এবার মাদক ছাড়তে বাধ্য করছে তালেবান

আফগানিস্তানের জব্দ করা সম্পদ মুক্ত করে দিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান জানিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। সেই সঙ্গে তালেবান শাসিত আফগানিস্তানে জরুরি মানবিক সহায়তা দেওয়ার আহ্বানও জানান তিনি।

নতুন খবর হচ্ছে, মোড়ানো মাথা, ঝুলে পড়া ত্বক আর ভয়াবহ দৃষ্টি নিয়ে তালেবান পরিচালিত নিরাময় কেন্দ্রে মাদকাসক্তরা ৪৫ দিনের নিরাময় কাল পার করছে। কেউ কেউ হয়তো মাদক ছেড়ে দিতে সক্ষম হচ্ছেন আবার কেউ ফের মাদকাসক্তিকে জড়িয়ে পড়ছেন।

গত ১৫ আগস্ট তালেবান ঢুকে পড়ার আগে কাবুলের পুলিশ মাঝে মাঝে মাদকাসক্তদের গ্রেফতার করে নিরাময় কেন্দ্রে পাঠাতো। কিন্তু তালেবান নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার পর মাদকাসক্তদের জড়ো হওয়ার জায়গাগুলোতে ঘন ঘন অভিযান চালানো হচ্ছে।

এক হাজার শয্যার ইবনে সিনা নিরাময় কেন্দ্রে এক জন মাদকাসক্ততে ৪৫ দিন রাখা হয়। বড় ডরমেটরির কট কিংবা উঠোনে নিচু হয়ে থেকে সময় কাটে তাদের। আফিম ও হেরোইনে আসক্তদের সহায়তায় মেলে সামান্য ওষুধ। তবে নিরাময়ের ব্যাথা নিরসনে কিছুই করা হয় না তাদের।

মাদকাসক্তদের নিরাময় কেন্দ্রে নেওয়ার পর প্রথমেই তাদের তল্লাশি করা হয়। এরপর পাঠিয়ে দেওয়া হয় গোসল করতে। শ্যাম্পুর প্যাকেট দিলেও কোনও তোয়ালে পায় না তারা।

সেখান থেকে বের হলে নাপিতের সামনে বসিয়ে দেওয়া হয় তাদের। উকুন ঠেকাতে চুল ফেলে দেওয়া হয়। এরপরে কাউকে হয়তো পাঁচ বেডের কক্ষে নিয়ে যাওয়া হয় আর অন্যদের প্রায় ৩০ জন থাকার মতো ডরমেটরিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়।

১৯৯০ এর দশকে তালেবান শাসনের সময় আফগানিস্তানে পপি চাষ নিষিদ্ধ করা হয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র ও পশ্চিমা দেশগুলোর বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সময় তালেবান নিয়ন্ত্রিত এলাকা থেকে হেরোইন রফতানি বেড়ে যায়। এ থেকে শত শত কোটি ডলার আয় করে গোষ্ঠীটি।

পপি চাষ সহজ এবং সস্তা হওয়ায় বিশ্বের হেরোইন উৎপাদনের ৯০ শতাংশই আসে আফগানিস্তান থেকে। এছাড়াও দেশটিতে বেড়েছে ক্রিস্টাল মেথের উৎপাদনও।

মাদকবিরোধী বিশেষজ্ঞদের তথ্য অনুযায়ী আফগানিস্তানের তিন কোটি ৪০ লাখ জনগোষ্ঠীর ১১ শতাংশ মাদক ব্যবহার করে। আর এর চার থেকে ছয় শতাংশ মাদকাসক্ত।

এবার ক্ষমতায় ফিরে তালেবান মাদক উৎপাদন বন্ধের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ইবসে সিনা নিরাময় কেন্দ্রের প্রধান ডা. আহমেদ জোহর সুলতানি বলেন, ‘এটাই ইসলামিক আমিরাতের নীতি।’