এখনো বিক্রি হয়নি কোটি টাকার খাট, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে জাদুঘরে দিতে চান মালিক

আগামী ৩১ জানুয়ারি শেষ হবে এবারের আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৭তম আসর। মেলার শুরুর দিকে ক্রেতাদের তেমন উপস্থিতি দেখা না গেলেও শেষ মুহূর্তে জমজমাট মেলা প্রাঙ্গণ। মেলায় ক্রেতাদের ঢল নামায় খুশি ব্যবসায়ীরা। এদিকে এবারের বাণিজ্যমেলার শুরু থেকেই ক্রেতা-দর্শনার্থীদের আগ্রহের কেন্দ্রবিন্দু ছিল ‘পরী পালঙ্ক’ নামের একটি খাট। যে খাটটির বিক্রয়মূল্য ধরা হয়েছে এক কোটি টাকা। ফলে কোটি টাকার খাটটি দেখতে প্রতিনিয়ত অসংখ্য ক্রেতা-দর্শনার্থী স্টলটিতে ভিড় করছেন।

আজ রবিবার ২৯ জানুয়ারি ঢাকা আন্তর্জাতিক বাণিজ্যমেলার ২৯তম দিন। এদিন দুপুরে মেলায় গিয়ে দেখা যায়, আগতদের অনেকে কোটি টাকা দামের এই খাটের পাশে দাঁড়িয়ে সেলফি তুলছেন। অনেকে ভিডিও করছেন। দর্শনার্থীদের অনেকের আকর্ষণের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে কোটি টাকার এ খাট। খাটটির চার কোণে শোভা পাচ্ছে ডানা মেলে দাঁড়িয়ে থাকা চারটি কাঠের তৈরি পরী।

পরীদের ডান হাতে রয়েছে প্রজাপতি। ওই চার পরীর মাথার ওপর থেকে পরস্পরের সঙ্গে সংযুক্ত কাঠের ফ্রেম। খাটের চারপাশে ছোট ছোট পরী এবং দৃষ্টিনন্দন নকশা। ওই খাট দেখতে আসা শরীফুল ইসলাম বলেন, ‘অনেকদিন ধরেই আগ্রহ ছিল কোটি টাকার খাটটি ছুঁয়ে দেখার। এটি দেখতে অনেক সুন্দর হলেও আমার কাছে দাম বেশি মনে হচ্ছে। আর তো মেলায় আসা হবে না, তাই খাটটির সঙ্গে সেলফি তুলে মুহূর্তটি ধরে রাখলাম।’

এদিকে স্বামীসহ বাণিজ্যমেলায় ঘুরতে এসেছেন শাহনাজ আক্তার সুরভী। মেলায় তারও মনোযোগ কেড়েছে এই কোটি টাকার খাট। সে কারণে দেখতে এই প্যাভিলিয়নে এসেছেন। সেখানে তার সঙ্গে কথা হলে বলেন, ‘বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে দেখেছি বাণিজ্যমেলায় কোটি টাকার মূল্যের একটি পালঙ্ক উঠেছে। তাই আজকে স্বামীকে নিয়ে মেলায় এসেছি এটি দেখতে। কোটি টাকার খাট তো আর কেনার সামর্থ্য নেই, তাই মোবাইলে ছবি তুলে রাখছি।’

পরী পালঙ্কের মালিক মো. নুরুন্নবী জানান, তিনি খাগড়াছড়িতে তৈরি করে খাটটি মেলায় এনেছেন। শখের বশে এটি তৈরি করেছেন। সময় লেগেছে প্রায় ৩৮ মাস। সেগুন কাঠ দিয়ে সম্পূর্ণ হাতে খোদাই করে বানানো হয়েছে এই রাজকীয় খাট। তিনি আরও জানান, খাটটির পেছনে তার ৫০ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে। এ কারণেই দাম চাচ্ছেন এক কোটি টাকা। তবে মেলার ২৮ দিন চলে গেলেও এখনো বিক্রি করতে না পারায় মোটেও হতাশ নন মো. নুরুন্নবী।

এ বিষয়ে তিনি বলেন, ‘প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ এখানে আসছেন খাটটির ছবি তুলতে। এতেই আমি খুব খুশি। যদি শেষ পর্যন্ত বিক্রি করা সম্ভব না হয় তাহলে তার একটি ইচ্ছা রয়েছে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে খাটটি জাদুঘরে দিয়ে দিতে চান।’ তিনি আরও বলেন, ‘এখন পর্যন্ত খাটটির দাম উঠেছে ৫১ লাখ ৫০ হাজার টাকা। আশা করছি, মেলার বাকি যে দুদিন রয়েছে এই সময়ে বিক্রি করতে পারবো। ‘পরী পালঙ্ক’ যিনি কিনবেন তার জন্য উপহার হিসেবে একটি মোটরসাইকেল এবং এক ভরি ওজনের স্বর্ণালংকার থাকবে।’