গ্রিস থেকে গাজা উপকূলের উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেছে আন্তর্জাতিক একটি সহায়তা বহর। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) আয়োজকেরা জানিয়েছেন, ইসরায়েলের হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করে বহরটি পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় জলসীমায় প্রবেশ করেছে।
আমিরাতভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ন্যাশনাল জানিয়েছে, ‘গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা’ নামের এই উদ্যোগে প্রায় ৫০টি বেসামরিক নৌযান অংশ নিয়েছে। এর লক্ষ্য হলো, গাজার ওপর ইসরায়েলের নৌ অবরোধ ভেঙে মানবিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া। তবে ইসরায়েল স্পষ্ট জানিয়েছে, এই বহরকে কোনোভাবেই গাজায় প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না। দেশটি মনে করে, এই উদ্যোগ শেষ পর্যন্ত হামাসকেই সহায়তা করবে।
নৌবহরে রয়েছেন আইনজীবী, সংসদ সদস্য, মানবাধিকারকর্মীসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিক। সুইডিশ জলবায়ু আন্দোলনকর্মী গ্রেটা থুনবার্গও এতে যোগ দিয়েছেন। গত সপ্তাহে নৌবহরের কিছু জাহাজের ওপর ড্রোন হামলার অভিযোগ ওঠে। যদিও এতে কেউ হতাহত হননি, তবে ঘটনাটি নিয়ে ইউরোপজুড়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।
এই পরিস্থিতিতে ইতালি ও স্পেন বহরে থাকা নিজেদের নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পদক্ষেপ নিয়েছে। ইতালির প্রতিরক্ষামন্ত্রী গুইদো ক্রোসেত্তো ঘটনাটির নিন্দা জানান এবং উল্লেখ করেন, প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনির সঙ্গে আলোচনার পর সম্ভাব্য উদ্ধার অভিযানের জন্য ওই এলাকায় ফ্রিগেট-ফাসান নামে একটি জাহাজ মোতায়েন করা হয়েছে। এদিকে স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজও এই বহরকে সহায়তা কিংবা উদ্ধার কার্যক্রম পরিচালনার জন্য একটি টহল জাহাজ পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন।
গ্রিস জানিয়েছে, তারা তাদের জলসীমা পর্যন্ত এই বহরের নিরাপদ যাত্রা নিশ্চিত করবে। তবে শুক্রবার থেকে নৌবহরটি আন্তর্জাতিক জলসীমায় প্রবেশ করেছে এবং আয়োজকদের পরিকল্পনা অনুযায়ী, আগামী সপ্তাহের শুরুতেই এটি গাজা উপকূলে পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।
উল্লেখ্য, গত ৩১ আগস্ট বার্সেলোনা থেকে যাত্রা শুরুর পর থেকে এই বহরের ওপর একাধিকবার হামলার চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছেন নাবিকেরা। তাঁরা জানান, গ্রিস উপকূলে একাধিক বিস্ফোরণ ও ড্রোন হামলার ঘটনাও ঘটেছে।
গাজার চলমান যুদ্ধ নিয়ে ইসরায়েল আন্তর্জাতিক চাপের মুখে রয়েছে। জাতিসংঘের একটি সংস্থা সম্প্রতি গাজার কিছু অংশে দুর্ভিক্ষ ঘোষণা করেছে। এ মাসেই জাতিসংঘের তদন্তকারীরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে গণহত্যা চালানোর অভিযোগও তুলেছেন এবং ইসরায়েলি নেতাদের বিরুদ্ধে উসকানির দায় উল্লেখ করেছেন।
যুদ্ধবিধ্বস্ত গাজায় মানবিক বিপর্যয় দিন দিন গভীরতর হওয়ায় এই বহরকে কেন্দ্র করে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন উত্তেজনা তৈরি হয়েছে।