প্রায় সব মুসলিম কোরআন তেলাওয়াত করেন। কোরআন মুসলিমদের জীবনবিধান। কোরআন তেলাওয়াতে আদব-শিক্ষাচার রক্ষা করতে হয়। ফলে জানার বিষয় হলো- কোরআন তেলাওয়াত শেষে কোনো দোয়া পড়তে হয় কিনা? বা তেলাওয়াত সমাপ্ত করার পর পঠিতব্য বিশেষ কোনো দোয়া পড়তে হয়?
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত আছে যে, তিনি বলেন, ‘যখনই আল্লাহর রাসুল (সা.) কোনো বৈঠকে বসতেন, যখনই কোরআন তেলাওয়াত করতেন কিংবা নামাজ আদায় করতেন তখনই তিনি কিছু বাক্যের মাধ্যমে সেটাকে সমাপ্ত করতেন।’
আয়েশা (রা.) বলেন, সে প্রসঙ্গে আমি বললাম- হে আল্লাহর রাসুল! আমি দেখি— আপনি যেকোনো বৈঠক, যেকোনো তেলাওয়াত এবং যেকোনো নামাজ এই বাক্যগুলোর মাধ্যমে সমাপ্ত করে থাকেন? তিনি বললেন, হ্যাঁ। যে ব্যক্তি কোনো ভাল কথা বলল, তার জন্য সেই ভালোর ওপর সীলমোহর সাব্যস্ত এবং যে ব্যক্তি কোনো খারাপ কথা বলল, তার জন্য কাফ্ফারা (প্রায়শ্চিত্ত) হলো-
سُبْحَانَكَ وَبِحَمْدِكَ، لَا إِلَهَ إِلَّا أَنْتَ، أَسْتَغْفِرُكَ وَأَتُوبُ إِلَيْكَ
উচ্চারণ : সুবহানাকাল্লাহুম্মা ওয়া বিহামদিকা, লা ইলাহা ইল্লা আনতা, আসতাগফিরুকা ওয়াআতুবু ইলাইকা।
অর্থ : আমি প্রশংসাসহ আপনার পবিত্রতা ঘোষণা করছি। আপনি ছাড়া সত্য কোন উপাস্য নেই। আমি আপনার কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং আপনার কাছে তাওবা করছি। (সিলসিলাতুস সাহিহা, হাদিস : ৩১৬৪)
এই হাদিসে নবী (সা.) প্রত্যেক বৈঠক শেষে বৈঠকের কাফ্ফারা সংক্রান্ত জিকির উল্লেখ করেছেন; সেই বৈঠক জিকিরের বৈঠক হোক কিংবা মন্দ ও বেহুদা কথা মিশ্রিত বৈঠক হোক। যদি জিকিরের বৈঠক হয়, তাহলে এটি যেন ওই বৈঠকের সীলমোহর হয়ে গেল।
শায়খ সিন্দি (রহ.) বলেন, ‘উদ্দেশ্য হচ্ছে এই জিকিরটি সেই ভাল কাজকে সাব্যস্তকারী, কবুলের মর্যাদায় উন্নীতকারী ও প্রত্যাখ্যাত হওয়ার আশংকামুক্তকারী হওয়া।’ (মিরাআতুল মাসাবিহ : ৮/২০৪)