পাকিস্তানের ক্রিকেটকে আজকের এই উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে আসতে যে কয়জন ক্রিকেটার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর মধ্যে বাবর অন্যতম। এই পর্যন্ত অনেক রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছেন এই তারকা ক্রিকেটার।
নতুন খবর হচ্ছে, আসরে গ্রুপ পর্বের পাঁচ ম্যাচের সবকটিতেই পাকিস্তানকে জয় এনে দিয়েছেন ২৭ বছর বয়সী বাবর। এখন সেমি-ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়েছে অস্ট্রেলিয়াকে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার দুবাইয়ে অনুষ্ঠিত হবে ম্যাচটি। ইতোমধ্যে টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ ২৬৪ রান সংগ্রহ করেছেন পাক অধিনায়ক। গত রোববার স্কটল্যান্ডের বিপক্ষেও হাফ সেঞ্চুরি করেছেন বাবর। আসরে এটি ছিল তার চতুর্থ হাফ সেঞ্চুরি। টুর্নামেন্টে নিজেদের প্রথম ম্যাচে ভারতের বিপক্ষে করেছিলেন অপরাজিত ৬৮ রান।
ভারতের বিপক্ষে ওই ম্যাচে সতীর্থ ওপেনার মোহাম্মদ রিজওয়ান করেছিলেন অপরাজিত ৭৯ রান। তাদের এ ব্যাটিং নৈপুণ্যে চির প্রতিদ্বন্দ্বি ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপে ১৩ বারের প্রচেষ্টায় প্রথম জয় এনে দিয়েছিল পাকিস্তানকে।
শুধু ভারতের বিপক্ষে নয়, আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৫১ এবং নামিবিয়ার বিপক্ষে ৭০ রান সংগ্রহ করেছেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর। অসাধারণ এই ইনিংস তাকে আবারো টি-২০ ক্রিকেটের র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থান ফিরিয়ে দিয়েছে।
বাবর বলেন, ‘এটি অবশ্যই গর্ব করার মত মুহূর্ত। এই সফলতার মুলে রয়েছে কঠোর পরিশ্রম ও লক্ষ্যে অবিচলতা। আমি দিনের পর দিন আরো উন্নতি করতে চাই।’
চলতি বছর এপ্রিলে ওয়ানডে ক্রিকেটে শীর্ষ ব্যাটসম্যান হিসেবে ভারতীয় অধিনায়ক বিরাট কোহলির তিন বছরের টানা আধিপত্যের অবসান ঘটিয়েছিলেন বাবর আজম। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে তিন ম্যাচের সিরিজে তিনি যথাক্রমে ১০৩, ৩২ ও ৯৪ রান করেছিলেন। সিরিজে ২-১ ব্যবধানে জয়লাভ করে পাকিস্তান। শিশুকাল থেকেই আলো ছড়ানো শুরু করা বাবর ইউটিউবে আঁচড় কেটেছেন ১৩ বছর বয়সে।
২০০৭ সালে লাহোরের গাদ্দাফি স্টেডিয়ামে বল বয়ের দায়িত্ব পালনকালে দক্ষিণ আফ্রিকার জেপি ডুমিনির বলে বিশাল এক ছক্কা হাকিয়ে বসেছিলেন। বলটি লং অন দিয়ে সীমানা ছাড়া করেন তিনি। তার ওই ব্যাটিংয়ের স্লো মোশন রিপ্লে দেখে প্রশংসা করেন ধারাভাষ্যকাররা। ছেলের অসাধারণ মেধা প্রমাণিত হওয়ার পরও বাবরের বাবা আজম সিদ্দিকির দৃঢ় বিশ্বাস ছিল টিনএজ আজম নিজে থেকে খুব বেশি দূর এগুতে পারবে না।
বাবর বলেন, আমার জন্য আশীর্বাদের বিষয় হচ্ছে, আমার বাবা আমাকে যথেষ্ট সমর্থন দিয়ে গেছেন। সত্যিকার অর্থে তিনি এখনো আমাকে ভাল না খেললে, কিংবা বাজে শট খেললে তিরস্কার করেন। অনুর্ধ-১৫ ও অনুর্ধ-১৯ পর্যায়ে দারুণ সব শট খেলে সবার দৃস্টি আকর্ষণ করেছেন তিনি।
পাকিস্তানের সাবেক ওপেনার মুদাস্সর নাজার ১৯৯৯ সালে জাতীয় ক্রিকেট একাডেমির দায়িত্বরত অবস্থায় তাকে দেখে মুগ্ধ হয়েছিলেন। বাবর অতীতের ঘটনা স্মরণ করে বলেন, ‘১৫ বছর বয়সে আমি যখন অনুর্ধ-১৫ ক্যাম্পে, তখন একদিন জাতীয় দলের অনুশীলনে আমাদের আমন্ত্রণ জানানো হয়। আর মুদাস্সর আমাকে শোয়েবের বোলিংয়ের মোকাবিলার সুযোগ দেন।’