রাজস্থানের সবগুলো ম্যাচেই একাদশে ছিলেন মুস্তাফিজ, গড়েছেন রেকর্ড

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আজকের এই উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে আসতে যে কয়জন ক্রিকেটার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর মধ্যে মুস্তাফিজ অন্যতম। এই পর্যন্ত অনেক রেকর্ড নিজের করে নিয়েছেন এই তারকা ক্রিকেটার।

নতুন খবর হচ্ছে, মুস্তাফিজুর রহমানের এবারের আইপিএল মৌসুম শেষ। পয়েন্ট টেবিলের সাতে থাকায় তার দল রাজস্থান রয়্যালস জায়গা করে নিতে পারেনি প্লে-অফে। পুরো মৌসুমটা ভালো-খারাপের মিশেলই ছিল দলের জন্য। তবে আলো ছড়িয়েছেন মুস্তাফিজ।
মুস্তাফিজদের ‘৬ লাখ’ রুপি জরিমানা, স্যামসন গুনলেন ‘২৪ লাখ’

এবারের মৌসুমে রাজস্থানের হয়ে ১৪টি ম্যাচের সবগুলোতেই খেলছেন মুস্তাফিজ, উইকেটও নিয়েছেন সমান ১৪টি। গড় ৩১ এর চেয়ে সামান্য ওপরে (৩১.১৪), ইকোনমি রেট প্রায় সাড়ে ৮ (৮.৪১)। পরিসংখ্যানগুলো মুস্তাফিজের ক্ষেত্রে হয়ত কিছুটা বেমানান লাগতে পারে, তবে টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে এতটা খারাপও নয়!

তবে পরিসংখ্যান দিয়েই তো আর পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা যায় না মুস্তাফিজের বোলিং। তার বোলিংয়ের যে আসল অস্ত্র কাটার-স্লোয়ার, তা কে না জানে! চিরচেনা মুস্তাফিজের কাটার-স্লোয়ার এবারও বেশ ভালোই কার্যকরী ছিল। দারুণ কিছু ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্সের ফলে এবার বেশ আলোচনায় ছিলেন তিনি। কবজির মোচড়ে ব্যাটারদের বোকা বানিয়েছেন হরহামেশাই।

এ মৌসুমে মুস্তাফিজের সেরা বোলিং ছিল সানরাইজার্স হায়দরাবাদের বিপক্ষে, ২০ রানে নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। ২২১ রান তাড়া করতে নেমে সেদিন উড়ন্ত শুরু পাওয়া হায়দরাবাদকে প্রথম ধাক্কাটা দিয়েছিলেন মুস্তাফিজই। তারপর বাদবাকি বোলাররা মিলে চেপে ধরাতে আর উঠে দাঁড়াতে পারেনি হায়দরাবাদ। শেষে আরও ২ উইকেট তুলে নেন মুস্তাফিজ, ম্যাচটাও হেসেখেলে জিতে যায় রাজস্থান রয়্যালস। ম্যাচে রাজস্থানের সেরা বোলারও ছিলেন মুস্তাফিজই।

আরও একটি ম্যাচের কথা আলাদা করে বলতেই হচ্ছে। সংযুক্ত আরব আমিরাতে অনুষ্ঠিত হওয়া আইপিএলের দ্বিতীয় অংশে শুরুর দিকের ম্যাচে পাঞ্জাব কিংসের বিপক্ষে রাজস্থানের জয়ে বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেন মুস্তাফিজ। জয়ের জন্য শেষ দুই ওভারে ৮ রান দরকার ছিল পাঞ্জাবের। ১৯ তম ওভারে মুস্তাফিজ দেন মোটে ৪ রান আর শেষ ওভারে কার্তিক তিয়াগি দেন মাত্র ১ রান, এই দুইয়ে ভর করেই জয়ের বন্দরে পৌঁছে যায় রাজস্থান। মুস্তাফিজ-তিয়াগির কিপটে বোলিংয়ের কল্যাণেই প্রায় হেরে যেতে বসা ম্যাচ জেতে রাজস্থান।

রাজস্থানের অধিনায়ক সাঞ্জু স্যামসনের আস্থাও ভালো করে অর্জন করতে পেরেছেন মুস্তাফিজ। মৌসুমজুড়ে রাজস্থানের বোলিং লাইনআপে বেশ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব অর্পিত হয়েছিল মুস্তাফিজের কাঁধে। আর মুস্তাফিজও প্রায়ই ম্যাচ জেতানো পারফরম্যান্স দেখিয়ে সেই আস্থার প্রতিদান দিয়েছেন। নতুন বলে সচরাচর বল করতে দেখা না গেলেও এবারের আইপিএলে বেশ কয়েকবার নতুন বল হাতে নিতে হয়েছে মুস্তাফিজকে। তাছাড়া মাঝের ওভারগুলোতেও হাত ঘুরিয়েছেন, স্লগ ওভারে ব্যাটসম্যানদের বেধড়ক পিটুনি থেকে কিছুটা রেহাই পেতেও অধিনায়ক স্যামসন মুস্তাফিজের হাতেই বল তুলে দিয়েছেন বহুবার। সবসময় সফল না হলেও অনেকবারই ছিলেন বেশ সফল।