রাত গভীর হলেই এক যুবক জানালা দিয়ে ধারণ করতো ঘুমন্ত নারীদের ভিডিও

ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের সাফখোলা গ্রাম। এই গ্রামে ঘটেছে এক জঘন্য ঘটনা। নারীরা রাতে ঘুমিয়ে পড়লে জানালা দিয়ে অপ্রস্তুত অবস্থার ছবি ও ভিডিও ধারণ করতেন এক যুবক। এখানেই শেষ নয়। সুযোগ বুঝে ঘুমে আচ্ছন্ন নারীদের গায়ে জানালা দিয়ে হাতও দিতো সে।

দেড় বছর ধরে গ্রামটিতে প্রতি রাতেই গভীর রাতে হাজির হতো এক যুবক। নারীরা ঘুমিয়ে পড়লে তাদের ঘুমন্ত অবস্থার আপত্তিকর ছবি তোলা ও ভিডিও করা হতো। এমনকি জানালা দিয়ে গায়ে হাত এবং পাটকাঠি দিয়ে নারীদের শরীরে খোঁচা দিত বলে এলাকাবসী জানিয়েছে।

সবশেষ ঈদুল ফিতরের দিবাগত রাতে জানালা দিয়ে ফের এক নারীর ছবি তোলার সময় তাকে ধরতে গেলে সে মোবাইল ফোন ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তার মোবাইল ফোনে গ্রামের বিভিন্ন নারীর স্পর্শকাতর ছবি ও ভিডিও পাওয়া গেছে। এই ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের সাফখোলা গ্রামে।

এ ঘটনায় এলাকায় হৈচৈ পড়ে যাওয়ার পর থেকে এলাকাবাসীরা তাদের নিরাপত্তায় রাত জেগে পাহারা দিতে শুরু করেছে। প্রথম দিকে কেউ টের না পেলেও মাঝে মধ্যে দুই একটি ঘটনার খবর এলাকাবাসী পেত। তবে যে রাতে পাহারা দেওয়া হত সেই রাতে কোনো ভিডিও ধারণ করা হত না।

উপজেলার সাফখোলা গ্রামের বাসিন্দা ফেরদৌস বলেন, ‘ইদের দিন রাতে আমি ঘুমিয়ে পড়ি এবং রাত তিনটার দিকে আমার ঘুম ভেঙ্গে গেলে দেখতে পাই আমার ঘরের জানালা দিয়ে এক যুবক মোবাইল দিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করছে। তখন আমি তার হাতে আঘাত করি এবং তার হাত থেকে মোবাইল পড়ে যায়। এরপর মোবাইলে ধারণ করা এলাকার বিভিন্ন নারীদের নগ্ন ও অর্ধনগ্ন ছবি দেখতে পাই। মোবাইলের মাধ্যমে দোষী যুবককে খুঁজে বের করে উপযুক্ত শাস্তি দাবি জানাই।’

সাফখোলা গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, ‘আমরা যদি নিরাপদে রাতে ঘরে শুয়ে না থাকতে পারি এর থেকে দুঃখজনক ঘটনা আর কি হতে পারে। এভাবে রাতের অন্ধকারে মোবাইলে ছবি তোলা ঠিক না। আমরা ওই যুবকের শাস্তি দাবি জানাই।’

নিত্যানন্দপুর ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড মেম্বার আবু তাহের বলেন, ‘সাফখোলা গ্রামটিতে এখন আতঙ্ক বিরাজ করছে। রাতে মেয়েরা ইচ্ছেমতো ঘুমিয়ে থাকে তাদের ছবি তোলা মোটেও ঠিক না। এ ঘটনার পর থেকে এলাকার কেউ ঠিকমত রাতে ঘুমায় না। আমি শৈলকুপা থানাকে জানিয়েছি। এমন অপকর্মের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তির শাস্তি হওয়া উচিত।’

শৈলকুপা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনা শুনেছি, ঘটনাটি খুবই আপত্তিজনক। অপরাধীকে খুঁজে আইনের আওতায় নিয়ে আনব। তবে এ ঘটনায় এখনো থানায় কোনো মামলা হয়নি।’