পাকিস্তানকে বড় রানের লিড দিল বাংলাদেশ

প্রথম টেস্টের প্রথম দিন ব্যাট হাতে দারুণ করেছেন লিটন দাস। তুলে নিয়েছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। কিন্তু, দ্বিতীয় দিনের শুরুতেই হতাশ করলেন তিনি। ফিরে গেলেন দিনের দ্বিতীয় ওভারেই। ১১৪ রানে হাসান আলীর শিকার হলেন তিনি।

আজ লিটনের পর ফিরে যান এই টেস্টে অভিষেক হওয়ার ইয়াসির আলী রাব্বি। প্রথম ঘণ্টায় টিকলেন না মুশফিকও। সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ঠিক ৯১ রানের মাথায় আউট হলেন তিনি। দ্রুত উইকেট হারিয়ে চট্টগ্রাম টেস্টের দ্বিতীয় দিনের শুরুটা ভালো হয়নি বাংলাদেশের। অবশ্য রানের চাকা ঠিক আছে বাংলাদেশের। প্রথম দেড় ঘণ্টায় প্রথম ইনিংসে এরই মধ্যে ৩০০ ছাড়িয়ে গেল মুমিনুল হকের দল।

এর আগে গতকাল শুক্রবার দুই ম্যাচ সিরিজের প্রথমটিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিন শেষে ৪ উইকেটে ২৫৩ রান করে বাংলাদেশ। চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে সাবধানী ব্যাটিংয়ে শুরু করেন দুই ওপেনার সাইফ হাসান ও সাদমান ইসলাম। দুজনে মিলে ভালো ব্যাটিংয়ের ইঙ্গিত দেন। তবে, বেশি দূর যেতে পারেনি ওপেনিং জুটি। দলীয় ১৯ রানে মাথায় জুটি ভাঙে।

ইনিংসের পঞ্চম ওভারে শাহীন শাহ আফ্রিদির বলে শর্ট ফাইন লেগে আবিদ আলীর হাতে ক্যাচ তুলে দেন সাইফ। অবশ্য বলটি সাইফের ব্যাট ছুঁয়ে কাঁধে লেগে ওপরে যায়। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ক্যাচ লুফে নেন আবিদ। ব্যক্তিগত ১৪ রানে সাজঘরে ফেরেন তরুণ এ ওপেনার। এরপর টেকেননি আরেক ওপেনার সাদমানও। ঠিক ১৪ রান করে তিনিও বিদায় নিয়েছেন।

চট্টগ্রামে দারুণ খেলা মুমিনুল হক এদিন সাফল্য পাননি। সাজিদের বলে কট বিহাইন্ড হয়ে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। অবশ্য সাজিদের বলেই প্রথমে রিভিউতে বাঁচেন তিনি। শেষ পর্যন্ত তাঁর ওভারেই আউট হন। যদিও শুরুতে মুমিনুলের আউটটি দেননি আম্পায়ার। পরে রিভিউ নিয়ে সফল হয় পাকিস্তান। ১৯ বলে ৬ রান করে ফিরে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক।

দ্রুত তিন উইকেট হারানোর পর হতাশা বাড়ান নাজমুল হোসেন শান্ত। ফাহিম আশরাফের অফ স্টাম্পের বাইরের শর্ট ছেড়ে দিতে পারতেন তিনি। কিন্তু, পারলেন না। ঝাঁপিয়ে পড়ে ক্যাচ নিয়ে নেন সাজিদ খান। ৩৭ বলে ২ চারে ১৪ রান করেন শান্ত। ৪৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে প্রথম সেশনে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।

ওই চাপের মধ্যেই শক্ত জুটি বাঁধেন মুশফিক ও লিটন দাস। দুজনের ব্যাটে দ্বিতীয় সেশন দারুণভাবে পার করে বাংলাদেশ। প্রথম দেড় ঘণ্টায় চার উইকেট হারানো বাংলাদেশ দ্বিতীয় সেশনে একটিও উইকেট হারায়নি। সমালোচনাকে দূরে ঠেলে দারুণ ব্যাটিং করেন লিটন। নুমান আলীকে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৯৫ বলে তুলে নেন ক্যারিয়ারের দশম টেস্ট হাফসেঞ্চুরি। লিটনের পর হাফসেঞ্চুরি তুলে নেন মুশফিক। হাসান আলীকে পরপর দুটি চার মেরে পঞ্চাশের ঘরে পৌঁছে যান অভিজ্ঞ এই ব্যাটার। হাফসেঞ্চুরি করতে মুশফিকের লেগেছে ১০৮ বল।

এর পরে ঠান্ডা মাথায় খেলে সেঞ্চুরির পথে এগিয়ে যান লিটন। আগেরবার আক্ষেপ নিয়ে ফেরা লিটন এবার হাল ছাড়েননি। ঠিক পেয়ে গেছেন ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। ১৯৯ বলে নুমানের বলেই সেঞ্চুরি স্পর্শ করেন তিনি। সেঞ্চুরির পথে হাঁটছেন মুশফিকও। তবে গতকাল আর সেঞ্চুরির দেখা পাননি মুশফিক।

বাংলাদেশ ১ম ইনিংস : ৩৩০/১০ (১১৪.৪ ওভার)

লিটন ১১৪ (২৩৩), মুশফিক ৯১ (২২৫), মিরাজ ৩৮ (৬৮)*, শান্ত ১৪ (৩৭), সাদমান ১৪ (২৮), সাইফ ১৪ (১২)

হাসান ৫১/৫, ফাহিম ৫৪/২, শাহীন ৭০/২