ঢাকা–চট্টগ্রাম মহাসড়কের কুমিল্লা অংশকে কেন্দ্র করে আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। গত কয়েক মাসে বারবার ঝটিকা মিছিল করে তারা জনমনে আতঙ্ক ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, এসব মিছিলের পেছনে অর্থ জোগাচ্ছেন ভারতের আশ্রয়ে থাকা কিছু পলাতক আওয়ামী নেতা। জনপ্রতি দুই হাজার টাকা ভাড়ায় মহাসড়কে লোক নামানো হচ্ছে। মিছিলে অংশ নেওয়া অনেকেই টোকাই শ্রেণির।
নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা সভাপতি মিনহাদুল হাসান রাফি গ্রেপ্তার হলেও সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল পিয়াস এখনো ধরাছোঁয়ার বাইরে। গত ১৪ সেপ্টেম্বর তার নেতৃত্বে মহাসড়কে ঝটিকা মিছিল হয়। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করলেও মূল নেতৃত্ব অধরাই রয়ে গেছে। এসব মিছিলে পেছন থেকে সংগঠিত করছে কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক এবং সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা এহেতাসামুল হাসান রুমী। তাকে সহযোগিতা করছেন সাবেক মন্ত্রী মুজিবুল হক ও সাবেক এমপি বাহাউদ্দিন বাহার।
বুড়িচংয়ের আবেদপুর গ্রাম এখনো আওয়ামী নিয়ন্ত্রণে। এখান থেকেই পরিকল্পনা ও নাশকতার নির্দেশনা দেওয়া হয়। স্থানীয় ওসি আজিজুল হক জানান, এই গ্রামে পুলিশেরও প্রবেশ কঠিন হয়ে গেছে। মুজিবুর রহমান ও আবু আহমেদ নামের যুবলীগ ক্যাডাররা সেখানে রাজত্ব কায়েম করেছে।
২৮ সেপ্টেম্বর শেখ হাসিনার জন্মদিনও পালন করা হয় আবেদপুর গ্রামে। পুলিশ অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেপ্তার করে, তবে আয়োজক মুজিবুর রহমান অধরা থেকে যায়।
বিএনপি ও জামায়াত নেতারা বলছেন, অর্থের বিনিময়ে ভাড়া করা লোক দিয়ে মহাসড়কে মিছিল করছে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ। পুলিশ চাইলেই দমন করতে পারে, কিন্তু রাজনৈতিক দালালির কারণে তারা দ্রুত জামিন পেয়ে যায়। তাদের মতে, রুমী ও স্থানীয় অস্ত্রধারী ক্যাডারদের ইন্ধনেই মহাসড়কে অরাজকতা হচ্ছে।
নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা বলছেন, সীমান্তবর্তী কুমিল্লা অংশ এখন ঝুঁকিপূর্ণ। পালিয়ে যাওয়া আওয়ামী নেতারা ভারতের ত্রিপুরায় আশ্রয় নিয়ে দেশে ফেরার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এ কারণে সীমান্তে বিশেষ নজরদারির পাশাপাশি সরকারের কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
কুমিল্লার পুলিশ সুপার নাজির আহমেদ খান জানিয়েছেন, সীমান্ত বা মহাসড়কে যেকোনো ধরনের অরাজকতা কঠোর হাতে দমন করা হবে। শেখ হাসিনার জন্মদিন পালনে জড়িত কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে, বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত আছে।

ডেস্ক রিপোর্ট 




















