‘আমার মেয়েটা জীবিত আছে ভাই’

মাদারীপুরের শিবচরে যাত্রীবাহি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ার ঘটনায় নিহত বেড়ে ২০ জনে দাঁড়িয়েছে। এতে আহত হয়েছেন অন্তত ২৭ জন। আহতরা শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। স্থানীয়দের সহযোগিতায় উদ্ধার কাজ শেষ, চলছে মৃতদেহ শনাক্তের কাজ। রোববার (১৯ মার্চ) সকালে ভাঙ্গা-ঢাকা এক্সপ্রেসওয়েতে এ ঘটনা ঘটে।

বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান সুইটি (২০)। ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। বাসা নিয়ে থাকেন রাজধানীর মিরপুরে। কয়েকদিন আগে ছুটিতে বাড়িতে এসেছিলেন। ছুটি কাটিয়ে বাবা মাসুদ মিয়াকে নিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে ইমাদ পরিবহনের বাসে করে যাচ্ছিলেন ঢাকা। রবিবার (১৯ মার্চ) ভোরে গোপালগঞ্জ থেকে বাসে ওঠেন বাবা-মেয়ে। বাসটি মাদারীপুরের শিবচরের কুতুবপুর এলাকায় বাসটি পৌঁছালে পদ্মা সেতুর এক্সপ্রেসওয়ে থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নিচে পড়ে যায়। এতে সুইটি ঘটনাস্থলেই মারা যান। মাসুদের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদরের পাঁচুরিয়া গ্রামে। সেখানেই পরিবার নিয়ে থাকেন। এসেনশিয়াল ড্রাগসে নিরাপত্তরক্ষী হিসেবে কর্মরত আছেন তিনি।

আহত মাসুদ মিয়াকে ভর্তি করা হয় শিবচর উপজেলার পাঁচ্চর এলাকার ইসলামিয়া হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। হাসপাতালের বেডে শুয়ে মেয়ের জন্য কাঁদছেন এই বাবা। বলেন, ‘আমার মেয়েটা জীবিত আছে ভাই’? তিনি জানান, সুইটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষে পড়তেন। ঢাকার মিরপুরে ভাড়া বাসায় থাকতেন তিনি। সকালে মেয়েকে ঢাকায় পৌঁছে দিতে যাচ্ছিলেন। পথে এই দুর্ঘটনা ঘটে।

এদিকে শিবচর হাইওয়ে পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবু নাঈম মো. মোফাজ্জেল হক জানান, নিহতের সংখ্যা প্রায় ২০ জন। হতাহত বহু রয়েছে। উদ্ধার কাজ চলছে। জেলা প্রশাসক রহিমা খাতুন জানান, নিহতের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা আর্থিক সহযোগিতা ও আহত যাত্রীদের পরিবারকে পাঁচ হাজার টাকা করে সহযোগিতা দেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।