জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য এটিএম আজহারুল ইসলাম বলেছেন, “আমি কোনো অপরাধ করিনি, কিন্তু আমাকে জোর করে অপরাধী বানানো হয়েছিল।” শুক্রবার (৪ জুলাই) বিকেলে রংপুর জিলা স্কুল মাঠে বিভাগীয় জনসভায় প্রধান বক্তার বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তিনি বলেন, “আমি কারাগারে ফাঁসির জন্য প্রস্তুত ছিলাম। কিন্তু আল্লাহ আমাকে ফাঁসির মঞ্চ থেকে জনতার মঞ্চে নিয়ে এসেছেন। যাদের মাধ্যমে আমাকে ফাঁসি দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল, তারাই বলেছেন, জোর-জুলুম করে তাদের দিয়ে সাক্ষ্য নেওয়া হয়েছিল।”
আজহারুল ইসলাম বলেন, “আমার মুক্তির প্রথম সোপান ছিল আবু সাঈদের রক্ত, যার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে গণঅভ্যুত্থান শুরু হয়েছিল এবং যার পরিণতি ২০২৪ সালের ৫ আগস্টে গিয়ে শেষ হয়। ওই দিন না হলে হয়তো আমার জানাজা পড়া হতো। আমি তার হত্যাকারীদের বিচার দাবি করছি।”
তিনি অভিযোগ করেন, জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের ‘মিথ্যা মামলায়’ হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, “মাওলানা নিজামী, আলী আহসান মুজাহিদ, কামরুজ্জামান, কাদের মোল্লা, মীর কাশেমকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়েছে। কারাগারে বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে অধ্যাপক গোলাম আযম, আবুল কালাম ইউসুফ, আব্দুস সোবহান এবং দেলাওয়ার হোসেন সাঈদীর।”
আজহার বলেন, “যারা মানবতাবিরোধী অপরাধ করে, তারা কি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারে? আমি চ্যালেঞ্জ দিয়ে বলছি, এরকম কোনো দৃষ্টান্ত দুনিয়ায় নেই। অথচ বাংলাদেশে তা হয়েছে—এটা আজব এক বাংলাদেশ।”
তিনি দাবি করেন, “আমার মুক্তির মাধ্যমে শুধু আমি নয়, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ওপর আরোপিত ‘মিথ্যা অপবাদ’ থেকেও দলটি মুক্তি পেয়েছে। সর্বোচ্চ আদালতের রায় প্রমাণ করেছে, আমাদের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা আইনটি অবৈধ ছিল।”
দীর্ঘ ১৭ বছর পর রংপুরে আয়োজিত এই জনসভা বিকেল ৩টায় শুরু হওয়ার কথা থাকলেও জুমার নামাজের পর থেকেই শুরু হয় আনুষ্ঠানিকতা। রংপুর মহানগরী ও জেলা জামায়াত আয়োজিত এই জনসভায় দলের বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী ও সমর্থক উপস্থিত ছিলেন। জনসমাগম রংপুর জিলা স্কুল মাঠ ছাড়িয়ে আশপাশের সড়কে উপচে পড়ে। জনসভা থেকে রংপুর বিভাগের ৩৩টি আসনের জন্য জামায়াতের সম্ভাব্য প্রার্থীদের নামও প্রকাশ করা হয়।