পাপুয়া নিউগিনিকে উড়িয়ে জয় তুলে নিল বাংলাদেশ

পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে আগে ব্যাট করে লড়াকু সংগ্রহ গড়েছে বাংলাদেশ। মাহমুদউল্লাহর ৫০, সাকিবের ৪৬ ও শেষদিকে সাইফউদ্দিনের ঝড়ে ৭ উইকেট হারিয়ে টাইগারদের স্কোর দাঁড়ায় ১৮১ রানে। বাংলাদেশ তুললো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের সর্বোচ্চ রান। এর আগে ২০১৬ সালে ধর্মশালায় ওমানের বিপক্ষে বাংলাদেশ তুলেছিল ২ উইকেটে ১৮০ রান।

১৮২ রানের টার্গেটে নেমে শুরু থেকেই ভুগছিল পাপুয়া নিউগিনির দুই ওপেনার। সাইফউদ্দিন ভাঙেন উদ্বোধনী জুটি। ১০ বলে লেগা সিয়াকা এলবিডব্লিউ হন ৫ রানে।

এরপর নিজের প্রথম ওভারের দ্বিতীয় বলে উইকেট তুলে নেন তাসকিন আহমেদ। ৬ রান করা পিএনজি অধিনায়ক আসাদ ভালাকে আউট করেন এই পেসার। তবে এই আউটের কৃতিত্ব সোহানেরও কম না। নিজের ডানদিকে ঝাঁপিয়ে বেশ ভালো ক্যাচ নিয়েছেন নুরুল হাসান।

পেসারদের আক্রমণের পর বল হাতে তুলে নেন সাকিব। বোলিংয়ে এসেই নিজের প্রথম বলে উইকেট নেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার। উড়িয়ে মারতে গিয়ে বাউন্ডারিতে নাঈম শেখের দুর্দান্ত ক্যাচে পরিণত হন চার্লস আমিনি। একই ওভারের চতুর্থ বলে আরেকটি উইকেট নেন সাকিব। সিমন আটাই শূন্য রানে মেহেদী হাসানকে ক্যাচ দেন।

এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৯.২ ওভার শেষে ৬ উইকেট হারিয়ে পাপুয়া নিউগিনির সংগ্রহ ২৪ রান।

এর আগে বিশ্বকাপের মূলপর্বে ওঠার লক্ষ্যে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি টাইগারদের। আগে ব্যাট করতে নেমে মোরেয়ার প্রথম বলেই খোঁচা দেন মোহাম্মদ নাঈম। তবে সেটা উইকেটরক্ষকের ঠিক আগে পড়ায় বেঁচে যান তিনি। এর পরের বলেই ফ্লিক করে উড়িয়ে মারেন। সেখানে দাঁড়ানো সেসে বাউ সেটি তালুবন্দী করতে ভুল করেননি। বাংলাদেশ হারায় তাদের প্রথম উইকেট। আগের ম্যাচে ফিফটি করা নাঈম এদিন ফেরেন কোন রান না করেই। উইকেটটি নেন কাবুয়া মোরেয়া।

নাঈমের বিদায়ের পর লিটনকে নিয়ে দলের হাল ধরেন সাকিব। পাওয়ারপ্লে শেষে বাংলাদেশের সংগ্রহ এক উইকেটে ৪৫। টুর্নামেন্টে প্রথম ছয় ওভারে এটা সর্বোচ্চ সংগ্রহ বাংলাদেশের। স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে বাংলাদেশ তুলেছিল ২ উইকেটে ২৫ রান, ওমানের বিপক্ষে ২৯ রান তুলতে হারিয়েছিল ২ উইকেট।

দ্বিতীয় উইকেটে সাকিবের সঙ্গে অর্ধশত রানের জুটি গড়ার পর বিদায় নেন লিটন। আসাদ ভালার বলে সেসে বাউর ক্যাচ হন তিনি। ২৩ বলে একটি করে চার ও ছয়ে ২৯ রান করেন তিনি। ব্যাট হাতে এই ম্যাচেও ব্যর্থ মুশফিক। ৮ বলে ৫ রান করে আউট তিনি। সিমন আটাইয়ের বলে হিরির তালুবন্দী হন তিনি।

ম্যাচের ১৪তম ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই উইকেট বিলিয়ে আসেন সাকিব। তুলে মারতে গিয়ে আসাদ ভালার বলে চার্লস আমিনির দুর্দান্ত ক্যাচ হন তিনি। ৩৭ বলে ৩ ছয়ে ৪৬ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।

মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিফটিতে বড় সংগ্রহের পথ মজবুত করে বাংলাদেশ। ১৭তম ওভারে ২৭ বলে নিজের ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টি-টোয়েন্টি ফিফটি পূর্ণ করেন টাইগার অধিনায়ক। এটি টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে মাহমুদউল্লাহর প্রথম ফিফটিও। অর্ধশতক হাঁকানোর পরের বলেই বড় শট খেলতে গিয়ে সোপারকে ক্যাচ দেন অধিনায়ক। ২৮ বলে তিনটি করে চার ও ছয়ে ৫০ রানে আউট হন মাহমুদউল্লাহ। অধিনায়কের উইকেট হারানোর চার বল পরই সাজঘরে ফেরেন সোহান। প্রথম বলেই সেসে বাউকে ক্যাচ দেন তিনি।

এরপর আউট হওয়ার পূর্বে ২১ রান তুলেন আফিফ। আর শেষদিকে মাত্র ৬ বলে ২ ছয় এবং ১ চারে ১৯ রান তুলে অপরাজিত থাকেন মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন। আর মেহেদি হাসান অপরাজিত থাকেন ২ রানে। পাপুয়া নিউগিনির পক্ষে সর্বোচ্চ দুটি করে উইকেট পেয়েছেন তিনজন বোলার।

শেষ ম্যাচে জয় পাওয়ায় আগের একাদশ নিয়েই আজ মাঠে নেমেছে টাইগাররা। অন্যদিকে পাপুয়া নিউগিনির দলে এসেছে এক পরিবর্তন। টনি উরার পরিবর্তে দলে ঢুকেছেন দামিয়েন রাভু।

এর আগে বাংলাদেশ বাছাইপর্বের প্রথম ম্যাচে স্কটল্যান্ডের কাছে ৬ রানে হেরে বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যাবার পরিস্থিতি সৃষ্টি করে। এরপর দ্বিতীয় ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ২৬ রানের জয় পেয়ে বিশ্বকাপের সুপার টুয়েলেভের আশা জিইয়ে রাখে টাইগাররা। শেষ ম্যাচে পিএনজির বিপক্ষে হারলেও বাংলাদেশের সামনে সুযোগ রয়েছে মূল পর্বে জায়গা করে নেয়ার।

শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের বিপক্ষে বিশাল রানে হেরে গেল পাপুয়া নিউগিনি। সব উইকেট হারিয়ে তাঁরা করেছে ৯৭রান।