পূজামণ্ডপের নিরাপত্তায় থাকা পুলিশকে খাওয়াচ্ছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ

শারদীয়া দুর্গাপূজাকে ‘অকালবোধন’ বলা হয়। কালিকা পুরাণ ও বৃহদ্ধর্ম পুরাণ অনুসারে, রাম ও রাবণের যুদ্ধের সময় শরৎকালে দুর্গাকে পূজা করা হয়েছিল। হিন্দুশাস্ত্র অনুসারে, শরৎকালে দেবতারা ঘুমিয়ে থাকেন। তাই এই সময়টি তাঁদের পূজা যথাযথ সময় নয়।

নতুন খবর হচ্ছে, খাগড়াছড়ির দীঘিনালার বোয়ালখালী এলাকায় রাস্তার একদিকে নারায়ণ মন্দির, উল্টো দিকে বোয়ালখালী ইসলামিয়া মাদ্রাসা ও এতিমখানা। দুর্গাপূজা আর রাস উৎসব—নারায়ণ মন্দিরের অন্যতম বড় দুটি আয়োজন। স্বাভাবিকভাবেই এসব উৎসবে পুলিশ ও আনসার বাহিনীর সদস্যরা মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকেন। আর এ সময় তাঁদের তিনবেলা খাওয়াদাওয়ার দায়িত্ব নেয় মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

মন্দিরটি প্রতিষ্ঠা হয়েছে ১৯২৯ সালে। এর প্রায় ৭০ বছর পর মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এরপর ২০০০ সাল থেকে এই রীতি চালু করেছে বোয়ালখালী ইসলামিয়া মাদ্রাসা। ২১ বছর ধরে সম্প্রীতির অনন্য এ দৃষ্টান্ত ধরে রেখেছে প্রতিষ্ঠানটি। এ বছরও সেটির ব্যতিক্রম হয়নি।

মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠার বছর দুয়েক পর থেকেই মন্দিরের বিভিন্ন পূজায় দায়িত্ব পালনকারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের তিনবেলা খাওয়ানোর রীতি ধরে রাখা হয়েছে।

এবারের দুর্গাপূজায় ওই মন্দিরে আনসার সদস্যরা নিরাপত্তার দায়িত্বে না থাকলেও সেখানে দায়িত্বরত আছেন পাঁচ পুলিশ সদস্য। গত সোমবার রাত থেকে তাঁদের তিন বেলা খাওয়াচ্ছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।

মঙ্গলবার সকালে নারায়ণ মন্দিরে গিয়ে দেখা যায়, সনাতন ধর্মাবলম্বীরা পূজা-অর্চনায় ব্যস্ত। সেখানে দায়িত্ব পালন করছেন পুলিশের সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) মো. খলিলুর রহমান। তিনি বলেন, ‘সোমবার বিকেল থেকে আমরা পাঁচ পুলিশ সদস্য মন্দিরের নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছি। ওই দিন রাত থেকে বোয়ালখালী ইসলামিয়া মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ আমাদের তিনবেলা খাবারের ব্যবস্থা করেছেন। আমি ২০-২১ বছর ধরে চাকরি করছি। দীর্ঘ এই চাকরিজীবনে এমন সম্প্রীতির নজির আর কোথাও দেখিনি। দায়িত্ব পালন করছি মন্দিরে আর খাবার খাচ্ছি মাদ্রাসায়। নিজের কাছেও ব্যাপারটি অনেক ভালো
লাগছে।’