চরম হতাশার বিশ্বকাপে আশার আলো তাসকিন

বাংলাদেশের ক্রিকেটকে আজকের এই উচ্চ পর্যায়ে নিয়ে আসতে যে কয়জন ক্রিকেটার সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তাঁর মধ্যে তাসকিন অন্যতম। এই পর্যন্ত অনেক রেকর্ড নিজেদের করে নিয়েছেন এই তারকা ক্রিকেটার।

নতুন খবর হচ্ছে, চরম ব্যর্থতায় শেষ হয়েছে বাংলাদেশের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন। ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং সব বিভাগেই যেন সর্বোচ্চ পর্যায়ের হতাশাজনক পারফরম্যান্স উপহার দিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট দল। কিন্তু এত হতাশার মাঝেও যেন আশোর আলো হয়ে ছিলেন তাসকিন আহমেদ।

পুরো টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় প্রাপ্তির জায়গা বলা যেতে পারে তাসকিনের বোলিংকে। পরিসংখ্যান বলছে ৬ ম্যাচে তাসকিন উইকেট নিয়েছেন ৬টি। প্রায় ২২ ওভার বল করে দিয়েছেন ১টি মেইডেনও। সাড়ে ৬ এর ইকোনমি রেট টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটের বাস্তবতা বিবেচনায় নিলে অবশ্যই দারুণ। তবে পরিসংখ্যান দিয়ে তো আর পুরোপুরি ব্যাখ্যা করা যাবে না তার বোলিং। পরিসংখ্যানের বাইরেও তাই বেশ কিছু নজরকাড়া দিক দেখা গেছে তাসকিনের বোলিংয়ে।

বাংলাদেশ টুর্নামেন্টে ৮টি ম্যাচ খেললেও সবগুলো ম্যাচে সুযোগ পাননি তাসকিন। তবে যে ৬টি ম্যাচে খেলেছেন বেশিরভাগ ম্যাচে নতুন বল হাতে তাকেই দেখা গিয়েছে ইনিংস উদ্বোধন করতে। নতুন বল হাতে নিজেকে প্রমাণ করে অধিনায়কের আস্থার প্রতিদানও ভালোভাবেই দিয়েছেন তিনি। নতুন বলে নিজের সুইং করানোর দক্ষতার প্রকাশও ঘটিয়েছেন দারুণভাবে। রান আটকিয়ে ব্যাটারদের বিপদে ফেলেছেন, মাঝেমধ্যে তুলেছেন উইকেটও। মোটকথা নিজের বোলিং দিয়ে ব্যাটারদের অস্বস্তিতে রাখার কাজটা খুব অসাধারণভাবে না করলেও অন্য বোলারদের চাইতে ভালোভাবেই করেছেন তাসকিন।

তাসকিনের বিষয়ে সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে তার গতি, এই তথ্য প্রায় সকলেরই জানা। এই বিশ্বকাপে যেন নিজের গতিকে অন্য উচ্চতায় নিয়ে গেছেন তাসকিন। বিশ্বকাপের আগে তার সর্বোচ্চ গতির রেকর্ড ছিল ১৪৮ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা। সেই রেকর্ড ভেঙ্গে এবার সর্বোচ্চ ১৪৯ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা গতিতে বল করেছেন তাসকিন। তবে কেবল গতি দিয়েই তো সবকিছু হয়ে যাবে না। গতির ঝড় তোলার পাশাপাশি বাউন্স, লাইন, লেন্থ অনুসরণ করে দারুণ শৃঙ্খলাবদ্ধ বোলিং করে গেছেন তিনি, টুর্নামেন্টজুড়েই।

টাইগারদের পেস বোলিংয়ের মূল শক্তি মুস্তাফিজুর রহমান পুরো টুর্নামেন্টেই ছিলেন নিজের ছায়া হয়ে। টুর্নামেন্টের মাঝপথে ছিটকে গেছেন মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনও। দলের পেস বোলিংয়ের আশা ভরসা হয়ে তাই ছিলেন তাসকিনই। সুযোগ পেয়ে নিজেকে উজাড় করে দিয়েছেন তিনি। এই টুর্নামেন্টে বাংলাদেশের সেরা পেসার তো বটেই, সম্ভবত পুরো বিশ্বকাপেই বাংলাদেশের সেরা প্রাপ্তির জায়গাই ছিলেন তিনি।