বিএনপির নেতা দোকানে বসার অভিযোগে বাবা-ছেলেকে চড় মারেন কাদের মির্জা

বসুরহাট পৌরসভার মেয়র আব্দুল কাদের মির্জার বিরুদ্ধে চারজন ব্যবসায়ীকে মারধর, মোটরসাইকেল ভাঙচুর এবং তিনটি বিপণি বিতানে তালা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

মারধরের শিকার ব্যবসায়ীরা হলেন, মোহাম্মদ আলী, আব্দুর রহমান, রহীম উল্যাহ রিটু ও মফিজুল হক মিন্টু। শনিবার সকালে বসুরহাট বাজারের কলেজ রোড ও বসুরহাট ব্যবসায়ী সমিতির কার্যালয়ের সামনে এসব ঘটনা ঘটে। তবে কাদের মির্জা মারধরসহ সব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, শনিবার সকাল ১১টার দিকে বসুরহাট রোডে রহমানিয়া ফার্মেসিতে কাদের মির্জা ১০-১৫ জন অনুসারীকে নিয়ে উপস্থিত হন। ওষুধের দোকানে বিএনপির নেতাদের বসতে দেওয়ার অভিযোগ তুলে মালিক আব্দুর রহমান ও তার ছেলেকে চড় মারেন তিনি। এই ওষুধের দোকানের সামনের জুতার দোকানের মালিক মিন্টুকেও একইভাবে লাঞ্ছিত করা হয়।

এ ছাড়া কাদের মির্জা তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নার বাবা মোহাম্মদ আলীকে তার দোকানের সামনে জিনিসপত্র রাখার অভিযোগ তুলে মারধর করেন। এ সময় কাদের মির্জার নেতৃত্বে তার অনুসারীরা মর্কেটের সামনে পার্কিং করা কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করে স্কাউট ভবন মার্কেট, তানহা কমপ্লেক্স ও চৌধুরী কমপ্লেক্সে নামের তিনটি মার্কেটে তালা মেরে দেন।

উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্না বলেন, আমি এলাকায় নেই। আমার বাবার ওপর হামলার বিষয়টি লোক মুখে শুনেছি। বাবার মোবাইল ফোনে বন্ধ পাচ্ছি। বাবার সঙ্গে কথা বলে পরে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাবো।

কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের মুখপাত্র ও কাদের মির্জার ভাগ্নে মাহবুবুর রশিদ মঞ্জু বলেন, কাদের মির্জা তার লোকজন নিয়ে শনিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বসুরহাট বাজারে তাণ্ডব চালিয়েছেন। তিনি বিএনপির নেতা কামাল উদ্দিন চৌধুরীর মার্কেটে তালা মেরেছেন। উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি নিজাম উদ্দিন মুন্নার বাবা, হার্ডওয়ার ব্যবসায়ী হেলাল, বিসমিল্লাহ ট্রেডার্সের মালিক নুর নবীকে মারধর করেছেন। ১২ থেকে ১৫টি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। তার ভয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। কাদের মির্জার চাহিদা অনুযায়ী যারা চাঁদা দেয় না তাদেরকেই তিনি লাঞ্ছিত করছেন।

এসব অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে কাদের মির্জা বলেন, চাঁদাবাজির প্রশ্নই উঠে না। আমি সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে এসেছি। বসুরহাট পৌরসভার রাস্তা, সরকারি জমি এবং ফুটপাত এক শ্রেণির অসাধু লোক দখল করে রাখায় হেঁটে চলাচলের কোনো উপায় নেই। যারা রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে তাদেরকে একটু ভয়ভীতি দেখিয়েছি ও শাসন করেছি। কাউকে মারধর করা হয়নি। অবৈধভাবে পার্কিং করা মোটরসাইকেল সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার এসব ভালো কাজ অনেকেরই পছন্দ হচ্ছে না। এ কারণে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করছে।

কোম্পানীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুদ্দিন আনোয়ার বলেন, এসব ঘটনা আমি মৌখিকভাবে শুনেছি। তবে কেউ লিখিত অভিযোগ দেয়নি। লিখিত অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।