে। উইকেট মেইডেন নাসুমের। পরের অভারে সাকিব আল হাসানকে ছক্কা হাঁকিয়ে ১০ রান নেন ফিন অ্যালেন। কিন্তু তৃতীয় ওভারেই রিভার্স সুইপ খেলতে গিয়ে নাসুমের দ্বিতীয় শিকার আই ডানহাতি। থেমেছেন ৮ বলে ১২ রান করে, নিউজিল্যান্ড পরিণত হয় ২ উইকেটে ১৬ রানে।

পাওয়ার প্লেতে ২ উইকেট হারিয়ে কিউইরা তোলে ২২ রান। অধিনায়ক টম লাথাম ও উইল ইয়াং মিলে তৃতীয় উইকেট জুটিতে দলকে পথ দেখানোর দায়িত্ব নেন। কিন্তু জুটি বড় হয়নি ৩৫ রানের বেশি। ১১তম ওভারে লাথামকে স্টাম্পড করে জুটি ভাঙেন শেখ মেহেদী হাসান। কিউই অধিনায়কের ব্যাটে ২৬ বলে ২১ রান। এরপরই ধ্বস নামে কিউই ব্যাটিং লাইনআপে। স্লটে ফেলে দারুণ এক টার্নে নতুন ব্যাটসম্যান হেনরি নিকোলসকে (৫ বলে ১) বোল্ড করেন নাসুম।

পরের বলেই কট বিহাইন্ড হয়ে কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম ফেরেন গোল্ডেন ডাক নিয়ে। অফ স্টাম্পের খানিক বাইরে টার্ন করে বেরিয়ে যাওয়ার আগে ছুঁয়েছে গ্র্যান্ডহোমের ব্যাট। হ্যাটট্রিক সম্ভাবনা জাগানো নাসুম ওভার শেষ করেন ডাবল উইকেট মেইডেন নিয়ে। ৪ ওভার শেষে তার ফিগার ৪-২-১০-২! যা তার ক্যারিয়ার সেরা বোলিং ফিগার। ৫ উইকেটে ৫২ রান সফরকারীদের স্কোরবোর্ডে। ১৪তম ওভারের শেষ বলে উইল ইয়াংয়ের শটে আঙ্গুলে চোট পেয়ে মাঠ ছাটে হয় মোহাম্মদ সাইফউদ্দিকে। তার নিজের করা বলে ফিরতি ক্যাচের সম্ভাবনা জাগলেও সাইফউদ্দিন চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। পরে অবশ্য ফিরে এসে বল করেন, উইকেটও নেন।

দলের বিপর্যয়ে টম ব্লান্ডেলকে নিয়ে উইল ইয়াংয়ের প্রতিরোধ গড়ার চেষ্টা। কিন্তু জুটি থামে ২০ রানে। মুস্তাফিজুর রহমানের বলে ব্লান্ডেল ( ১০ বলে ৪) ফেরেন নাইম শেখের দারুণ এক ক্যাচে। একই ওভারে মুস্তাফিজ নিজে দুর্দান্ত এক ফিরতি ক্যাচে ফেরান কোল ম্যাককঞ্চিকে (০)। ইনিংসের শেষ ওভারে ৯ম ব্যাটসম্যান হিসেবে আউট হওয়ার আগে ইয়াং করেছেন ৪৮ বলে ৪৬ রান। কিউইদের শেষ দুই উইকেট তুলে নিয়ে মুস্তাফিজও শিকার করেন ৪ উইকেট। তার বোলিং ফিগার ৩.৩-০-১২-৪! নিউজিল্যান্ড থামে ৯৩ রানে।