নাটক ছাড়লেন মেহজাবীন!

দেশে নাটকের তিন প্রাণভোমরা বলা হয় অপূর্ব-মেহজাবীন-আফরান নিশোকে। অনেকে এই ত্রয়ীকে ‘সিন্ডিকেট’ বলেও আখ্যা দিয়ে থাকেন। কারণ, মূলত এই তিনজনে মিলেই গত পাঁচ/সাত বছরের ইউটিউবভিত্তিক নাটকের সফলতাকে শাসন করেছেন আপন খেয়ালে। হুম, ইউটিউবের আগেও তিন তারকাই নাটকে জনপ্রিয়তা পেয়েছেন, তবে অন্তর্জাল অধ্যায়ে তারা ছাপিয়ে গেছেন সবাইকে।

তবে নতুন খবর হলো, এরইমধ্যে নাটক তথা ইউটিউব কনটেন্ট থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছেন আফরান নিশো। ব্যস্ত হয়েছেন ওটিটি হয়ে পূর্ণদৈর্ঘ্য সিনেমায়। টিভি তথা ইউটিউব নাটকের কাজের পরিমাণ একেবারে তলানিতে নামিয়ে এনেছেন অপূর্বও। সম্প্রতি গুঞ্জন উঠেছে সেই ধারাবাহিকতা রেখেছেন এই সিন্ডিকেটের অন্যতম রানী মেহজাবীন চৌধুরীও।

আর তারই সত্যতা মিললো গতকাল রবিবার ২৯ জানুয়ারি রাতে মেহজাবীনের আলাপে। এদিন রাতে আয়োজন করা হয় তার নতুন ওয়েব সিরিজ ‘দ্য সাইলেন্স’ প্রিমিয়ার। যা সোমবার ৩০ জানুয়ারি প্রকাশ পাচ্ছে ওটিটি প্ল্যাটফর্ম বিঞ্জ-এ। সেই লক্ষ্যে রবিবার রাতে রাজধানীর এসকেএস টাওয়ারে হাজির হন নির্মাতা ভিকি জাহেদ, অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরীসহ অন্য কুশলীরা।

অনুষ্ঠানে মেহজাবীন গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বেশ খোলামেলা। নাটক ছাড়া প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমি আসলে নাটক ছাড়ার কথা কখনোই বলিনি। আমি নাটকেরই মেয়ে।’ পরে অবশ্য ভিন্ন প্রসঙ্গে নিজের কথাটিকে কথার কথা বানিয়ে ফেললেন এই মেধাবী অভিনেত্রী। বললেন, ‘মনের মতো স্ক্রিপ্ট পেলে অবশ্যই নাটক করবো। আবার আসবো।’

এবার বুঝলেন তো! নাটকটিকে ছেড়ে যাওয়ার গল্পটা? ইদানীং ‘মনের মতো’ স্ক্রিপ্ট পাচ্ছেন না সর্বোচ্চ সম্মানীর বিপরীতে বছরে প্রায় ৩ শতাধিক দিন নাটকের শুটিং করা এই চৌধুরী কন্যা! তাই নয়, মেহজাবীনের অনুরোধ, ‘‘এই ভ্যালেন্টাইনে একটাই কাজ আমার। সেটি হলো ‘দ্য সাইলেন্স’। এটাই দেখবেন একমাস। মানে পুরো ফেব্রুয়ারিজুড়ে।’’

এ সময় পাল্টা প্রশ্ন ছিলো- তাহলে ভ্যালেন্টাইনের মতো ঈদেও কি নাটকশূন্য থাকছেন! যেখানে ঈদ-উৎসব মানেই মেহজাবীনের ডজনখানেক জয়জয়কার! জবাবে বললেন, ‘ঈদে কী হবে না হবে- কেমনে বলবো!’ সম্ভবত নাটক প্রশ্নে অভিনেত্রী খানিক বিরক্তই হন। যদিও মুখে বললেন, ‘আমি নাটকেরই মেয়ে!’

এদিকে নাটক থেকে যে মেহজাবীন নিজেকে ভালোমতোই সরিয়ে নিলেন তার আভাস মিললো নতুনদের ‘জায়গা’ ছেড়ে দেওয়ার ইচ্ছা পোষণের মাধ্যমে। প্রসঙ্গক্রমে মেহজাবীন বলেন, ‘আমরাই যদি কনটিনিউ করি তাহলে তো হবে না। একটা জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে হবে আমাদের। আবার অন্যদের জন্যও জায়গা করে দিতে হবে। এখন অনেকেই ভালো করছে ইয়াং জেনারেশনের। তাদের জায়গা দিতে হবে। তারা অনেক ভালো করুক। আমি মনে করি ওদের সাপোর্ট দরকার।’

এ সময় মেহজাবীন বোঝাতে চাইলেন, তিনি নতুনদের জায়গা করে দেওয়ার প্রকল্প হিসেবেই নাটক থেকে নিজেকে এখন সরিয়ে নিলেন। তার ভাষায় এটাও এক ধরনের সাপোর্ট। এখন অনুমান করা যাচ্ছে, আফরান নিশো আর অপূর্বর রেশ ধরে মেহজাবীনও তার ওটিটি-সিনেমার ছক এঁকেছেন দারুণভাবে। যার আনুষ্ঠানিক শুরুটা হচ্ছে ভিকি জাহেদের ‘দ্য সাইলেন্স’ দিয়ে। অন্যদিকে আফরান নিশোর ওটিটি চমক হিসেবে শিগগিরই আসছেন ‘সিন্ডিকেট’ এবং আশফাক নিপুণের একটি প্রজেক্ট। হাতে আছে দুটো পূর্ণদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্রও।