মৃত্যু” এক নির্মম, কঠিন বাস্তবতার নাম। মৃত্যু এমন এক মেহমান, যে দরজায় এসে দাড়িয়ে গেলে তাকে ফিরিয়ে দেওয়ার ক্ষমতা দুনিয়ার কারো নেই! মৃত্যু যেকোন বয়সের, যেকোন মানুষের সামনে, যেকোন সময়ে উপস্থিত হতে পারে!
নতুন খবর হচ্ছে, তারিকুজ্জামান মুনির নামটি এই প্রজন্মের কাছে অপরিচিতই ঠেকবে। কিন্তু আশি-নব্বই দশকের ক্রিকেটপ্রেমীদের জিজ্ঞাসা করুন, জানা যাবে এই নাম সংক্রান্ত নানান গল্পগাঁথা। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য যা শোনা যাবে তা হলো, তামিম ইকবাল বা রকিবুল হাসানেরও আগে বাংলাদেশের ক্রিকেটে প্রথম ত্রিশতকটি হাঁকিয়েছিলেন এই মুনির।
১৯৮৪-৮৫ মৌসুমের উইলস কাপ ন্যাশনাল চ্যাম্পিয়নশিপের সেমিফাইনালে ঢাকাবিশ্ববিদ্যালয়ের হয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বোলারদের পিটিয়ে ছাতু করে ৩২টি বাউন্ডারি সহকারে ৩০৮ রান করেছিলেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে সেটি ছিল প্রথম ট্রিপল সেঞ্চুরি। ৪১৭ রানের জুটি গড়ে মুনিরকে সঙ্গ দিয়েছিলেন আতাহার আলী খান; যিনি নিজেও খেলেছিলেন ১৫৫ রানের ইনিংস।
এই অনন্য রেকর্ডের অধিকারী মানুষটি বুধবার পৃথিবীর মায়া কাটিয়ে চলে গেছেন। কদিন আগেই করোনা থেকে সুস্থ হয়েছিলেন, তেমন কোন শারীরিক অসুস্থতাও ছিলোনা। আজ পরিবার নিয়ে সিলেটে যাওয়ার পথে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কাছাকাছি পৌঁছতে হঠাৎ বুক ব্যথা ওঠে তার। তাড়াটারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
মারকুটে ব্যাটসম্যান ছিলেন মুনির। প্রথম বিভাগ ক্রিকেট ১৯৭৮-৭৯ মৌসুমে সময়ের হিসেবে ‘ফাস্টেস্ট’ সেঞ্চুরির রেকর্ডের অধিকারী ছিলেন (৫১ মিনিট)। ফিল্ডার হিসেবে তার খুব খ্যাতি ছিল। ফিল্ডিং নৈপুণ্যের জন্য সতীর্থরা তাঁকে নাম দিয়েছিলো ‘গিট্টু মনির’; কেউ কেউ ডাকতো ‘গুল্লি’। এক সাক্ষাৎকারে তিনি নিজেই বলেছিলেন, ‘ফিল্ডিং দিয়ে আমি হয়তো বাংলাদেশের জন্টি রোডস হতে পারতাম।’
জাতীয় দলে খেলার পাশাপাশি দেশের শীর্ষ সবগুলো ক্লাব যেমন আবাহনী, মোহামেডান, বিমানে খেলেছেন। ১৯৮৬-র আইসিসি ট্রফিতে খেলতে পারেননি স্বজনপ্রীতির কারণে।