দুই দিনের মধ্যে অন্ধকারে ডুবতে পারে দিল্লি

ভারতের তামিলনাড়ু ও উড়িষ্যা আগেই জানিয়েছিল, শিগগিরই কয়লা না পেলে তাদের তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলো অচল হয়ে পড়বে। এবার দুই রাজ্যের সঙ্গে সুর মেলালো দিল্লিও। দিল্লির রাজ্য সরকার শনিবার জানিয়েছে, আগামী দুই দিনের মধ্যে যথেষ্ট পরিমাণে কয়লা না পেলে অন্ধকারে ডুবতে পারে ভারতের রাজধানী শহর।

এদিকে ভারতে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৫টি। এগুলো দেশটির মোট প্রয়োজনীয় বিদ্যুতের ৭০ শতাংশ উৎপাদন করে। অর্ধেক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রেই বর্তমানে যে পরিমাণ কয়লা আছে, তাতে চলতে পারে বড় জোর তিনদিন। সেন্ট্রাল গ্রিড অপারেটরের দেওয়া তথ্যে এ কথা জানা গেছে। এ ব্যাপারে দিল্লির বিদ্যুৎমন্ত্রী সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, ‘তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলোতে অন্তত এক মাসের জন্য কয়লা সঞ্চিত রাখা উচিত। কিন্তু এখন মাত্র একদিনের উপযোগী কয়লা রয়েছে।’

দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল বলেন, ‘আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে আবেদন জানিয়েছি, জরুরিভিত্তিতে রেলের ওয়াগন ভর্তি করে কয়লা পাঠানো হোক। প্রতিটি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে, বর্তমানে তার ৫৫ শতাংশ উৎপাদন করছে মাত্র।’

সত্যেন্দ্র জৈনের অভিযোগ, কয়লার এই সংকট ‘মানবসৃষ্ট’। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময়ও একইভাবে কৃত্রিম উপায়ে অক্সিজেনের সংকট তৈরি করা হয়েছিল।
দিল্লির বিদ্যুৎমন্ত্রী বলেন, এটা একটা রাজনীতি। অনেক সময় ইচ্ছা করে সংকট তৈরি করা হয়। তারপর সেই সংকট সমাধানের কৃতিত্ব নেয় কায়েমি স্বার্থবাদী গোষ্ঠী।

দিল্লির অদূরে বাওয়ানা অঞ্চলে একটি গ্যাসচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র ১৩শ’ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করে। সত্যেন্দ্র জৈন বলেন, দিল্লিতে যে তিনটি কোম্পানি বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, তারা কেউ নিজেরা বিদ্যুৎ উৎপাদন করে না। আমরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর নির্ভরশীল। যদি আর দুই দিনের মধ্যে কয়লা সরবরাহ না হয়, তাহলে পুরো শহরে ব্ল্যাক আউট হবে।

সেন্ট্রাল গ্রিড রেগুলেটরের ডেলি লোড ডেসপ্যাচ ডাটায় দেখা যায়, অক্টোবরের প্রথম সাত দিনে বিদ্যুতের ঘাটতি হয়েছে সারা বছরের ঘাটতির ১১ দশমিক ২ শতাংশ। সারা বিশ্বেই বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রগুলো এখন সংকটে পড়েছে। মহামারির ধাক্কা সামলে বিদ্যুতের চাহিদা বাড়ছে। চাহিদার তুলনায় যোগান না থাকায় বাড়ছে দাম।

আজ শনিবার কেজরিওয়াল টুইট করে জানান, তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে চিঠি দিয়ে বলেছেন, যে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো থেকে রাজধানীতে বিদ্যুৎ আসে, সেখানে যথেষ্ট পরিমাণে কয়লা ও গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্থা করা হোক। তার ভাষায়, ‘দিল্লিতে বিদ্যুতের সংকট দেখা দিতে পারে। আমি ব্যক্তিগতভাবে পরিস্থিতির ওপরে নজর রাখছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যাতে এই সংকটে নিজে হস্তক্ষেপ করেন, সেজন্য আমি তাকে চিঠি দিয়েছি।’

সূত্র: দ্য ওয়াল।