আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা ঈমানের দাবি

দ্বীনি মজলিসে আসার সময় শিক্ষার নিয়ত করবে: সাহাবা, তাবেয়ীন, তাবে-তাবেয়ীনদের ইতিহাস দেখলে প্রতীয়মান হয়, তাদের একেকজন ইলমে দ্বীন শিক্ষা ও হাদিস জমা করার জন্য লম্বা লম্বা সফর করেছেন। আজ হাদিসের এ ভাণ্ডার পাকানো রুটির মতো আমাদের সামনে আছে। আল্লাহর বান্দাগণ তাদের জান-মাল কোরবানি করেছেন। কষ্ট সহ্য করেছেন। এরপর এ ইলম আমাদের পর্যন্ত পৌঁছেছে। যদি আমাদের দায়িত্বে এ কাজ ন্যাস্ত হতো, দ্বীনি ইলম ধ্বংস হয়ে যেত।

আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ, তিনি এ কাজের জন্য এমন সম্প্রদায় সৃষ্টি করেছেন যারা অনাগত উম্মতের জন্য দ্বীনকে সংরক্ষণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালার অনুগ্রহ, দ্বীন সংরক্ষিত, ছাপানো কিতাব এবং প্রত্যেক যুগে দ্বীনের পাঠক, পাঠ দানকারী আলেম সব জায়গাতেই বিদ্যমান আছে। এখন আমাদের কাজ হলো তাদের কাছে গিয়ে ইলম, মাসআলা শিক্ষা করা।

আরো দেখুন >>> আল্লাহর সৃষ্টির প্রতি ভালোবাসা ঈমানের দাবি (পর্ব-৪)

উপরিউক্ত হাদিসে ইলম শিক্ষালাভকারীদের জন্য এ বিশাল সুসংবাদ বর্ণনা করেছেন। তাই দ্বীনি জ্ঞান অর্জনের সময় এ হাদিসটিকে মনে মনে ভাবতে হবে। নিয়তকে বিশুদ্ধ করতে হবে।

আল্লাহর ঘরে সমবেত লোকদের জন্য সুসংবাদ:

হাদিসের পরবর্তী বাক্যে আরেকটি সুসংবাদ বর্ণনা করেছেন। যে কোনো দল আল্লাহ তায়ালার ঘর-মসজিদে সমবেত হয়ে আল্লাহর কিতাব তেলাওয়াত করে, বা আল্লাহর কিতাবের দরস-তাদরীস তথা দ্বীনের কথা শোনা বা শোনানোর জন্য বসে যায়, আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাদের উপর প্রশান্তি নাজিল হয়। আল্লাহর রহমত তাদেরকে আচ্ছাদিত করে নেয়। চতুর্দিক হতে ফেরেশতারা এ মজলিসকে ঘিরে ফেলে তথা আল্লাহর রহমত তাদের প্রতি ধাবিত হয়। রহমতের ফেরেশতারা তাদের জন্য দোয়া করে, ‘হে আল্লাহ! এরা আপনার দ্বীনের জন্য একত্রিত হয়েছে। হে আল্লাহ! আপনি স্বীয় রহমতে তাদের ক্ষমা করে দেন। তাদের উপর রহমত বর্ষণ করুন। তাদের পাপ ক্ষমা করে দিন। তাদেরকে দ্বীনের তাওফিক দান করুন।

সামনের বাক্যে ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আল্লাহকে স্মরণ করো, আল্লাহ তোমাদেরকে স্মরণ করবেন।’ আল্লাহ তায়ালা স্বীয় মজলিসে সেই দলের আলোচনা করেন- আমার বান্দা তার সব কাজ ছেড়ে শুধু আমার জন্য, আমার জিকির করা ও শোনার জন্য, আমার দ্বীনের কথা শোনানোর জন্য এখানে একত্রিত হয়েছে। তিনি তার আশপাশের ফেরেশতাদের সামনে ওই মাহফিলের আলোচনা করেন। এটা কোনো সাধারণ কথা! এটা অনেক বড় ব্যাপার। এটা কোনো সাধারণ কথা নয়। মাহবুবে হাকিকি প্রকৃত প্রেমাষ্পদ আমাদের আলোচনা করেন। আরে, কাজটি তো আমাদের ছিল। আমরা তার জিকির করব। আমাদের প্রথম নির্দেশ দিয়েছেন-

فاذكروني

‘তোমরা আমার জিকির করো।’

সঙ্গে সঙ্গে ওই জিকিরের বদলাও দিয়ে দিয়েছেন।

أذكركم

‘তোমরা আমার জিকির করলে আমিও তোমাদের জিকির করব, তোমরা আমাকে স্মরণ করলে আমিও তোমাদের স্মরণ করব।’
অথচ আমাদের জিকিরের কী মূল্য আছে? জিকির করলেই বা কী আর না করলেই বা কী? আমাদের জিকির দ্বারা তার সম্মান ও মর্যাদায় বিন্দু পরিমাণও বৃদ্ধি পায় না। যদি আমরা; বরং সমস্ত দুনিয়া তাঁর জিকির ছেড়ে দেই, তবুও তার সম্মান ও মর্যাদায় বিন্দু পরিমাণ হ্রাস পাবে না। তবে আল্লাহ যদি বান্দার জিকির করেন এটা সাধারণ কথা নয়।

উবাই ইবন কা’ব (রা.)-কে কোরআন শোনানোর নির্দেশ:

হজরত উবাই ইবন কা’ব (রা.) একজন প্রসিদ্ধ সাহাবি। প্রত্যেক সাহাবির মাঝে আল্লাহ তায়ালা ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্য রেখেছেন। উবাই ইবন কা’ব (রা.) এর বৈশিষ্ট্য হলো তিনি উত্তমভাবে কোরআনে কারিম পড়তেন। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তার ব্যাপারে বলেছেন,

أقرؤهم أبي بن كعب