হোটেল রুমে গোপন ক্যামেরা, ছবি তুলে শিক্ষার্থী দম্পতিকে ব্ল্যাকমেইল

রাজশাহী মহানগরীর একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষে লাগানো ছিল গোপন ক্যামেরায় ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করা হচ্ছিল এক শিক্ষার্থী দম্পতিকে। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ ওই হোটেলে অভিযান চালিয়ে দুজনকে আটক করেছে। তাঁদের কাছ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে হোটেল কক্ষে গোপনে ধারণ করা ভিডিওচিত্র। জানা গেছে, হোটেলটির নাম নিউ পপুলার-২। রাজশাহী মহানগরীর লক্ষ্মীপুর এলাকায় হোটেলটির অবস্থান। ওই এলাকায়ই রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল এবং অসংখ্য বেসরকারি হাসপাতাল-ক্লিনিক। দূর-দূরান্ত থেকে চিকিৎসা নিতে এসে অসংখ্য মানুষ ওই এলাকার আবাসিক হোটেলে রাতে থাকেন। হোটেলটিতে অনেককেই এভাবে জিম্মি করা হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

হোটেল থেকে গ্রেপ্তার দুজন হলেন ব্যবস্থাপক শরিফ উদ্দিন (২৮) এবং হোটেল বয় আব্দুন নূর (১৯)। শরিফ উদ্দিনের বাড়ি নওগাঁর পোরশায়। আব্দুন নূরের বাড়ি চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে গত রোববার রাতে ওই হোটেলে ওঠেন। তাঁর স্ত্রী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। তাঁরা হোটেলে ওঠার কিছুক্ষণ পরই শরিফ ও নূর গিয়ে দরজায় কড়া নাড়েন। এ সময় তাঁদের কাছে অতিরিক্ত অর্থ দাবি করা হয়। বলা হয়, হোটেল কক্ষের ভেতরের দৃশ্য ভিডিও করা হয়েছে। এখন টাকা না দিলে ভিডিও ফাঁস করা হবে। ওই রাতেই দুই শিক্ষার্থী হোটেল থেকে পালিয়ে বাঁচেন। কিন্তু পরদিন গতকাল সোমবার শরিফ ও নূর তাঁদের কাছে দফায় দফায় ফোন করে টাকা দাবি করেন। প্রথমে তিন লাখ, এরপর দুই লাখ, সর্বশেষ ৫০ হাজার টাকা দিলে ভিডিও প্রকাশ করা হবে না বলে তাঁদের জানানো হয়। বাধ্য হয়ে ওই দম্পতি রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের এক নেতাকে জানান। তিনি ওই হোটেলে গিয়ে নূর ও শরিফের ফোন তল্লাশি করে ভিডিওচিত্র পান।

ছাত্রলীগের ওই নেতা জানান, শুধু যে ওই শিক্ষার্থী দম্পতির ভিডিও আছে, তা নয়। আরও অনেক সাধারণ মানুষের ভিডিও করেছেন শরিফ ও নূর। তাঁদের ফোন তল্লাশি করে দেখা গেছে, এসব ভিডিওচিত্র হোয়াটসঅ্যাপের মাধ্যমে আরও অনেককে পাঠানো হয়েছে। তাই বিষয়টি রাতেই পুলিশকে জানানো হয়। পরে রাজপাড়া থানা-পুলিশের একটি দল হোটেল থেকে দুজনকে আটক করে।

নগরীর রাজপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এ এস এম সিদ্দিকুর রহমান বলেন, এ ঘটনায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী হোটেলের মালিকসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন। গ্রেপ্তার দুজনকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এ ছাড়া আরও কতজনের সঙ্গে এ ধরনের ব্ল্যাকমেইলের ঘটনা ঘটেছে তা পুলিশ তদন্ত করছে বলেও জানান ওসি।