প্রায় বছর খানেক আগে স্ত্রী রোজিনা বেগমের (৩৫) সঙ্গে বিচ্ছেদ হয়েছে মানিক মিয়ার (৪৬)। কিন্তু তারপরও মানিক মিয়া সেই স্ত্রীকে জ্বালাতন করে করছিলেন। বার বার স্বামীর অধিকার চেয়ে ছুটে যাচ্ছিলেন। রোজিনা অতিষ্ঠ হয়ে মানিককে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন ।
রোববার (১৫ নভেম্বর) রাতে সাবেক স্ত্রীর অভিযোগের ভিত্তিতে মানিক মিয়াকে পুলিশ গ্রেপ্তার করে। ঘটনাটি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার মন্দির পাড়ার।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, প্রায় বছর দুয়েক আগে প্রথম স্বামীকে ছেড়ে মানিককে বিয়ে করেন রোজিনা বেগম। মানিক মিয়াও প্রথম স্ত্রীকে রেখে রোজিনা নিয়ে ঢাকায় সংসার করতে থাকেন। তবে বিয়ের বছর খানেক পরেই বনিবনা না হওয়ায় বেশ কিছু অভিযোগ এনে মানিককে তালাক দেন রোজিনা। মানিকও তালাক মেনে নিয়ে প্রথম স্ত্রীর কাছে ফিরে যান। রোজিনাও ঠাকুরগাঁওয়ে প্রথম ঘরের ছেলে মেহেদির বাসায় বসবাস শুরু করেন। কিন্তু মাস ছয়েক পর থেকেই আবার রোজিনার পিছু ছোটা শুরু করেন মানিক। বার বার রোজিনার বাসায় গিয়ে তালাক হয়নি জানিয়ে নিজের বাসায় থাকতে বলে মানিক। গায়ে হাত তোলাও শুরু করেন।
রোজিনার প্রতিবেশী রাহাত জানান, কয়দিন পর পরেই রোজিনার বাসা থেকে চিল্লানির শব্দ শোনা যায়। মানিক রোজিনাকে বাসায় নিয়ে যাইতে চায়। কিন্তু রোজিনা মানা করলেই মাইর শুরু করে মানিক। এক পর্যায়ে রোজিনা ছুটে বাইরে চলে আসেন। পরে এলাকাবাসীর সাহায্যে পুলিশে খবর দেয়।
রোজিনা বলেন, উনাকে বিয়ে করা আমার সবচাইতে বড় ভুল ছিলো। ওই লোক (মানিক) আমার গয়না বিক্রি করে খাইছে, আমার কাছে থাকা সব টাকাও খাইয়া শেষ করছে। আমাকে মারধর করতো। তাই তাকে তালাক দিয়ে দিছি। এখন আমাকে আবার সংসার করতে বলে। তা না হইলে আমার সাথে নিজের তোলা গোপন ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি দেয়। গায়ে হাত তোলে।
রোজিনা বলেন, মানিকের কাছ থেকে রেহাই পেতে দুইবার স্থানীয় প্রতিনিধি ও এলাকাবাসী নিয়ে বসেও কোনো লাভ হয়নি। পরে পুলিশে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তবুও মানিক বিরক্ত করতেই থাকে। অবশেষে পুলিশে কল দিয়ে ঘটনাস্থল থেকে মানিককে তুলে দিয়েছি।
তবে জেল থেকে বের হয়ে মানিক আবার কিছু করতে পারে- সেই ভয়ে নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কিত রোজিনা।
ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা তানভীরুল ইসলাম জানান, রোজিনা এর আগেও আমাদেরকে অভিযোগ করেছে। তখন মানিককে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে। তারপরও মানিক রোজিনাকে অত্যাচার করতে থাকে জানার পরই তাকে আটক করে আনা হয়েছে। পরে সাবেক স্ত্রী রোজিনা বাদি হয়ে করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।