দীর্ঘ ১৫ বছর কারাবন্দীর পর মারা গেলেন সৌদি আলেম

“মৃত্যু” এক নির্মম, কঠিন বাস্তবতার নাম। মৃত্যু এমন এক মেহমান, যে দরজায় এসে দাড়িয়ে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা দুনিয়ার কারো নেই! মৃত্যু যেকোন বয়সের, যেকোন মানুষের সামনে, যেকোন সময়ে উপস্থিত হতে পারে!

নতুন খবর হচ্ছে, দীর্ঘ ১৫ বছর কারাগারে বন্দী জীবন কাটিয়ে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন সৌদি আরবের একজন ইসলামী শিক্ষাবিদ ও দায়ি। গত মঙ্গলবার (১২ অক্টোবর) ইসলামী চিন্তাবিদ ড. মুসা বিন মুহাম্মদ আল করনি দীর্ঘদিন অসুস্থতায় ভুগে মারা যান। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স ছিল ৬৬ বছর।

মানবাধিকার সংগঠন সানাদের সূত্রে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর মৃত্যুর খবর জানা যায়। অবশ্য সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত এ বিষয়ে কোনো প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।

সৌদির রাজনৈতিক ও নাগরিক অধিকার নিয়ে সোচ্চার যুক্তরাজ্য ভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন সানাদ এক টুইট বার্তায় জানায়, সৌদির কোনো কারাগারে ড. করনির মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে।

টুইট বার্তায় আরো বলা হয়, ‘ড. করনি দীর্ঘদিন যাবত অসুস্থতায় ভুগছিলেন। বেশ কয়েক বছর যাবত শারীরিকভাবে তিনি খুবই অসুস্থ থাকলেও কারাগারে তার চিকিৎসায় চরম অবহেলা করা হয়। তাছাড়া আটকের পর থেকে নানা ধরনের হয়রানি, নিপীড়ন ও দীর্ঘ সময় একাকিত্ব যাপন তাকে আরো অসুস্থ করে তুলে। কিন্তু কারা কর্তৃপক্ষ তার সুচিকিৎসার ব্যাপারে একদম উদাসীন ছিল।’

২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সৌদিতে মানবাধিকার সংগঠন প্রতিষ্ঠার দাবী জানানোর পর অন্যান্য মানবাধিকার কর্মীদের সঙ্গে ড. করনিকেও আটক করা হয়। তাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস ও রাষ্ট্রবিরোধী কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগে ২০ বছর কারাদণ্ড ও পরবর্তী ২০ বছর বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়। ২০১৮ সালের মে মাসে ড. করনি স্ট্রোক করেন। এরপর তাঁকে জেদ্দার একটি মানসিক হাসপাতালে নেওয়া হয়।

ড. মুসা বিন মুহাম্মদ আল করনি সৌদি ইসলামী শিক্ষাবিদ। ১৯৫৪ সালে জাজান নামক এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। রিয়াদের বিখ্যাত শরিয়া কলেজে ইসলামী শরিয়া নিয়ে পড়াশোনা করেন। মক্কার উম্মুল কুরা বিশ্ববিদ্যালয়ে উসুললু ফিকাহ বিষয়ে পিএইচডি ডিগ্রি সম্পন্ন করেন।