জিম্বাবুয়ের হারারেতে যুক্তরাষ্ট্রকে ২৭১ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে বাংলাদেশের মেয়েরা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৫ উইকেটে ৩২২ রান করেছে বাংলাদেশ। জবাবে ১৮৩ বল বাকি থাকতে মাত্র ৫২ রানেই গুটিয়ে যায় যুক্তরাষ্ট্র।
নতুন খবর হচ্ছে, আইসিসিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে নারী দলের অধিনায়ক নিগার সুলতানা জ্যোতি জানালেন। মহামারির কারণে যখন বাইরে বের হওয়া নিষেধ ছিল, তখন মাছ ধরার জাল দিয়ে নেট সেশনের জায়গা করে দিয়েছিলেন জ্যোতির বাবা। পাশাপাশি মা-কে বলগার্ল হিসেবে কাজে লাগান শেরপুরের এ তরুণী।
জ্যোতির পূর্ণাঙ্গ সাক্ষাৎকার নিচে তুলে ধরা হলো:
‘আমরা করবো জয় গানটা আমাদের আরও অনুপ্রেরণা দেয় ও উদ্যমী করে ভালো খেলার জন্য। এটি (পাকিস্তানকে হারানো) সত্যিই বিশেষ অনুভূতি। এটি অসাধারণ এক ম্যাচ ছিল। এমন হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের ম্যাচে আমি সবসময় নিজের চোখ বন্ধ করে রাখি।’
‘জয় দিয়ে যেকোনো টুর্নামেন্ট শুরু করা অবশ্যই বড় পাওয়া। আমি এখনও বাছাইয়ের দিকেই মনোযোগ রাখছি। এটি আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ কারণ বিশ্বকাপে যেতে পারলে আমরা আরও অনেক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলতে পারবো। আমরা দল হিসেবে এটির ওপরেই মনোযোগ রাখছি।’
‘টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর আমরা পুরোপুরি ঘরে বসা ছিলাম। প্রথম দুই-তিন মাস আমাদের জন্য খুব কঠিন ছিল কারণ আমরা এতে অভ্যস্ত ছিলাম না। আমার কয়েকজন খেলোয়াড় জানিয়েছে যে, বাড়িতে তাদের বাবা-মায়েরা অনুশীলনে সাহায্য করেছে, নেটে বল থ্রো করেছে।’
‘আমার বাবা মাছ ধরার জাল দিয়ে ব্যাটিং অনুশীলনের নেট বানিয়ে দিয়েছিলেন। কারণ মহামারির কারণে বাইরে যাওয়া যাচ্ছিল না। তিনিই বল থ্রো করেছেন এবং আমি ব্যাটিং অনুশীলন করেছি। আর বল কুড়িয়ে আনার দায়িত্ব পালন করেছেন আমার মা।’
‘প্রায় ছয় মাস পর আমরা স্বাস্থ্যবিধি বজায় রেখে বাইরে খেলার সুযোগ পাই। তখনই আমাদের সব খেলোয়াড় নিজেদের শক্তি ও দুর্বলতা জায়গা নিয়ে কাজ করতে পেরেছে। যা আমাদের দলের পুরো চিত্রটাই আসলে বদলে দিয়েছে। আমরা দল হিসেবে একসঙ্গে অনেক বছর ধরে খেলছি। তাই আমরা একে অপরকে অনেক ভালোভাবে চিনি।’
‘এখানে আসার আগে নিজেদের মধ্যে অনেক ঘরোয়া ম্যাচ খেলেছি আমরা। প্রায় ২৫টির মতো ম্যাচ খেলেছি। যেহেতু আমরা আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলার সুযোগ পাচ্ছিলাম না, তাই আমাদের নিজেদের মধ্যেই খেলতে হতো। তাই আমরা এমনটাই ভাবছিলাম যে, এভাবেই আমাদের বাছাইপর্বের জন্য প্রস্তুত হতে হবে।’
‘এমনকি দুই-তিন সপ্তাহ আগেও আমরা জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে তিন ম্যাচ সিরিজের কথা জানতাম না। তো এরপর আমরা ঠিক করলাম, এটাই সুযোগ জিম্বাবুয়ের কন্ডিশন-আবহাওয়ার সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার। যেভাবেই হোক, যখনই হোক সামনে আসা সুযোগ কাজে লাগানোর পরিকল্পনাই ছিল আমাদের।’
‘আমি যখন ছোট ছিলাম, তখন সবসময়ই ক্লাসে ক্যাপ্টেন থাকতাম। এটা আসলে আমার রক্তেই ছিল। আমার ভাই আমাকে সবসময় বলেছেন যে, তুমি ক্যাপ্টেন হবে। তো উনি সেভাবেই আমাকে বড় করেছেন। তবে আমি কখনও ভাবিনি এতো আগেই এই সুযোগ পেয়ে যাবো।’
‘আমার মতে কুলনেস, প্যাশন ও ক্রেজিনেসের একটা মিশ্রণ রয়েছে আমার মধ্যে। ম্যাচের মধ্যে আমি প্রায়ই অদ্ভুত অদ্ভুত কিছু করি। সেগুলো যেভাবেই হোক দলের কাজে লেগে যায়। ম্যাচের সেরা ভিউটা একজন উইকেটরক্ষক পেয়ে থাকে।’
‘অধিনায়কেরও পুরো মাঠটা ভালোভাবে দেখতে পাওয়া উচিত। তাই আমি মনে করি এটিই (উইকেটকিপিং) সেরা জায়গা, যেখান থেকে আপনি সব ফিল্ডারকে দেখতে পারেন এবং গ্যাপগুলোও বুঝতে পারেন। এটি আমার ব্যাটিংয়েও বাড়তি আত্মবিশ্বাস দেয় কারণ আমি উইকেট সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে যাই।’