আসন্ন বিপিএলে তিনজন করে বিদেশি খেলোয়াড়

বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিকেট টুর্নামেন্ট। খেলোয়াড়-দর্শক সবারই পছন্দের। বেশ কিছু কারণে দেশের একমাত্র টি২০ টুর্নামেন্টটি আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। আর্থিকভাবে খেলোয়াড়রা যেমন লাভবান হন, তেমনি বিদেশি ক্রিকেটার থাকায় খেলার মানও উঁচুতে থাকে; কিছুটা আন্তর্জাতিক ফ্লেভার পায়।

জনপ্রিয়তার দিক দিয়ে বিশ্বের অন্যতম সেরা এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টুর্নামেন্টটি নানা কারণেই নিয়মিত হতে পারেনি। ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লিগ (আইপিএল), বিগ ব্যাশ, ক্যারিবীয় প্রিমিয়ার লিগ (সিপিএল), পাকিস্তান প্রিমিয়ার লিগ (পিএসএল), এমনকি আফগানিস্তান প্রিমিয়ার লিগের (এপিএল) মতো দীর্ঘ মেয়াদে পরিকল্পনা নেই বিপিএল নিয়ে।

এদিকে ১০ বছরে অষ্টম আসর হতে যাচ্ছে আগামী বছর জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে। এবারের আসরেও ফ্র্যাঞ্চাইজি নেওয়া হচ্ছে এক বছরের জন্য। বিপিএলকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে যেটা বড় অন্তরায়। গত ২০১২ সালে বিপিএল টি২০ টুর্নামেন্টের আত্মপ্রকাশ করান বিসিবির সাবেক সভাপতি আ হ ম মুস্তফা কামাল। গত আট বছরে টুর্নামেন্টটি খুব বেশি এগোয়নি। কখনও ছয় দল, কখনও সাত দল নিয়ে খেলা হয়। এবার যেমন ছয় দল নিয়ে হবে বিশেষ বিপিএল। বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজি চাওয়া হয়েছে।

বিপিএল কমিটি থেকে জানা গেছে, বেশ কিছু পুরোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি মৌখিকভাবে আগ্রহ দেখিয়েছে টুর্নামেন্টে খেলার জন্য। ফরচুন বরিশাল, রংপুর রাইডার্স, খুলনা টাইগার্স, ঢাকা ডায়নামাইটস হয়তো থাকবে। নতুন করে নেওয়া হতে পারে দুটি দল। তবে মৌখিক আগ্রহ দেখালেও শেষ পর্যন্ত ভালোমানের ফ্র্যাঞ্চাইজি পাওয়া কঠিন হতে পারে। কারণ, করোনাকালেও ফ্র্যাঞ্চাইজি ফি দুই কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। বিপিএলে দল পেতে হলে চার কোটি টাকা দিতে হবে বিসিবিকে। বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপের সঙ্গে তুলনা করা হলে চার-পাঁচ গুণ খরচ করতে হবে ফ্র্যাঞ্চাইজিদের।

এদিকে বিদেশি ক্রিকেটার নিয়ে হবে এবারের বঙ্গবন্ধু বিপিএল। প্রতিটি দল সাতজন করে বিদেশি ক্রিকেটার নিবন্ধন করাতে পারবে। বাধ্যতামূলক পাঁচজন ক্রিকেটার নিতে হবে প্লেয়ার্স ড্রাফট থেকে। বাকি দু’জন নিজেরা যোগাযোগ করে নিতে পারবে। ম্যাচে খেলতে পারবে তিনজন করে বিদেশি। আগে যেটা ছিল চারজন। সে ক্ষেত্রে একবার দেশি ক্রিকেটার একজন বেশি খেলতে পারবে বলে জানান বিপিএল কমিটির একজন সদস্য। আগামী জানুয়ারি ২০ থেকে ফেব্রুয়ারি ২০ তারিখের মধ্যে টুর্নামেন্ট শুরু। কোনো ফ্র্যাঞ্চাইজি চাইলে কম ফ্র্যাঞ্চাইজি নিয়েও খেলতে পারবে। ২০১৯-২০ সালে হয়েছে বিপিএলের সপ্তম আসর।

করোনার কারণে ২০২০-২১ আসর আয়োজন করার সাহস দেখায়নি বিসিবি। বিপিএল না হলেও সীমিত পরিসরে সম্পূর্ণ দেশি ক্রিকেটারদের নিয়ে গত ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত হয় বঙ্গবন্ধু টি২০ কাপ। মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে চ্যাম্পিয়ন হয় জেমকন খুলনা। পেশাদারিত্ব গড়ে না ওঠায় ঢাকা, খুলনা ছাড়া বেশিরভাগ ফ্র্যাঞ্চাইজিই অতিথি পাখির মতো। এক-দুই আসরে অংশ নিয়ে বকেয়া রেখে চলে যায়। বিসিবি চেষ্টা করেও আর টাকা আদায় করতে পারে না। অথচ বিশ্বের অন্য ফ্র্যাঞ্চাইজি টি২০ টুর্নামেন্টগুলো কত গোছানো।