কুমিল্লায় পবিত্র কোরআন অবমাননা ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক উত্তেজনা

আজ সকালে কুমিল্লার একটি পূজামণ্ডপ থেকে পবিত্র কোরআন উদ্ধারের ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। এ ঘটনায় বেশ কয়েকটি পূজামণ্ডপে হামলা হয়েছে বলে জানা গেছে। খবর- বিবিসি বাংলার

এদিকে কুমিল্লার পূজা উদযাপন কমিটির সম্পাদক নির্মল পাল বলেন, শহরের নানুয়ারদীঘি এলাকার একটি পূজামণ্ডপের প্রতিমায় কোরআন রাখার খবর ছড়িয়ে পড়ার পর পুলিশ গিয়ে তা সরিয়ে নেয়। কিন্তু এরপর পরই একদল ব্যক্তি বেশ কিছু পূজামণ্ডপে হামলার চেষ্টা চালায়।

তার অভিযোগ, পূজা বানচালের জন্য পরিকল্পিতভাবে কোরআন রেখে এ ঘটনা ঘটিয়ে তারাই এখন শহরজুড়ে পূজাবিরোধী বিক্ষোভ করছে। কয়েকটি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে কিন্তু পুলিশের বাধায় ভেতরে ঢুকতে না পারলেও গেইট বা সামনের স্থাপনা ভাংচুর করেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যবসায়ী বলেন, বেলা ১১টার দিকে হঠাৎ কোরআন অবমাননা হয়েছে, এমন খবর ছড়িয়ে পড়ে শহর জুড়ে।

তিনি বলেন, “এর আগে ১০টার পর নানুয়ারদীঘির মণ্ডপে কোরআন নজরে পড়লে দ্রুত পুলিশকে জানানো হয় এবং পুলিশ তখনি এসে কোরআনটি সরিয়ে নেয়। কিন্তু খবরটি খুব দ্রুত ছড়ানো হয় এবং কয়েকটি মাদ্রাসার লোকজন ছাড়াও স্থানীয় অনেকে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন। এক পর্যায়ে সেখান থেকে মণ্ডপগুলোতে হামলা করা শুরু হলে পুলিশ ব্যবস্থা নেয়”। পবিত্র কুরআন অবমাননার অভিযোগে উদ্ভুত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছেন বলে জানিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার ফারুক আহমেদ।

আজ বুধবার বিকালে তিনি বলেন, আমরা টহল দিচ্ছি। আগে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করি। কয়টি মণ্ডপে হামলার চেষ্টা হয়েছে এ মূহুর্তে বলতে পারছি না। পরিস্থিতি ঠিক হলে আমরা বিস্তারিত জানাবো।

এদিকে কুমিল্লায় পবিত্র কুরআন অবমাননা সংক্রান্ত ঘটনার সঙ্গে যেই জড়িত থাকুক তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছে সরকার। ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী মো. ফরিদুল হক এক বিবৃতিতে একথা জানিয়েছেন।

প্রতিমন্ত্রীর উদ্ধৃতি দিয়ে জরুরি ঘোষণায় বলা হয়, কুমিল্লায় পবিত্র কুরআন অবমাননা সংক্রান্ত খবর আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। খবরটি খতিয়ে দেখার জন্য ইতোমধ্যে আমরা স্থানীয় প্রশাসনকে নির্দেশ প্রদান করেছি।

তিনি বলেন, ‘ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে যে কেউ এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকুক তাদেরকে অবশ্যই আইনের আওতায় এনে উপযুক্ত শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তবে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেউ আইন হাতে তুলে নেবেন না। সবাইকে ধর্মীয় সম্প্রীতি ও শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য অনুরোধ করা হলো।’