নিজের কিডনি বিক্রি করে মোটরসাইকেল কেনার সিদ্ধান্তঃ হাসপাতালে যুবক

ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালিয়ে হতদরিদ্র পরিবারের সন্তান বাপ্পী মোল্লা (২৫) সংসারের হাল ধরতে চেয়েছিলেন। তবে বাবা তাকে মোটরসাইকেল কিনে দেননি। এ কারণে নিজের কিডনি বিক্রি করে মোটরসাইকেল কেনার সিদ্ধান্ত নেন বাপ্পী। কিডনি বিক্রির জন্য প্রায় তিন দিন ধরে এক হাসপাতাল থেকে আরেক হাসপাতালে ক্রেতা খুঁজে বেড়ান তিনি।

গতকাল রবিবার (৭ নভেম্বর) বিকেলে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল থেকে পুলিশ তাকে হেফাজতে নিয়েছে। বর্তমানে তিনি যশোর কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন।

এদিকে বাপ্পী মোল্লা জানান, চার-ভাই বোনের মধ্যে তিনি সবার বড়। বাপ্পী ও তার হতদরিদ্র বাবা এলাকার পরের জমিতে দিনমজুরের কাজ করেন। গত চার মাস আগে মাগুরা জেলার বারাসি গ্রামের শরীফ হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া খাতুনের সঙ্গে তার বিয়ে হয়। বিয়ের পর কৃষিকাজ করে সংসার খরচ ভালোমতো চলছিল না। বউ পরামর্শ দেয় ভাড়ায় মোটরসাইকেল চালাতে।

সেই পরামর্শেই বাপ্পী তার বাবার কাছে মোটর সাইকেল কেনার টাকা চায়। কিন্তু তাকে মোটরসাইকেল কিনে না দিয়ে তার ছোট ভাই সাগরকে মোটরসাইকেল কিনে দেয় বাবা। এতে গত (৪ নভেম্বর) বাবার সঙ্গে তার বাকবিতণ্ডা হয়। সেই দিনই তার বউ সুমাইয়া পারিবারিক কলহে বাবার বাড়ি চলে যায়। তার পর বাবার প্রতি রাগ করে মোটরসাইকেল কিনেই বাড়িতে ফিরবেন বলে প্রতিজ্ঞা করেন।

গত তিনদিন ধরে ঝিনাইদহ ও যশোরের বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে ঘুরে বেড়িয়েছেন কিডনি ক্রেতার খোঁজে। সেই ধারাবাহিকতায় রবিবার (৭ নভেম্বর) সকাল থেকে যশোর জেনারেল হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ক্রেতা খুঁজতে থাকে বাপ্পী। একপর্যায়ে তার চলাফেরা সন্দেহ হলে ওয়ার্ডবয়রা তাকে হাসপাতালের দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের হাতে তুলে দেয়।

এ ব্যাপারে হাসপাতালের দায়িত্বরত কনস্টেবল সৌরভ বলেন, ঝিনাইদহের এক যুবক নিজের কিনডি বিক্রি করবেন বলে ক্রেতা খুঁজে বেড়াচ্ছে জানতে পেরে তাকে আটক করে থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।

এদিকে যশোর কোতোয়ালি থানার উপপরিদর্শক (এসআই) শংকর কুমার জানান, তার বাবা-মাকে সংবাদ দেওয়া হয়েছে। থানায় এলে বাপ্পীকে তাদের জিম্মায় দেওয়া হবে।