প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাক্ষাৎকার নেওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন সাংবাদিক খালেদ মহিউদ্দিন। এই ঘোষণাকে কেন্দ্র করে আলোচনা-সমালোচনার ঝড় উঠেছে। বিষয়টি নিয়ে লেখক, অ্যাক্টিভিস্ট ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিনাকী ভট্টাচার্য বুধবার এক ফেসবুক পোস্টে এর রাজনৈতিক তাৎপর্য বিশ্লেষণ করেছেন।
পিনাকীর ভাষায়,
খালেদ মহিউদ্দিনের “আমি হাসিনার সাক্ষাৎকার নিতে চাই” কথাটা আসলে সাংবাদিকতার চেয়ে অনেক বেশি ‘পলিটিক্যাল থিয়েটার’। তিনি জানেন, সাক্ষাৎকারটি এখনই হবে না, কিন্তু এই চাওয়ার ঘোষণার মধ্য দিয়েই তিনি একাধিক কৌশলগত লাভ তুলছেন।
পিনাকী ভট্টাচার্যের বিশ্লেষণ অনুযায়ী, খালেদ মহিউদ্দিনের এই ঘোষণার পেছনে আটটি মূল উদ্দেশ্য রয়েছে—
১️⃣ “আমি নিরপেক্ষ” ব্র্যান্ডিং:
হাসিনার পতনের পর সাংবাদিক সমাজের একাংশকে “শত্রুপক্ষ” হিসেবে দেখা হচ্ছে। তাই এই ঘোষণা দিয়ে খালেদ নিজেকে এমন এক সাংবাদিক হিসেবে উপস্থাপন করছেন, যিনি পক্ষপাতহীন ও পেশাদার।
২️⃣ Narrative Control:
হাসিনা এখন এক “mythical exile figure” — নীরবতা যত বাড়ছে, রহস্যও তত গভীর হচ্ছে। যিনি প্রথম তাঁকে ক্যামেরার সামনে আনবেন, তিনিই এই গল্পের দিকনির্দেশনা নিয়ন্ত্রণ করবেন।
৩️⃣ হাসিনা এখনো নিউজ মার্কেটের মূল্যবান কারেন্সি:
হাসিনাকে নিয়ে যেকোনো আলোচনা মানেই ক্লিক, রিচ ও বিতর্ক। এই ঘোষণা তাই একপ্রকার সফট প্রোভোকেশন।
৪️⃣ রাজনৈতিক সেন্সিং ও তথ্য সংগ্রহ:
এই ঘোষণার মাধ্যমে তিনি হয়তো হাসিনার শিবিরের প্রতি একধরনের সিগন্যাল দিচ্ছেন—
“আমি কথা বলতে প্রস্তুত, যদি তোমরা আমাকে বেছে নাও।”
৫️⃣ বুদ্ধিবৃত্তিক চাল:
হাসিনাকে জনমনে দানব নয়, আলোচনার উপাদান হিসেবে তুলে ধরে “civil discourse” পুনঃপ্রতিষ্ঠার চেষ্টা—
“শত্রুকেও প্রশ্ন করতে না পারলে গণতন্ত্র কোথায়?”
৬️⃣ মিডিয়া কৌশল:
সাক্ষাৎকার না হলেও এই ঘোষণা নিজেই একটি প্রতীকী খবর—
বললেই আলোড়ন, না পেলেও ক্ষতি নেই, পেলে ইতিহাস।
৭️⃣ ব্যক্তিগত স্বীকৃতি ও ‘Legacy Interview’ এর আশা:
যেমন ক্রিস্টিয়ান আমানপুরের গাদ্দাফি সাক্ষাৎকার বা ডেভিড ফ্রস্টের নিক্সন ইন্টারভিউ—
খালেদ হয়তো ভাবছেন, ইতিহাসে হাসিনার প্রথম পতন-পরবর্তী সাক্ষাৎকারটি তাঁর হাতেই হবে।
৮️⃣ আত্মপক্ষ সমর্থন:
নিজেকে “Hasina-era beneficiary” ভাবার সমালোচকদের কাছে বার্তা দিচ্ছেন—
“আমি কারও দালাল নই, আমি সাংবাদিক।”
শেষে পিনাকী লিখেছেন,
“খালেদ মহিউদ্দিন হাসিনাকে আনবে — আজ না হোক কাল আনবে। এটা তার ব্যক্তিগত অর্জনের প্রশ্ন। সে সাহস সঞ্চয় করছে। খালেদ সেই মুক্তামালার একটি রত্ন, যার মালায় গাঁথা আছে আগুন, আওয়ামী মিছিল, ক্যু প্রচেষ্টা, গৃহযুদ্ধের হুমকি ও ইনক্লুসিভ নির্বাচনের চাপ—সব মিলিয়ে আবারো বাংলাদেশে ফিরিয়ে আনতে চাওয়া হচ্ছে ভারতীয় আধিপত্যবাদ।”
🔹 উৎস: পিনাকী ভট্টাচার্যের ফেসবুক পোস্ট, ২৯ অক্টোবর ২০২৫।

ডেস্ক রিপোর্ট 






















