সম্প্রতি সুইডেনের পর এবার ডেনমার্কের কোপেনহেগেনের একটি মসজিদের কাছে এবং তুর্কি দূতাবাসের বাইরে পবিত্র কোরআনের কপি পুড়িয়ে দিয়েছে এক ইসলামবিরোধী কর্মী। আজ শনিবার ২৮ জানুয়ারি আলজাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাসমুস পালুদান একজন অতি-ডানপন্থী কর্মী যিনি ডেনিশ এবং সুইডিশ উভয় দেশের নাগরিক। গত ২১ জানুয়ারি সুইডেনে কোরআন পুড়িয়ে ইতোমধ্যেই তুর্কি সরকারের রোষের মুখে রয়েছেন তিনি।
এর আগে গতকাল শুক্রবার ২৭ জানুয়ারি তিনি একটি মসজিদ ও কোপেনহেগেনে তুর্কি দূতাবাসের সামনে এই প্রতিবাদ প্রদর্শন করেন এবং সুইডেনকে ন্যাটোতে অন্তর্ভুক্ত না করা পর্যন্ত প্রতি শুক্রবার এই প্রদর্শনী চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন। সুইডেন এবং প্রতিবেশী ফিনল্যান্ড তাদের ঐতিহাসিক জোটনিরপেক্ষ নীতি থেকে সরে গিয়ে ন্যাটোতে যোগ দিতে চাইছে।
তবে তাদের যোগদানের জন্য সব ন্যাটো সদস্যের কাছ থেকে অনুমোদনের প্রয়োজন হবে, এবং তুরস্ক ইঙ্গিত দিয়েছে যে পালুদানের কর্মকাণ্ডের কারণে এটি সুইডেনের আবেদনে সাড়া দেবে না। এর আগেও কুর্দি সশস্ত্র গোষ্ঠী, কর্মী এবং অন্যান্য গোষ্ঠীগুলোকে ‘সন্ত্রাসী’ হিসাবে বিবেচনা করে তাদেরকে দমন করার জন্য দুই দেশকে চাপ দিয়েছিল আঙ্কারা।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা আনাদোলু এজেন্সি বলছে, ডেনিশ রাষ্ট্রদূতকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে তলব করা হয়েছে। তুর্কি কর্মকর্তারা ‘এই উস্কানিমূলক কাজ যা স্পষ্টভাবে একটি ঘৃণামূলক অপরাধ, তা ঘটতে দেয়ার তীব্র নিন্দা করেছেন’। ‘ডেনমার্কের মনোভাব অগ্রহণযোগ্য’ বলে রাষ্ট্রদূতকে বলা হয় এবং তুরস্কের অনুমতি প্রত্যাহার করা হবে বলে আশা করা হয়।
এদিকে তুরস্কের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পরে একটি বিবৃতি জারি করে পালুদানকে ‘ইসলাম-বিদ্বেষী বুজরুক’ বলে অভিহিত করে এবং তাকে এই বিক্ষোভ মঞ্চস্থ করার অনুমতি দেয়ায় নিন্দা জানায়। তারা বলে, ‘ইউরোপে বসবাসকারী লাখ লাখ মানুষের সংবেদনশীলতাকে আঘাত করে এমন জঘন্য কাজের প্রতি সহনশীলতা দেখানো শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের অনুশীলনকে হুমকির মুখে ফেলে এবং বর্ণবাদী, জেনোফোবিক এবং মুসলিম বিরোধী আক্রমণকে উস্কে দেয়’।
এ বিষয়ে ডেনমার্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লার্স লোককে রাসমুসেন বলেছেন, এই ঘটনাটি তুরস্কের সাথে ডেনমার্কের ‘ভাল সম্পর্ক’ পরিবর্তন করবে না। কোপেনহেগেন ডেনমার্কের স্বাধীনতা সমুন্নত রাখার আইন সম্পর্কে আঙ্কারার সাথে কথা বলতে চেয়েছিল বলে যোগ করেন তিনি।