ক্রিকেট ছেড়ে দিতে চাওয়া তাওহীদ হৃদয়কে তুলে আনেন সুজন

গত ৮ জানুয়ারি ফরচুন বরিশালের বিপক্ষে ম্যাচটা জিতিয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসেছিলেন তাওহীদ হৃদয়। ঠিক ৭০ দিন পর তিনি আবারও এলেন সাংবাদিকদের সামনে, এবার দেশের জার্সি গায়ে দিয়ে। এতদিনে জীবনটা ভালোই বদলেছে তার। বিপিএলে ভালো করার পর টি-টোয়েন্টি অভিষেক হয়েছিল ইংল্যান্ডের বিপক্ষেই। এবার সিলেটে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে এসে হয়েছে ওয়ানডে অভিষেকও। হৃদয় রাঙিয়ে ৯২ রানের ইনিংস খেলে হয়েছেন ম্যাচসেরা।

এরপর সংবাদ সম্মেলনে এসে নিজের পুরোনো দিনে ফিরে গেছেন হৃদয়। শুনিয়েছেন, ভুল একাডেমিতে ভর্তি হয়ে অর্থনৈতিক ক্ষতি আর একসময় ক্রিকেটার ছাড়তে চাওয়ার কথা। ঢাকায় একটি একাডেমিতে ভর্তি হওয়ার জন্য টাকা দিয়েছিলেন তাওহীদ হৃদয়। এরপর ওই ঠিকানায় গিয়ে দেখেন কোনো একাডেমিই সেখানে নেই। পরে ছেড়ে দিতে চেয়েছিলেন ক্রিকেট। সেখান থেকে তাকে তুলে আনায় কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন সাবেক ক্রিকেটার ও বিসিবি পরিচালক খালেদ মাহমুদ সুজনকেও।

তিনি বলেছেন, ‘যখন একাডেমিতে গিয়েছিলাম, অনেককিছু আসলে ক্ষতি করেই গিয়েছিলাম ওখানে। তারপর একটা সময় ক্রিকেট খেলার কোনো ইচ্ছে ছিল না। পরিবার থেকে ওভাবে কোন সাপোর্ট ছিল না, বাবার সাপোর্ট ছিল না, যদিও বাবা খেলা বুঝে না। আমি যখন জেদ ধরতাম মায়ের সঙ্গে, যতটুকু পেরেছে আর কী চেষ্টা করেছে।’

তিনি বলেন, ‘একটা সময় আমার খেলার ইচ্ছে ছিল না। সেসময় সুজন স্যার (খালেদ মাহমুদ) আসলে সেই ছোট বেলাতেই, যখন আমি অনূর্ধ্ব-১৬ খেলি, সুজন স্যার ওখান থেকে নিয়ে এসেছে এবং উনি সুযোগ করে দিয়েছে। ওখান থেকে ফাস্ট ডিভিশন খেলে আস্তে আস্তে উঠে আসা।’ অনেক লম্বা পথই এরপর পাড়ি দিয়ে এসেছেন তাওহীদ। অভিষেকেই সেঞ্চুরি করার সুযোগ অবশ্য তার হাতাছাড়া হয়ে গেছে। এ নিয়ে আফসোস নেই। তবে যে পরিবার থেকে একসময় ক্রিকেটের প্রতি নেমে এসেছে ‘নিষেধাজ্ঞা’, এখন জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়ার পর সেখানকার কী অবস্থা?

তাওহীদ বলছিলেন সে কথা, ‘অবশ্যই প্রতিটা বাবা-মায়ের প্রতিক্রিয়াই ভালো হওয়ার কথা (জাতীয় দলে আসার খবরে)। আমার বাবা-মাও খুশি হয়েছে। আমার মা বিশেষ করে একটু বেশি খুশি হয়েছে। উনি তো ছোটবেলা থেকেই আমাকে অন্যভাবে দেখেছে। পরিবার থেকে পড়াশোনার জন্য সবসময় চাপ দিতো, পড়াশোনার দিকে বেশি ফোকাস ছিলাম না। যতটুকু পেরেছি বেশির ভাগ সময় মাঠেই থাকতাম। আলহামদুলিল্লাহ, বাবা-মা খুশি হয়েছে, আশেপাশের আত্মীয়-স্বজনরাও খুশি।’