আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নারায়ণগঞ্জ-৩ (সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জ) আসনে বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে সরব প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। দীর্ঘদিনের বিএনপি দুর্গখ্যাত এ আসনে প্রায় এক বছর ধরে সম্ভাব্য প্রার্থীরা মাঠে সক্রিয় রয়েছেন। তারা নিয়মিত হাট-বাজার, গ্রাম-গঞ্জ চষে বেড়াচ্ছেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।
মনোনয়নপ্রত্যাশীদের মধ্যে আলোচনায় রয়েছেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য ও সোনারগাঁ উপজেলা সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী মো. রেজাউল করিম, স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক কেন্দ্রীয় সহসভাপতি ওয়াহিদ বিন ইমতিয়াজ বকুল, সাবেক সংসদ সদস্য মুহাম্মদ গিয়াসউদ্দিন, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক ওয়ালিউর রহমান আপেল, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আল-মুজাহিদ মল্লিক। পাশাপাশি মাঠে রয়েছেন জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য প্রিন্সিপাল ড. ইকবাল হোসাইন ভূঁইয়া এবং জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) যুব সংগঠন জাতীয় যুবশক্তির নেতা তুহিন মাহমুদ।
তৃণমূল বিএনপি নেতাকর্মীদের মতে, মনোনয়ন যুদ্ধে এক ধাপ এগিয়ে আছেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য আজহারুল ইসলাম মান্নান। তারা বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার থেকে শুরু করে আওয়ামী লীগ সরকারের সময় পর্যন্ত আন্দোলনমুখী রাজনীতির প্রতিটি ধাপে মান্নান ছিলেন সামনের সারিতে। এক-এগারোর সময় থেকে এখন পর্যন্ত তিনি ও তার ছেলে ৮০টির বেশি মামলার আসামি। বহুবার কারাবন্দী হলেও আপস করেননি। তৃণমূল কর্মীদের পাশে থেকে তাদের চিকিৎসা ও সহায়তা দিয়েছেন, যা তাকে কর্মীদের কাছে আরও জনপ্রিয় করেছে।
আজহারুল ইসলাম মান্নান বলেন, “রাজনীতির শুরু থেকেই আমি বিএনপির কর্মী। দলের দুঃসময়ে কর্মীদের পাশে থেকেছি। মনোনয়ন পেলে সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জকে আধুনিক ও কর্মসংস্থানের শহর হিসেবে গড়ে তুলব।”
অন্য প্রার্থীদের মধ্যে রেজাউল করিম বলেন, “সোনারগাঁ ও সিদ্ধিরগঞ্জের মানুষের সুখ-দুঃখে পাশে ছিলাম, থাকব।”
বকুল বলেন, “ধানের শীষের বিজয় নিশ্চিত করব।”
জামায়াতের ড. ইকবাল বলেন, “মানুষ দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে পরিবর্তন আনবে।”
এনসিপির তুহিন মাহমুদ বলেন, “তরুণ নেতৃত্বই এখন মানুষের প্রত্যাশা।”
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে বিএনপির ঐতিহাসিক শক্ত ঘাঁটি থাকলেও সাংগঠনিক ঐক্য ও ত্যাগের দিক থেকে আজহারুল ইসলাম মান্নানই এগিয়ে রয়েছেন।
নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা যায়, এ আসনে ভোটার সংখ্যা ৫ লাখ ৮৩ হাজার ৯৫২ জন। এর মধ্যে পুরুষ ২ লাখ ৯৬ হাজার ৭৪৬ জন এবং নারী ২ লাখ ৮৭ হাজার ২০৪ জন। ১৯৭৩ সালের পর এ আসনে বিএনপি চারবার, জাতীয় পার্টি চারবার এবং আওয়ামী লীগ দুইবার জয়ী হয়েছে।
শেষ পর্যন্ত কাকে মনোনয়ন দেয় বিএনপি—তা নিয়েই এখন তাকিয়ে আছে সোনারগাঁ-সিদ্ধিরগঞ্জের ভোটাররা।

ডেস্ক রিপোর্ট 




















