সুদানে বাংলাদেশ দূতের বাসভবন-দূতাবাসে গোলাগুলি

সুদানে সামরিক ও আধা সামরিক বাহিনীর মধ্যেকার সশস্ত্র সংঘর্ষের মধ্যে দেশটির রাজধানী খার্তুমে স্থাপিত বাংলাদেশ দূতাবাসে গুলি আঘাত হেনেছিল। গোলাগুলিতে দূতাবাসটির কিছু ক্ষয়ক্ষতিও হয়েছে। এর আগে দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত (চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স) তারেক আহমেদের বাসাতেও গুলি লাগে। তার বাসভবনটিও খার্তুমেই। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং সুদানে বাংলাদেশ দূতাবাসের কর্মকর্তারা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

তারা জানিয়েছেন, গুলির আঘাতে দূতাবাস ও ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসভবন ক্ষতিগ্রস্ত হলেও হতাহতের কোনো ঘটনা ঘটেনি। চলমান পরিস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ কর্মকর্তারা সুদানের রাজধানী খার্তুম ত্যাগ করে ২৪০ কিলোমিটার দূরের মাদানী শহরে অবস্থান করছেন।

গত শনিবার (২২ এপ্রিল) মেশিনগান দিয়ে দূতাবাসে হামলা করা হলে জানালা ও দেয়ালে বড় গর্ত তৈরি হয়। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এসব ছবি ছড়িয়ে পড়ে। অন্যদিকে ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতের বাসাটি বিমানবন্দর ও সামরিক বাহিনীর এলাকার কাছাকাছি অবস্থিত, যেখানে সংঘর্ষের রেশ অনেক বেশি। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, চলমান পরিস্থিতিতে সুদানের রাজধানী খার্তুমে নিরাপত্তা পরিস্থিতি নাজুক বিবেচনায় ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূতসহ দূতাবাসের অন্য কর্মকর্তারা বর্তমানে মাদানী শহরে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে তারা সুদানে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনতে কাজ করে যাচ্ছেন।

সুদানে বাংলাদেশি নাগরিক আছেন প্রায় দেড় হাজার। লড়াই শুরু হওয়ার পর শনিবার বাংলাদেশিদের সুদান ভ্রমণ না করার পরামর্শ দিয়ে সতর্কতা জারি করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। পরে মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম জানিয়েছেন, দেশটিতে অবস্থানরত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে ফিরিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। খার্তুমে বাংলাদেশ দূতাবাস এরই মধ্যে এ সিদ্ধান্ত প্রচারও শুরু করেছে।

উল্লেখ্য, আফ্রিকার তৃতীয় বৃহত্তম দেশ সুদানে গত ১৫ এপ্রিল থেকে সেনাবাহিনী ও আরএসএফের মধ্যে লড়াই শুরু হলে এ পর্যন্ত চার শতাধিক মানুষের মৃত্যু হয়েছে। দেশটির আবাসিক এলাকাও পরিণত হয়েছে রণক্ষেত্রে। রাজধানী খার্তুমের লাখ লাখ মানুষ গৃহবন্দি হয়ে পড়েছেন। এর মধ্যে অবশ্য যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যস্ততায় দুপক্ষ সোমবার মধ্যরাত থেকে ৭২ ঘণ্টার যুদ্ধবিরতি পালন করছে।