সব ধর্মই ভালোবাসার কথা বলে, বিভেদ বাড়ায় রাজনীতিবিদেরা: দালাই লামা

আজ তিব্বতী বৌদ্ধদের সর্বোচ্চ আধ্যাত্মিক নেতা দালাই লামা বলেছেন, রাজনীতিক আর কিছু অর্থনীতিবিদের কারণে ধর্মের রাজনীতিকরণ হচ্ছে। তিনি বলেন, সব ধর্মই মানুষে মানুষে ভালোবাসার কথা বলে নিজ নিজ দার্শনিক পদ্ধতিতে। কিন্তু রাজনীতিবিদ আর কিছু অর্থনীতিবিদ এই বিভেদকে কাজে লাগিয়ে ধর্মের রাজনীতিকরণ করে। এটি সমস্যাজনক।

আজ বুধবার টোকিওতে আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে ভার্চুয়ালি যোগ দিয়ে এসব কথা বলেন তিনি। বেইজিং-এ অনুষ্ঠিতব্য অলিম্পিক বর্জনে বিশ্বমঞ্চের এগিয়ে আসা উচিত কিনা এ সম্পর্কেও সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তর দেন তিনি। পুরো বক্তব্যে চীন সরকারের বর্তমান রাজনৈতিক অবস্থানের সমালোচনা করেছেন দালাই লামা। তার মতে চীনের সরকার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য ব্যাপারটাই বোঝে না।

দালাই লামা বলেন, ‘তিব্বত আর জিনজিয়াং-এ আমাদের নিজস্ব সংস্কৃতি আছে। কিন্তু কট্টর সঙ্কীর্ণমনা চীনা সরকার সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের ব্যাপারটাই বোঝে না।’ উল্লেখ্য, ১৯৫০ সালে তিব্বত দখল করে নেয় চীন। তারই সূত্র ধরে ১৯৫৯ সালে ভারতে নির্বাসিত হন তিব্বতের সর্বোচ্চ ধর্মগুরু দালাই লামা। এরপর ভারত থেকেই চীনের সাংস্কৃতিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে সক্রিয় অবস্থান প্রদর্শন করে চলেছেন তিনি। এদিকে চীন শুরু থেকেই তাকে একজন ‘বিচ্ছিন্নতাবাদী’ নেতা হিসেবেই দেখে আসছে।

এদিকে মাও সেতুং-এর ব্যাপারে তার মন্তব্য, চিন্তাভাবনা ‘ভালো’, কিন্তু মাঝেমাঝে তারা (মাওবাদী সমাজতন্ত্রী) নীতির প্রয়োগের বেলায় ‘কঠোর’। ক্ষমতাসীন দলের সমালোচনা করলেও সমাজতন্ত্রকে রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে পছন্দই করেন দালাই লামা। সেই থেকে নাকি একবার তরুণ বয়সে নিজেই সমাজতান্ত্রিক দলে যোগ দিতে চেয়েছিলেন! সে যাত্রায় তাকে নিবৃত করেন তারই এক বন্ধু।

এ সময় ভারতের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, মুসলিমদের ব্যাপারে কিছু অভিযোগ থাকলেও মোটাদাগে এখানে নানা ধর্মবর্ণের মানুষ নিরাপদেই বাস করে। তাই ভারত ছেড়ে অন্য কোথাও যাবার পরিকল্পনাও তার আপাতত নেই।