মানুষ মানুষের জন্য। জীবন জীবনের জন্য। একটু সহানুভূতি কি মানুষ পেতে পারে না ও বন্ধু….গানের কথাগুলি কবে বাস্তবে রূপান্তরিত হবে সে আশায় বুক বাঁধে হাজারো মানুষ।
নতুন খবর হচ্ছে, অন্তঃসত্ত্বা লিমা বেগমের প্রসব বেদনা ওঠে মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে। বাড়িতেই স্থানীয় দাইদের দিয়ে সন্তান প্রসবের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু দীর্ঘ সময়েও সন্তান প্রসব না হওয়ায় রাত ১১টার দিকে স্থানীয় হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে নিয়ে যায় পরিবারের লোকজন। কিন্তু মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে কোন চিকিৎসক বা নার্স উপস্থিত ছিলেন না। বাইরের গেটে ঝুলছিল তালা।
এদিকে প্রসব বেদনায় ছটফট করছিলেন লিমা বেগম। অনেকে চেষ্টার পরেও দায়িত্বরতদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেননি তারা। পরে কেন্দ্রের ভবনের মাঠে সন্তান জন্ম দেন লিমা বেগম। রাত ১টার দিকে মা ও নবজাতক মেয়েকে নিয়ে বাড়ি ফেরেন পরিবারের লোকজন।
ঘটনাটি ঘটেছে গতকাল মঙ্গলবার রাতে রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের সামনে। লিমা বেগম হারাগাছ ইউনিয়নের চরনাজিরদহ মফিজপাড়া গ্রামের শাহাদত হোসেনের স্ত্রী।
স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বিড়িশিল্প নগরী হিসেবে পরিচিত রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার হারাগাছ। এখানকার বেশির ভাগ মানুষ শ্রমিক। তাদের পক্ষে নগরীর বেসরকারি হাসপাতালে অন্তঃসত্ত্বা নারীদের চিকিৎসাসেবা নেওয়া সম্ভব হয় না। তাই বেশীর ভাগ শ্রমিক পরিবারের অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের একমাত্র ভরসা হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র। কিন্তু সেখানেও স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন নারীরা। দীর্ঘদিন ধরে রাতেই বেলা স্বাস্থ্য কেন্দ্রে সেবা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। এখানে যারা দায়িত্বে রয়েছেন তারাও ঠিকভাবে সেবা প্রদান করেন না বলে অভিযোগ রয়েছে।
স্বাস্থ্য কেন্দ্রে বিকেল থেকে পরদিন সকাল পর্যন্ত প্রতিদিন বন্ধ থাকে সেবা কার্যক্রম। ফলে রাতে কোনো নারী নিরাপদ ও স্বাভাবিক সন্তান প্রসবের জন্য কেন্দ্রে এসে বিপাকে পড়েন।
মিনাবাজার এলাকার রানা মিয়া বলেন, হারাগাছ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের ইনচার্জ পরিবার কল্যাণ পরিদর্শিকা মাঝে মাঝে আসেন। অল্প সময় থেকে আবার শহরে চলে যান। ফলে সেবা নিতে আসা অনেক নারী বিপদে পড়েন।
লিমা বেগমের স্বামী শাহাদত হোসেন বলেন, আল্লাহর রহমতে স্ত্রী ও সন্তান বেঁচে গেছে। আর কিছু সময় নষ্ট হলে স্ত্রী-সন্তান দুইজনেই মারা যেত। গরীবের একমাত্র ভরসা আল্লাহ।