১০৩ টাকায় পুলিশে চাকরি পেয়ে অঝোরে কাঁদলেন সজল

দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী পরিবারের সন্তান সজল খালকো। বাবা মারা গেছেন অনেক আগেই। মা দিনমজুরের কাজ করেন। টিউশনি করে পড়ালেখার খরচ জোগাতেন সজল। পুলিশে ট্রেইনি রিক্রুট কনস্টেবল (টিআরসি) পদে নিয়োগের খবর পেয়ে দরখাস্ত করেন তিনি।

এদিকে পরীক্ষা শেষে বুধবার রাত ৮টায় জয়পুরহাট পুলিশলাইন মাঠে নিয়োগ পরীক্ষার ফলাফল ঘোষণা করেন পুলিশ সুপার মাছুম আহাম্মদ ভুঞা। নিয়োগের ঘোষণা শুনেই কেঁদে ওঠেন সজল।

এ সময় তিনি বলেন, ‘চাকরির জন্য টাকা দেওয়ার কোনো সামর্থ্য নেই। মাত্র ১০৩ টাকা খরচ করে চাকরি হবে—কখনো কল্পনা করিনি। তাইতো চাকরি পাওয়ার ঘোষণায় আবেগ ধরে রাখতে পারিনি। দারিদ্র্যের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেঁচে আছি। চেষ্টা করব সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে পুলিশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করার।’

শুধু সজল নন, জয়পুরহাটে পুলিশের কনস্টেবল পদে চাকরি হয়েছে ১৯ তরুণ-তরুণীর। ঘুষ-তদবির ছাড়াই মূল্যায়ন হয়েছে মেধা ও যোগ্যতার। পূরণ হয়েছে হতদরিদ্র পরিবারের দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন। চাকরি পাওয়ার ঘোষণা শুনে কেঁদে ফেলেন আরো অনেকে।

জয়পুরহাট সরকারি শিশু পরিবারে আশ্রিত এতিম মাহমুদুল হাসানের নেই কোনো বাড়িঘর। মা অন্যের বাড়িতে কাজ করেন। ছোটবেলা থেকে বাবাকে হারিয়ে মাহমুদুলের আশ্রয় হয় শিশু পরিবারে। নিয়োগ পরীক্ষায় ভালো করলেও চাকরি নিয়ে শঙ্কা ছিল তাঁর। কিন্তু ফলাফল ঘোষণার পর আবেগে আনন্দাশ্রু ঝরে তাঁর চোখেও।

এদিকে জয়পুরহাটে পুলিশের চাকরি পাওয়া ১৯ জনই অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারের সন্তান। তাঁদের কেউ দিনমজুরের, কেউ ট্রাকচালকের সন্তান, আবার কেউবা এতিম।