আজ থেকে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস বাস বন্ধ, থাকতে হবে স্টিকার

আজ রবিবার সকাল থেকে রাজধানীতে সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিল সিস্টেমে কোনও গণপরিবহন চলবে না বলে মালিক সমিতির বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। পরিবহন মালিক সমিতির দেওয়া তিনদিনের ডেডলাইন শেষ হয়েছে গতকাল শনিবার (১৩ নভেম্বর)। সেই হিসেবে আজ রবিবার (১৪ নভেম্বর) থেকে গণপরিবহনে সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিল সিস্টেম বন্ধ হওয়ার কথা রয়েছে।

পরিবহন মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে এ তথ্য। অন্যদিকে এখনও রাজধানীর গণপরিবহনগুলোতে ভাড়ার তালিকা ও জ্বালানি ব্যবহার সংক্রান্ত স্টিকার লাগানো হয়নি। তাই এখনও কাটেনি অতিরিক্ত ভাড়ার ভোগান্তি।

জানা গেছে, গত বুধবার (১০ নভেম্বর) ঢাকা সড়ক পরিবহন সমিতির কার্যালয়ে বাস ভাড়া বাড়ানোর পরবর্তী অবস্থা নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনদিনের মধ্যে ঢাকা মেট্রোপলিটন এলাকায় সিটিং এবং গেটলক থাকবে না বলে জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব এনায়েত উল্যাহ। তিনি আরও জানিয়েছেন, রাজধানীতে ওয়েবিল সিস্টেমেও আর বাস চলবে না। গাড়িতে ভাড়ার চার্ট ঝুলিয়ে দেওয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নগর পরিবহনগুলোতে সিটিং সার্ভিসের নামে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় রীতিতে পরিণত হওয়ার পরের ধাপে আসে ওয়েবিল পদ্ধতি। নির্ধারিত দূরত্বে কতজন যাত্রী উঠছে সেটা গণনা করার পদ্ধতি এটি। একজন লাইনম্যান নির্ধারিত দূরত্বে একটি কাগজে যাত্রীর সংখ্যা লিখে স্বাক্ষর করে দেন। কম যাত্রী নিয়ে বেশি ভাড়া আদায়ের জন্য ওয়েবিল নামের এ পদ্ধতি চালু করেছিল বাস মালিকরা। এটি এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে কোনও যাত্রী যদি মিরপুর থেকে শাহবাগ আসতে চান, তবে তাকে গুলিস্তান পর্যন্ত ভাড়া দিতে হয়।

ডিজেলের দাম পুনর্নির্ধারণের কারণে গত ৭ নভেম্বর ঢাকায় ডিজেলচালিত বড় বাসে প্রতি কিলোমিটারের ভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা ও মিনিবাসে ২ টাকা ৫ পয়সা নির্ধারণ করে দেয় বিআরটিএ। বড় বাসে সর্বনিম্ন ভাড়া ঠিক করা হয় ১০ টাকা, মিনিবাসে ৮ টাকা। যেসব বাস সিএনজিতে চলে, সেগুলোর ভাড়া বাড়বে না।

এদিকে সরেজমিনে শনিবারও দেখা গেছে, রাজধানীর বিভিন্ন রুটে চলাচলকারী গণপরিবহনে চলছে অতিরিক্ত ভাড়া আদায়। যাত্রীদের সঙ্গে এ নিয়ে বাকবিতণ্ডাও চলছে আগের মতো।

সরকারি কর্মচারী আওলাদ হোসেন জানিয়েছেন, হঠাৎ বাড়তি ভাড়া গুনতে হচ্ছে। বাড়তি আয় তো হচ্ছে না। নতুন ভাড়া নির্ধারিত হলে রাস্তায় যে নৈরাজ্য হবে- এটিও অজানা নয়। দায়িত্বশীল মহলও এ বিষয়ে উদাসীন। ফলে প্রতিনিয়ত বাসের চালক-হেলপারদের কাছে নাজেহাল হচ্ছেন সাধারণ যাত্রীরা।

রাজধানীতে প্রতি কিলোমিটার রাস্তায় বাসভাড়া ২ টাকা ১৫ পয়সা নির্ধারণ করে দিলেও আদায় করা হচ্ছে ৪ টাকারও বেশি। এ ছাড়া সিটিং সার্ভিস ও ওয়েবিলের সিস্টেম তো আছেই।

এ প্রসঙ্গে বাস মালিকদের সংগঠন সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির মহাসচিব খন্দকার এনায়েতউল্যাহ জানিয়েছেন, এরপর থেকে কোনও গেইটলক ও সিটিং সার্ভিস চললে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। মালিক-শ্রমিকদের সমন্বয়ে বিষয়টি মনিটরিং করা হবে বলে জানান তিনি।