ঢাকা , শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
মিশরের উদ্দেশ্যে এনসিপি নেতা সারজিস আলম  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করায় খুন হন ছাত্রদল নেতা সাম্য বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে শিলিগুঁড়ি করিডরে তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত আগামী ১৫ নভেম্বর বদলে যাচ্ছে পুলিশ ইউনিফর্ম! সরাসরি করাচি-চট্টগ্রাম শিপিং চালু করলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান’ বিএনপির সঙ্গে জোট নয়, একক নির্বাচনের চিন্তা এনসিপির ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি মনোনয়ন না পেয়ে ধানক্ষেতে ‘রিভিউ’ দেখালেন বিএনপি নেতা নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে দেশের মানুষ রাখাল রাজা শহীদ জিয়ার দলকেই বিজয়ী করবে: শিমুল বিশ্বাস

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০২:০০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫
  • ১০৪ বার পড়া হয়েছে

 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

 

 

 

 

সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল নিশ্চিত করেছে যে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের জন্য আইআরআই কমপক্ষে ১০ জন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পাঠাবে।

 

প্রতিনিধিদলের প্রধান ও আইআরআই বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সদস্য ক্রিস্টোফার জে. ফুসনার বলেন ‘আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একটি শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করব।’

 

তিনি বলেন, নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলের উপস্থিতি সহিংসতার আশঙ্কা হ্রাসে সহায়তা করবে।

 

প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন—সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির (সিএনএএস) ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো ও পরিচালক লিসা কার্টিস, আইআরআই-এর গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান, আইআরআই-এর রেসিডেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর স্টিভ সিমা এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যান।

 

প্রতিনিধিদলটি বর্তমানে নির্বাচনের পূর্ববর্তী পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন এবং দেশের সব প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

 

বৈঠকে তারা পূর্ববর্তী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচন সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পরিবেশের প্রশংসা করে ফুসনার বলেন, ‘সব দলই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। আগের নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এবার ইতিবাচক একটি পরিবেশ লক্ষ্য করছি, যা খুবই আশাব্যঞ্জক। আগের নির্বাচন ও এবারের নির্বাচনের পার্থক্য স্পষ্ট বোঝা যায়।’

 

প্রতিনিধি দলটি আরও উল্লেখ করে যে, নির্বাচনকে আরও স্বচ্ছ করতে নাগরিক সমাজ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী সংগঠনগুলোর পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। তারা নির্বাচনের সময় ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের ঝুঁকি নিয়েও কথা বলেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য এখন গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হুমকি। এটি পরিকল্পিতভাবে এবং বিপুল অর্থ ব্যয়ে ছড়ানো হয়, যা তাৎক্ষণিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সত্য প্রকাশ পেতে পেতে মানুষ ইতোমধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলে।’

 

ফুসনার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ভুয়া ছবি তৈরি ও জনমত প্রভাবিত করার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনে সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক আজীবনের অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী ২৭ বছরের নিচে এবং তাঁরা এবার প্রথমবার ভোট দেবে। আমরা চাই তারা সন্তুষ্ট থাকুক। আমরা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ভোট চাই।’

 

প্রধান উপদেষ্টা দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় জুলাই সনদকে এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সব রাজনৈতিক দল সংস্কারের প্রতি অঙ্গীকার দেখিয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের নির্বাচনের আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। অধিকাংশ দল সনদে স্বাক্ষর করেছে, বাকিরাও শিগগিরই তা করবে বলে আমরা আশাবাদী।’

 

আইআরআই প্রতিনিধিদল গত ১৫ মাসে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য বলেন, ‘আপনি পরিবর্তনের এই সময়ে অসাধারণ কাজ করছেন।’ আরেকজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আপনার করা সব কাজই সত্যিই প্রশংসনীয়।’

 

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের উদ্দেশ্যে এনসিপি নেতা সারজিস আলম 

ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে পর্যবেক্ষক পাঠাবে আইআরআই

আপডেট সময় ০২:০০:৩৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২২ অক্টোবর ২০২৫

 

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন।

 

 

 

 

সাক্ষাৎকালে প্রতিনিধিদল নিশ্চিত করেছে যে, আগামী ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় নির্বাচনের জন্য আইআরআই কমপক্ষে ১০ জন আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক পাঠাবে।

 

প্রতিনিধিদলের প্রধান ও আইআরআই বোর্ড অব ডিরেক্টরসের সদস্য ক্রিস্টোফার জে. ফুসনার বলেন ‘আমরা ফেব্রুয়ারির নির্বাচনে একটি শক্তিশালী পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম পরিচালনা করব।’

