একসঙ্গে ৩ ছেলে সন্তানের জন্ম দিলো প্রতিবন্ধী নারী, একটি নিয়ে গেলো চোরে

পাবনা জেনারেল হাসপাতালে একসঙ্গে তিন সন্তানের জন্ম দিয়েছেন মানসিক প্রতিবন্ধী এক নারী। এর মধ্যে একটি সন্তান চুরি হয়ে গেছে। অপর দুই সন্তানকে দত্তক নিয়েছেন দুই নিঃসন্তান দম্পতি।

সোমবার (১৪ মার্চ) দিবাগত রাতে ওই তিন সন্তানের জন্ম হয়। চুরি যাওয়া শিশুটির ব্যাপারে সিসিটিভি ফুটেজ দেখে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, গত প্রায় ১ বছর ধরে ওই নারী পাবনার বেড়া উপজেলার আমিনপুর এলাকায় ঘোরাফেরা করতেন। এক পর্যায়ে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। একটি বেসরকারি সংস্থার কর্মীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে আনেন। তাকে হাসপাতালে ভর্তিও করা হয়। তিনি কখনো হাসপাতালের বারান্দায় অথবা সিঁড়িতে জীবনযাপন করতেন। হাসপাতালে আগত রোগীর স্বজন বা হাসপাতালের কর্মচারীরাই তাকে খাবার দিতেন।

সোমবার রাতে ওই প্রতিবন্ধী নারী হাসপাতালে ফুটফুটে তিনটি ছেলে সন্তানের জন্ম দেন। কিন্তু রাতের মধ্যে একটি নবজাতক চুরি হয়ে যায়। অপর দুই নবজাতককে দত্তক নিয়েছেন দুই নিঃসন্তান দম্পতি।

সন্তান দত্তক নেওয়া দম্পতিরা জানান, তারা ওই মানসিক প্রতিবন্ধী নারীর কাছ থেকে শিশু দুটিকে লালন পালন করার জন্য দত্তক নিয়েছেন।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র নার্স আফরোজা পারভীন বলেন, বেশ কয়েকদিন ধরে হাসপাতালে প্রতিবন্ধী নারী অজ্ঞাত পরিচয়ে ভর্তি ছিলেন। সেবিকারা তার পরিচর্যাও করেন। ওই নারী তিনটি ছেলে সন্তান জন্ম দিয়েছেন বলে শুনেছি।

পাবনা জেনারেল হাসপাতালের সহকারী পরিচালক ডা. ওমর ফারুক মীর মঙ্গলবার রাতে জানান, ওই নারীকে হাসপাতালে ভর্তি করে নিয়মিত খাবার ও ওষুধ দেওয়া হয়। তিনি মানসিক প্রতিবন্ধী হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে ভর্তি রেখেছে। প্রসূতি হিসেবে সেবিকারাও তার দেখভাল করেছেন। তাকে রিলিজ করে দেওয়া হয়নি বা তার প্রতি অবহেলা করা হয়নি।

ওই নারীর তিনটি সন্তান প্রসবের কথা স্বীকার করে তিনি জানান, হাসপাতালে লোকবল সংকট থাকায় তাদের নানা সীমাবদ্ধতার মধ্য দিয়ে কাজ করতে হয়। নবজাতক চুরির ঘটনা তিনি জেনেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। সিসিটিভি ফুটেজ পরীক্ষা করা হচ্ছে। নবজাতক চুরি করা ব্যক্তিকে শনাক্তের চেষ্টা চলছে।

পাবনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম জানান, এই ঘটনায় এখনো থানায় কোনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। ঘটনাটি জানার পর পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। তদন্তে প্রমাণিত হলে দোষিদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।