পাইপ লাইনে পানি না পেয়ে ইউপি চেয়ারম্যানকে জুতাপেটা!

তিন মাস ধরে পাইপলাইনে পানির সরবরাহ নেই। ক্ষুব্ধ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যানকে জুতাপেটার অভিযোগ উঠেছে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নে ঘটেছে এমন ঘটনা।

মঙ্গলবার (২ মে) সকালে ভুক্তভোগী ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সরদার এ ঘটনায় থানায় একটি অভিযোগ করেছেন।

ঘটনার পর থেকে মূল অভিযুক্ত কামরুল ইসলাম পলাতক। তিনি টুঙ্গিপাড়া উপজেলার কুশলী ইউনিয়নের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা। তিনি স্থানীয় একটি বাজার কমিটির সাধারণ সম্পাদক।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী জানান, তিন মাস ধরে পাইপ লাইনের মাধ্যমে সরবরাহ করা সুপেয় পানি পাচ্ছেন না ৬, ৭ ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের অন্তত ৫০০ গ্রাহক। অথচ বিল বাবদ প্রতি মাসে ৫০০ টাকা করে তাদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে। বিষয়টি ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন সরদারকে একাধিকবার জানান অভিযুক্ত কামরুলসহ ও অন্যান্য গ্রাহকরা।

এতে সমাধান না আসেনি। এরই মধ্যে গত ৩০ এপ্রিল সন্ধ্যায় খালেক বাজারে পানি সরবরাহ নিয়ে কামরুল ইসলামের সঙ্গে বেলায়েত হোসেনের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে তিনি জুতা খুলে ইউপি চেয়ারম্যানকে পেটাতে শুরু করেন। তখন স্থানীয়রা কামরুলকে শান্ত করেন। এরপর ইউপি চেয়ারম্যান বেলায়েত হোসেন বাড়ি চলে যান।

অভিযুক্ত কামরুল ইসলামের স্ত্রী লাইজু বেগম বলেন, “চেয়ারম্যানকে জুতাপেটা করা হয়নি। তিন মাস ধরে আমরা পাচ্ছি না। পানির কষ্টে আমদের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে। চেয়ারম্যানের সঙ্গে এ নিয়ে কামরুলের বাগ্‌বিতণ্ডা হয়েছে। আর এ ঘটনার পর সোমবার সন্ধ্যায় চেয়ারম্যানের ভাই জাহাঙ্গীর সর্দারের ছেলে হৃদয়সহ ১০/১৫ জন লোক আমাদের দোকানের সামনে থাকা কয়েকটি ব্যানার-ফেস্টুন ভাঙচুর করে। এছাড়া আমার স্বামী ও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে।”

তবে বেলায়েত হোসেন সরদার বলেন, “রবিবার সন্ধ্যায় গাড়ি থেকে নেমে একজনের সঙ্গে কথা বলছিলাম। হঠাৎ কামরুল আমার পেছনে জুতা দিয়ে আঘাত করে চলে যায়। পরে আমিও বাড়ি চলে আসি।”

তিনি বলেন, “আমার লোকজনকে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটানোর নির্দেশ দিয়েছি। তারা নিজেদের দোষ ঢাকতে বিভিন্ন রকম কাহিনী রটাচ্ছে। সরবরাহ মিটারে সমস্যা থাকায় কিছু কিছু এলাকায় পানি সরবরাহে সমস্যা হয়েছে। তিন লাখ টাকা দিয়ে নতুন মিটার কেনা হয়েছে। এখন পানি সরবরাহ স্বাভাবিক হয়ে আসছে। এ ঘটনায় আমি কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছি।”

টুঙ্গিপাড়া থানার পরিদর্শক (ওসি) এসএম কামরুজ্জামান ঢাকা ট্রিবিউনকে বলেন, “২ মে সকালে চেয়ারম্যান থানায় এসে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্ত কামরুল ইসলামকে আটকের জন্য পুলিশি অভিযান চলছে।”