 

তিনি বলেন, নির্বাচনে আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক দলের উপস্থিতি সহিংসতার আশঙ্কা হ্রাসে সহায়তা করবে।

 

প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন—সেন্টার ফর এ নিউ আমেরিকান সিকিউরিটির (সিএনএএস) ইন্দো-প্যাসিফিক সিকিউরিটি প্রোগ্রামের সিনিয়র ফেলো ও পরিচালক লিসা কার্টিস, আইআরআই-এর গণতান্ত্রিক নির্বাচন ও রাজনৈতিক প্রক্রিয়া বিষয়ক টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞ জেসিকা কিগান, আইআরআই-এর রেসিডেন্ট প্রোগ্রাম ডিরেক্টর স্টিভ সিমা এবং ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) প্রোগ্রাম ডিরেক্টর জেমি স্পাইকারম্যান।

 

প্রতিনিধিদলটি বর্তমানে নির্বাচনের পূর্ববর্তী পরিবেশ মূল্যায়নের জন্য বাংলাদেশ সফরে রয়েছেন এবং দেশের সব প্রধান রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করার কথা রয়েছে।

 

বৈঠকে তারা পূর্ববর্তী নির্বাচন পর্যবেক্ষণের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন এবং প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে নির্বাচন সংস্কার বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তারা বর্তমান রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

 

জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে বিদ্যমান পরিবেশের প্রশংসা করে ফুসনার বলেন, ‘সব দলই নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। আগের নির্বাচনের অভিজ্ঞতার আলোকে আমরা এবার ইতিবাচক একটি পরিবেশ লক্ষ্য করছি, যা খুবই আশাব্যঞ্জক। আগের নির্বাচন ও এবারের নির্বাচনের পার্থক্য স্পষ্ট বোঝা যায়।’

 

প্রতিনিধি দলটি আরও উল্লেখ করে যে, নির্বাচনকে আরও স্বচ্ছ করতে নাগরিক সমাজ, বিশেষ করে শিক্ষার্থী সংগঠনগুলোর পর্যবেক্ষকদের অন্তর্ভুক্ত করা জরুরি। তারা নির্বাচনের সময় ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য প্রচারের ঝুঁকি নিয়েও কথা বলেন।

 

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ইউনূস বলেন, ‘ভুয়া বা বিভ্রান্তিকর তথ্য এখন গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় হুমকি। এটি পরিকল্পিতভাবে এবং বিপুল অর্থ ব্যয়ে ছড়ানো হয়, যা তাৎক্ষণিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে। সত্য প্রকাশ পেতে পেতে মানুষ ইতোমধ্যে প্রতিক্রিয়া দেখিয়ে ফেলে।’

 

ফুসনার কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ব্যবহার করে ভুয়া ছবি তৈরি ও জনমত প্রভাবিত করার বিষয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেন।

 

অধ্যাপক ইউনূস বলেন, বাংলাদেশ শান্তিপূর্ণ ও অন্তর্ভুক্তিমূলক নির্বাচন আয়োজনে সঠিক পথে এগিয়ে যাচ্ছে।

 

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের তরুণ প্রজন্মের জন্য এক আজীবনের অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। দেশের অর্ধেক জনগোষ্ঠী ২৭ বছরের নিচে এবং তাঁরা এবার প্রথমবার ভোট দেবে। আমরা চাই তারা সন্তুষ্ট থাকুক। আমরা শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর ভোট চাই।’

 

প্রধান উপদেষ্টা দেশের গণতান্ত্রিক যাত্রায় জুলাই সনদকে এক অনন্য মাইলফলক হিসেবে উল্লেখ করে বলেন, সব রাজনৈতিক দল সংস্কারের প্রতি অঙ্গীকার দেখিয়েছে।

 

তিনি বলেন, ‘এটি আমাদের নির্বাচনের আরও এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে গেছে। অধিকাংশ দল সনদে স্বাক্ষর করেছে, বাকিরাও শিগগিরই তা করবে বলে আমরা আশাবাদী।’

 

আইআরআই প্রতিনিধিদল গত ১৫ মাসে অধ্যাপক ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করেন। প্রতিনিধিদলের একজন সদস্য বলেন, ‘আপনি পরিবর্তনের এই সময়ে অসাধারণ কাজ করছেন।’ আরেকজন প্রতিনিধি বলেন, ‘আপনার করা সব কাজই সত্যিই প্রশংসনীয়।’

 

বৈঠকে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক লামিয়া মোরশেদ উপস্থিত ছিলেন।