ইংল্যান্ডকে হারিয়ে প্রথমবারের মত ফাইনালে নিউজিল্যান্ড

এখন পর্যন্ত বিশ্বকাপের আগের ছয় আসরে কোনোবারই ফাইনাল খেলতে পারেনি নিউ জিল্যান্ড। কেন উইলিয়ামসনের দল নতুন ইতিহাস লিখল। ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারিয়ে প্রথমবারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠল নিউ জিল্যান্ড। গতকাল আবু ধাবিতে টস হেরে ব্যাটিং করতে নেমে ইংল্যান্ড ৪ উইকেটে ১৬৬ রান তুলেছিল। জবাবে ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেল এবং জিমি নিশামের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই ১ ওভার হাতে রেখে ইংল্যান্ডের ছুঁড়ে দেয়া ১৬৬ রানের বাধা অতিক্রম করে গেছে কিউইরা।

এদিন আবুধাবিতে টস হারে ইংলিশ অধিনায়ক ইয়ন মরগান। অবশ্য ব্যাটিংয়ে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে দারুণ শুরু পেয়েছিল ইংলিশরা। যদিও ধারাটা ধরে রাখতে পারেনি বাটলাররা। শুরুর পাওয়ার প্লেতে ৪০ রান তুলে ফেলা দল পরের তিন ওভারে তুলতে পারেন মাত্র ১৩ রান। তবে মাঝে মঈন আলীর সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে দলকে টানেন ডেভিড মালান। আর শেষটায় দুর্দান্ত ফিফটিতে কিউইদের সামনে ১৬৭ রানের লড়াকু টার্গেট ছোটে ইয়ন মরগানের দল।

ব্যাটিংয়ে শুরুটা ভালো হলেও মাঝে দুই ওপেনারকে হারিয়ে চাপে পড়েছিল ইংল্যান্ড। ব্যাটিংয়ে ধীরগতিতে রান তোলার জন্য শঙ্কা জেগেছিল বড় স্কোরের! পরে সেই কাজটি দারুণ ভাবে সম্পন্ন করেন মঈন আলী। ইংলিশ অলরাউন্ডারের দুর্দান্ত ফিফটিতে শেষের দিকে লড়াকু টার্গেট পায় ইয়ন মরগানের দল।

অবশ্য শুরুর পাওয়ার প্লে ঠিকভাবেই কাজে লাগিয়েছিলো ইংলিশদের দুই ওপেনার জশ বাটলার ও জনি বেয়ারস্টো। তারা দুজনে প্রথম ৬ ওভারে তুলে ফেলেছিলেন ৪০ রান। কিন্তু এরপরে ব্যাটিংয়ে ওপেন করা বেয়ারস্টোকে ফিরতে হয় ১৭ বলে ১৩ রান করে। পাওয়ার প্লের শেষ ওভারে মিলনের বলে উইলিয়ামসনকে ক্যাচ দেন এই হার্ডহিটার। পরে বেশি সময় থাকতে পারেননি জশ বাটলারও।

কিউই স্পিনার ইশ সোধির ঘুর্ণিতে পরাস্ত হন চলমান বিশ্বকাপে প্রথম সেঞ্চুরিয়ান জশ বাটলার। রিভিউ নিয়েছিলেন কিন্তু তাতে কাজ হয়নি। ফেরার আগে তিনি করেন ২৪ বলে ২৯ রান। ইনিংসে ছিল ৪টি চারের মার।

এরপর ৩০ বলে ক্যামিও ইনিংস খেলেন ডেভিড মালান। তার ইনিংসে ছিল ৪টি চার একটি ছয়ের মার। মঈনের সঙ্গে দারুণ জুটি গড়ে এই হার্ডহিটার ফেরেন দলীয় ১১৬ রানের মাথায়। টিম সাউদিকে ছক্কা মারার পরের বলে কনওয়েকে ক্যাচ দেন মালান। তবে শেষ পর্যন্ত ছিলেন মঈন আলী। ৩৭ বলে ৩ চার আর ২ ছয়ে এই অলরাউন্ডার তার ৫১ রানের ইনিংস সাজান। শেষের দিকে ১০ বলে ১৭ রান করেন লিয়াম লিভিংস্টোন।

জবাবে ইনিংসের গোড়াপত্তন করতে আসা মার্টিন গাপটিল ফেরেন ৩ বলে ৪ রান করে। ক্রিস ওকসের প্রথম ওভারের তৃতীয় বলেই উঠিয়ে মারতে গিয়ে ফেরেন অভিজ্ঞ এই কিউই ব্যাটার। পরে ওকসকে স্কুপ করতে গিয়ে আদিল রশিদের হাতে ধরা পড়েন কেন উইলিয়ামসন। তিনি করেন ১১ বলে করেন মাত্র ৫ রান।

দলের বিপর্যয়ে দারুণ এক জুটি গড়ে দলকে টানছিলেন ড্যারিল মিচেল-ডেভন কনওয়ে। কিন্তু দলীয় ৯৫ রানের সময় তাদের ভয়ংকর ৮২ রানের জুটি ভাঙেন লিয়াম লিভিংস্টোন। স্টোনকে এগিয়ে মারতে গিয়ে বল ব্যাটে কানেকশন করতে পারেননি কনওয়ে। পিছনে এতটুকুও ভুল করেননি জশ বাটলার। স্টাম্পিং হয়ে ফেরার আগে ৩৮ বলে ৪৬ রান করেছেন কনওয়ে।

এদিন ১৭ ওভারে ক্রিস জর্ডানকে দুইবার সিমানার বাইরে উড়িয়ে মেরে জিমি নিশাম-মিচেল তুলে নেন ২৩ রান। তাতেই জয়ের অনেক কাছে পৌছে যায় নিউজিল্যান্ড। উল্টো চাপে পড়া ইংলিশ বোলাররা অবশ্য ঠিকঠাক কাজ করতে পারেননি। ১৯ তম ওভারে টানা দুই ছয়ে ম্যাচ হাতের মুঠোয় আনেন মিচেল। ওই ওভারের শেষ বলে চার মেরে দলের জয়ও নিশ্চিত করেন তিনি।