সহকারী শিক্ষকদের মারধরে হাসপাতালে প্রধান শিক্ষক

এবার নতুন ভবন নির্মাণ সংক্রান্ত জটিলতায় অভ্যন্তরীণ কোন্দলের জেরে পলাশবাড়ি উপজেলার বরিশাল ইউনিয়নের জুনদহ উচ্চ বিদ্যালয়ে মারপিটের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় সহকারী শিক্ষকদের মারধরে প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল (৫৪) আহত হয়েছেন। এ সময় তার ছেলে সিনহা (২২) ও ছোট ভাইয়ের স্ত্রী ফাতেমা বেগমও (৩০) আহত হন। স্থানীয়রা পুলিশ ও শিক্ষা কর্মকর্তাদের খবর দিলে তাদের উদ্ধার করে স্থানীয় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। তবে সহকারী শিক্ষকরা এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এদিকে বিদ্যালয় সূত্র ও এলাকাবাসী জানান, বিদ্যালয়ের চারতলা ভবন নির্মানের জন্য ২০২২ সালের নভেম্বর থেকে ডিসেম্বরের মধ্যে পুরোনো সেমিপাকা ভবন ভেঙ্গে ফেলা হয়। কিন্তু জমির সীমানা নিয়ে এক প্রতিবেশির আপত্তি ও অভিযোগের মুখে সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে উদ্বোধন বা অন্য কোনো ধরনের কাজ শুরু করা যায় নি।

এর ফলে আগের ঘর না থাকায় কোনরকমে টিনের ছাপড়া দিয়ে শিক্ষার্থীদের পাঠদান কার্যক্রম চলতে থাকে। রোদ ও বৃষ্টিতে মাঝে মধ্যেই বিদ্যালয় অঘোষিত ছুটি দিতে হয়। এই অবস্থায় ওই প্রতিবেশি টয়লেটের রাস্তা দখলে নিলে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা চরম বিপাকে পড়ে। প্রধান শিক্ষক কোনো উদ্যোগ নিচ্ছেন না অভিযোগে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। মাঝে মাঝেই তাদের তর্ক বিতর্ক হতো।

প্রত্যক্ষদর্শী ও প্রধান শিক্ষকের স্বজনরা বলেন, মঙ্গলবার দুপুরের দিকে সহকারী শিক্ষক রিজেন মিয়া, মুক্তার হোসেন, কাওছার আলী, নাঈম সহ অন্যদের সঙ্গে প্রধান শিক্ষকের বাগযুদ্ধ শুরু হয়। এর এক পর্যায়ে প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল ধাক্কাধাক্কি ও মারপিটের শিকার হন। এ সময় তার বাড়িতে খবর গেলে সেখান থেকে তার ছেলে সিনহা ও ছোট ভাইয়েরর স্ত্রী ফাতেমা বেগম তাকে বাচাতে এলে তারাও আক্রান্ত হন।

এ ব্যাপারে চিকিৎসাধীন প্রধান শিক্ষক কামরুল আহসান সোহেল বলেন, তিনি নানা জটিল রোগে আক্রান্ত। সেটা জেনেও সহকারী শিক্ষকরা তার গায়ে হাত তুলেছে। তিনি এই ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি চান। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সহকারী শিক্ষক বলেন, এই অভিযোগ সত্য নয়। বরং প্রধান শিক্ষকের পরিবারের লোকজনরাই তাদের ওপর হামলা চালান। প্রধান শিক্ষককে কেউ আঘাত করেনি। তিনি উত্তেজিত হয়ে টেবিলের কাঁচে ধাক্কা দিয়ে হাত কেটে ফেলেন।

এদিকে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মাহাতাব হোসেন বলেন, ঠিক কি ঘটেছে তা জানতে তদন্ত করা হবে। তারপর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ বিষয়ে পলাশবাড়ী থানার ওসি (তদন্ত) দিবাকর অধিকারী বলেন, এ ব্যাপারে থানায় রাতে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।