লক্ষ্মীপুরের চন্দ্রগঞ্জ থানাধীন উত্তর জয়পুর ইউনিয়নের হানিফ মিয়াজীর হাট কেন্দ্রীয় ঈদগাহ জামে মসজিদে শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) জুমার নামাজের খুতবায় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে বিএনপি নেতাদের বিরুদ্ধে। ঘটনার একটি ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ভাইরাল হয়ে স্থানীয়র মধ্যে আলোচনা–সমালোচনার সৃষ্টি করেছে।
ভিডিও ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনা অনুযায়ী, মসজিদের খতিব মাওলানা মহি উদ্দিন হাসান ‘জবানের হেফাজত’ বিষয়ক বয়ান করছিলেন। ওই বক্তৃতায় কিছু আক্রোশজনক ইঙ্গিত বা তীব্র বক্তব্য থাকায় চন্দ্রগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম। ইউসুফ ভূইয়া ও থানা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মুকিত সোহেল বক্তৃতায় বাধা দেন। তাদের সঙ্গে কিছু অনুসারীও উপস্থিত ছিলেন। তবে খতিব সরাসরি কোনো ব্যক্তির নাম না নেয়ার দাবি করেন।
ভাইরাল ৩ মিনিট ২৪ সেকেন্ডের ভিডিওতে বিএনপি নেতারা খতিবকে মসজিদকে রাজনৈতিক মঞ্চে পরিণত না করার নীতিগত তাগাদা দেন; খতিব বলেন তিনি কোরআন-হাদিসের আলোকে অনুশাসনমূলক বক্তব্য দিচ্ছেন এবং কোনো জণস্বত্ত্বাকে ‘বেইমান’ আখ্যা দেননি। পরে অন্যান্য মুসল্লিরা পরিস্থিতি শান্ত করলে নামাজ পাড়ি সম্পন্ন হয়।
মসজিদ কমিটির সভাপতি আবদুল কাদের বলেন, “মসজিদের নিয়মিত খতিব দীর্ঘ বছর ধরে এখানে নামাজ পড়ান, এর আগে কখনো এমন অসুবিধা হয়নি। যদি খতিবের বক্তব্যে কিছু ভুল থাকে তা শালীন ভাষায় বলা যেত।” তিনি জানান মসজিদ কমিটি ও মুসুল্লিদের সঙ্গে সমন্বয়ে পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক করা হবে।
অভিযুক্ত যুবদল নেতা আবদুল মুকিত সোহেল বলেন, খতিবের কিছু বক্তব্যে বিএনপি ও দলের নেতা–কর্মীদের ইঙ্গিতে টেনে আনা হয়েছে—তাই প্রতিবাদ করা হয়েছিল; তবে তিনি দাবি করেন খতিব সরাসরি কোনো দলের নাম বলেননি। খতিব মাওলানা মহি উদ্দিন বলেন, যদি মসজিদ কমিটি বিষয়টি সযত্নে না রাখে তিনি আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।
বাংলাদেশ মসজিদ মিশন জেলা শাখার সেক্রেটারি মাওলানা মো. জসিম উদ্দিন এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে বলেন, মসজিদে ইসলামিক সাফ সীলসিলায় আলোচনা করা উচিত এবং ইমামদের উপর অনাকাঙ্ক্ষিত বিঘ্ন ঘটালে সমাজের প্রতিনিধি হিসেবে সংশ্লিষ্টদের হেদায়াতের চেষ্টা করা হবে; তাতে অবনতি হলে তাদের সামাজিকভাবে বয়কট করার পরামর্শও এসেছে।
ঘটনাস্থলে স্থানীয়রা বলেন বিষয়টি নিয়ে মসজিদ কমিটি ও এলাকায় নেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে বৈঠক করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।