স্কুলে ফিরেছে আফগান নারী শিক্ষার্থীরাও

আফগানিস্তানের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নারী শিক্ষার্থীরা ফিরেছেন। গতকাল শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) ছেলে-মেয়েদের আলাদা ক্লাসে তাদের অংশ নিতে দেখা গেছে। কিন্তু মাধ্যমিক পর্যায়ের নারীর শিক্ষার্থীদের উদ্বেগ নিয়ে অপেক্ষা করতে হচ্ছে—কখন তারা স্কুলে ফিরতে পারবেন। মাসখানেক আগে তালেবানের হাতে আফগানিস্তানের রাজধানী কাবুলের পতন হওয়ার পর অধিকাংশ স্কুলই বন্ধ রয়েছে।

তালেবান বলছে, তারা ১৯৯৬-২০০১ সারের মতো নারী শিক্ষা বন্ধে উগ্রবাদী নীতি অনুসরণ করবেন না। নারীরা লেখাপড়া করতে পারবে, তবে তাদের শ্রেণিকক্ষ হবে আলাদা।

কাবুলের একটি প্রাইভ্টে স্কুলের শিক্ষিকা নাজিফি বলেন, স্কুল খুলতে তাদের কিছুটা পরিবর্তন আনতে হয়েছে। আগে ছেলে ও মেয়েরা একই কক্ষে ক্লাস করতে পারতেন। কিন্তু এখন মেয়েরা সকালে ও নারীরা বিকালে ক্লাস করতে পারছে। তিনি বলেন, নারী শিক্ষকরা মেয়েদের পড়াচ্ছেন। আর পুরুষরা ছেলেদের পড়াচ্ছেন।

আফগানিস্তানে এখন যেসব স্কুলে ক্লাস চলছে, সেখানে ছয় বছর পর্যন্ত শিক্ষার্থীদের উপস্থিত হতে দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ক্লাসেও নারী শিক্ষার্থীরা অংশ নিয়েছেন। কিন্তু বালিকা মাধ্যমিক উচ্চবিদ্যালয়গুলো বন্ধ রয়েছে।

গত শুক্রবার আফগান শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিবৃতিতে বলা হয়, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ের প্রাইভেট স্কুল এবং মাদরাসা শনিবার থেকে খুলে দেওয়া হবে। সব শিক্ষক ও ছেলে শিক্ষার্থীর ক্লাসে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে। নারী শিক্ষার্থীদের কথা তারা বিবৃতিতে উল্লেখ করেনি।

আফগানিস্তানের মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ১৩ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিক্ষার্থীরা অংশ নিতে পারেন। আলাদা আলাদা শ্রেণিকক্ষে তারা লেখপড়া করেন। চলতি সপ্তাহের শুরুতে তালেবান বলছে, নারীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করতে পারবেন। তবে সেটা পুরুষদের পাশাপাশি হবে না। এমনকি তাদের নতুন পোশাক নীতিও অনুসরণ করতে হবে।

এদিকে এক নারী শিক্ষার্থী বলেন, নিজের ভবিষ্যৎ নিয়ে আমি বেশ হতাশ। চোখের সামনে সবকিছু অন্ধকার হয়ে যাচ্ছে। প্রতিদিনই ঘুম থেকে জেগে উঠে নিজেকে প্রশ্ন করি, আমি এখনো জীবিত আছি কেন? আমাদের কী ঘরে থাকা উচিত, নাকি কেউ আমার দরজায় কড়া নেড়ে আমাকে বিয়ে করতে চাইবে। নারীরা কী কেবল বিয়ের জন্যই জন্মগ্রহণ করেন।