ইরানে চারটি নতুন পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে ২৫ বিলিয়ন ডলারের চুক্তি করেছে রাশিয়া। শুক্রবার (২৬ সেপ্টেম্বর) ইরানের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, হরমোজগানের সিরিক অঞ্চলে এ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ করবে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংস্থা রোসাটম। ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ খবর জানিয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন জানায়, ইরান হরমোজ কোম্পানি ও রোসাটমের মধ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রের উৎপাদন ক্ষমতা হবে ১ হাজার ২৫৫ মেগাওয়াট। তবে প্রকল্প বাস্তবায়নের সময়সীমা নিয়ে কোনও তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।
বর্তমানে ইরানের কেবল একটি পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু রয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলীয় বুশেহরে অবস্থিত ওই কেন্দ্রটির উৎপাদন ক্ষমতা এক হাজার মেগাওয়াট, যা দেশের জ্বালানি চাহিদার তুলনায় সামান্য অংশ পূরণ করে।
এ চুক্তির খবর এমন সময় এলো যখন শনিবারের মধ্যে ইরানের বিরুদ্ধে জাতিসংঘের কঠোর নিষেধাজ্ঞা ফের কার্যকর হওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইউরোপীয় দেশগুলো—ব্রিটেন, ফ্রান্স ও জার্মানি গত মাসে অভিযোগ করে যে, ইরান ২০১৫ সালের পরমাণু চুক্তির অঙ্গীকার রক্ষা করছে না। এর ভিত্তিতেই তারা ‘স্ন্যাপব্যাক’ নিষেধাজ্ঞা চালুর উদ্যোগ নেয়।
জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের বৈঠকে শুক্রবার চীন ও রাশিয়া ছয় মাসের অতিরিক্ত সময় দিয়ে আলোচনার প্রস্তাব তুললেও তা গৃহীত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষীণ। পশ্চিমা দেশগুলো দীর্ঘদিন ধরে ইরানকে গোপনে পারমাণবিক বোমা তৈরির চেষ্টা করার অভিযোগ করে আসছে। তবে তেহরান সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলছে, তাদের কর্মসূচি একান্তই শান্তিপূর্ণ এবং বেসামরিক ব্যবহারের জন্য।
২০১৮ সালে যুক্তরাষ্ট্র একতরফাভাবে পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে যাওয়ার পর ইরান ধীরে ধীরে চুক্তির শর্ত মানা থেকে সরে আসে। যুক্তরাষ্ট্র ও ইরানের মধ্যে নতুন চুক্তির আলোচনাও চলছিল, তবে জুনে ইসরায়েলের নজিরবিহীন হামলায় তা ভেস্তে যায়। ওই হামলা থেকে শুরু হওয়া ১২ দিনের যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রও সরাসরি জড়িয়ে পড়ে।
উল্লেখ্য, ইরান ও রাশিয়ার পারমাণবিক সহযোগিতা নতুন নয়। ১৯৯৩ সালে দুই দেশ প্রথম একটি পারমাণবিক চুক্তি করে, যার মাধ্যমে জার্মানি হাত গুটিয়ে নেওয়ার পর বুশেহর বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করে রাশিয়া।