এবার নিউইয়র্কের নবনির্বাচিত মুসলিম মেয়র জোহরান মামদানির নির্বাচনের পর ইসরায়েলি সরকারি মন্ত্রীরা তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। তারা শহরের ইহুদি সম্প্রদায়কে ইসরায়েলে অভিবাসনের আহ্বানও জানিয়েছেন। মঙ্গলবার নির্বাচনে জয়ী হয়ে ইতিহাস সৃষ্টি করেছেন মামদানি। তিনি নিউইয়র্কের প্রথম মুসলিম ও দক্ষিণ এশীয় বংশোদ্ভূত মেয়র হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। ইসরায়েলের ডায়াসপোরা বিষয়ক মন্ত্রী অমিখাই চিকলি যুক্তরাষ্ট্রের সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম এক্সে বলেন, “বিশ্বের স্বাধীনতার প্রতীক হিসেবে পরিচিত এই শহর তার চাবি হামাস সমর্থকদের হাতে তুলে দিয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, মামদানির জয় নিউইয়র্কের জন্য “এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়” এবং শহরটি যা দীর্ঘদিন ধরে বিশ্বের সবচেয়ে বড় ইহুদি সম্প্রদায়ের আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত, তা এখন নতুন পরিস্থিতির মুখোমুখি। চিকলি নিউইয়র্কের ইহুদি সম্প্রদায়কে আহ্বান জানান, তারা ইসরায়েলের ভূমিতে তাদের নতুন ঠিকানা বিবেচনা করুন। ইসরায়েলের ন্যাশনাল সিকিউরিটি মন্ত্রী ইতামার বেন-গভির মামদানির নির্বাচনের বিষয়টি “সাধারণ বুদ্ধির ওপর ইহুদি বিদ্বেষের জয়” হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তিনি নবনির্বাচিত মেয়রকে “হামাস সমর্থক, ইসরায়েলবিদ্বেষী এবং স্বীকারোক্ত ইহুদি বিদ্বেষী” হিসেবে উল্লেখ করেছেন।
ইসরায়েলের জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত ড্যানি ড্যাননও মামদানিকে কড়া সমালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, “মামদানির উস্কানিমূলক মন্তব্য আমাদের থামাতে পারবে না।” ড্যানন নিউইয়র্কের ইহুদি সম্প্রদায়ের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন। স্থানীয় 103 FM রেডিওকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, মামদানির নির্বাচনের ফলে ইহুদি সম্প্রদায়ের নিরাপত্তা অনুভূতিতে প্রভাব পড়তে পারে, কারণ মেয়র হিসেবে তিনি সরাসরি পুলিশ বাহিনী নিয়ন্ত্রণ করবেন।
নির্বাচনের আগে মামদানি ঘোষণা করেছিলেন, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের নির্দেশে যদি নেতানিয়াহু নিউইয়র্কে আসেন, তাহলে পুলিশ তাকে গ্রেফতার করবে। তবে তিনি বারবার নির্বাচনী প্রচারণার সময় ইহুদি সম্প্রদায়ের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন। মামদানি বলেন, “এই শহরে বা দেশে ইহুদি বিদ্বেষের কোনো স্থান নেই। আমরা সবসময় ইহুদি সম্প্রদায়ের পাশে থাকব।”
মামদানির জয় তিনজন প্রার্থীর মধ্যে ৯১% ভোট গণনার পর ৫০%-এর বেশি ভোটে নিশ্চিত হয়। তার সমর্থকরা বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষ, যার মধ্যে অনেকেই নেতানিয়াহু সরকারের নীতির বিরোধী, বিশেষত ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে গাজায় সংঘটিত হামলার সময়। উল্লেখ্য, গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ৬৯,০০০-এর বেশি মানুষ নিহত ও ১,৭০,০০০-এর বেশি মানুষ আহত হয়েছেন। হামলায় নিহতদের মধ্যে অধিকাংশই নারী ও শিশু। এই ঘটনায় আন্তর্জাতিকভাবে ব্যাপক সমালোচনা দেখা গেছে।

ডেস্ক রিপোর্ট 

























