ঢাকা , শনিবার, ০৮ নভেম্বর ২০২৫, ২৪ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
মিশরের উদ্দেশ্যে এনসিপি নেতা সারজিস আলম  সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে গাঁজা বিক্রি করতে নিষেধ করায় খুন হন ছাত্রদল নেতা সাম্য বাংলাদেশ সীমান্তের পাশে শিলিগুঁড়ি করিডরে তিন সেনা ঘাঁটি স্থাপন করেছে ভারত আগামী ১৫ নভেম্বর বদলে যাচ্ছে পুলিশ ইউনিফর্ম! সরাসরি করাচি-চট্টগ্রাম শিপিং চালু করলো পাকিস্তান ও বাংলাদেশ ‘ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই দেশে ফিরবেন তারেক রহমান’ বিএনপির সঙ্গে জোট নয়, একক নির্বাচনের চিন্তা এনসিপির ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধে তুরস্কের গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি মনোনয়ন না পেয়ে ধানক্ষেতে ‘রিভিউ’ দেখালেন বিএনপি নেতা নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে দেশের মানুষ রাখাল রাজা শহীদ জিয়ার দলকেই বিজয়ী করবে: শিমুল বিশ্বাস

আলাদা গুম কমিশন নয়, মানবাধিকার কমিশনই দেখবে গুম-সংক্রান্ত বিষয়: আসিফ নজরুল

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৯:১০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫
  • ১৩৮ বার পড়া হয়েছে

 

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, আলাদা করে গুম কমিশন গঠন করা হবে না; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনই সেই দায়িত্ব পালন করবে। তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে সেই বিধান রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগের মানবাধিকার কমিশন ছিল দন্তহীন—সেখানে গুরুতর কিছু সমস্যা ছিল। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ছিল, এখতিয়ারে ঘাটতি ছিল, এবং কমিশনের নেতৃত্বেও অনেকে ছিলেন যারা আইনগত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেননি বা করেননি।”

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনকে ‘ক্ষমতাসম্পন্ন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কমিশন যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারে, সেভাবেই কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

নতুন আইনে মানবাধিকারের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করে বলা হয়েছে—বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার ছাড়াও দেশটি যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি অনুসমর্থন করেছে বা প্রথাগত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে যে অধিকার স্বীকৃত, সেগুলিও কমিশনের এখতিয়ারে থাকবে।

কমিশন গঠিত হবে একজন চেয়ারম্যান এবং চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে। চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের জন্য আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, “আগের কমিশনের একটা সীমাবদ্ধতা ছিল—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কিছু ক্ষেত্রে তাদের তদন্তের এখতিয়ার ছিল না। এবার রাষ্ট্র বা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কমিশন তদন্ত করতে পারবে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে—এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।”

তিনি আরও বলেন, “গুম প্রতিরোধ ও গুমের শিকারদের সুরক্ষা আইনের মূল দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনকেই দেওয়া হবে। আলাদা করে গুম কমিশন করা হবে না।”

আইন উপদেষ্টা জানান, কমিশনকে হেফাজতে মৃত্যু বা অন্যান্য মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক আইনের ঘটনাগুলিও তদন্তের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনের আদেশ বাধ্যতামূলকভাবে প্রতিপালনের বিধান রাখা হয়েছে।

সর্বশেষে তিনি জানান, গুমবিরোধী আইন খসড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে আগামী সপ্তাহেই তা অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

মিশরের উদ্দেশ্যে এনসিপি নেতা সারজিস আলম 

আলাদা গুম কমিশন নয়, মানবাধিকার কমিশনই দেখবে গুম-সংক্রান্ত বিষয়: আসিফ নজরুল

আপডেট সময় ০৯:১০:২২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৫

 

অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল বলেছেন, আলাদা করে গুম কমিশন গঠন করা হবে না; জাতীয় মানবাধিকার কমিশনই সেই দায়িত্ব পালন করবে। তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে সেই বিধান রাখা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন অধ্যাদেশ ২০২৫’ চূড়ান্ত অনুমোদন দেয় উপদেষ্টা পরিষদ। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। পরে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে অনুষ্ঠিত ব্রিফিংয়ে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল এবং প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম বিস্তারিত তুলে ধরেন।

আইন উপদেষ্টা বলেন, “আমাদের আগের মানবাধিকার কমিশন ছিল দন্তহীন—সেখানে গুরুতর কিছু সমস্যা ছিল। নিয়োগ প্রক্রিয়ায় ত্রুটি ছিল, এখতিয়ারে ঘাটতি ছিল, এবং কমিশনের নেতৃত্বেও অনেকে ছিলেন যারা আইনগত ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারেননি বা করেননি।”

তিনি জানান, নতুন অধ্যাদেশে মানবাধিকার কমিশনকে ‘ক্ষমতাসম্পন্ন ও কার্যকর প্রতিষ্ঠান’ হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কমিশন যেন মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রতিরোধ ও প্রতিকারে বাস্তব ভূমিকা রাখতে পারে, সেভাবেই কাঠামো তৈরি করা হয়েছে।

নতুন আইনে মানবাধিকারের সংজ্ঞা সম্প্রসারিত করে বলা হয়েছে—বাংলাদেশের সংবিধানে বর্ণিত মৌলিক অধিকার ছাড়াও দেশটি যে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার চুক্তি অনুসমর্থন করেছে বা প্রথাগত আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইনে যে অধিকার স্বীকৃত, সেগুলিও কমিশনের এখতিয়ারে থাকবে।

কমিশন গঠিত হবে একজন চেয়ারম্যান এবং চারজন সার্বক্ষণিক সদস্য নিয়ে। চেয়ারম্যান ও কমিশনার নিয়োগের জন্য আপিল বিভাগের একজন বিচারকের নেতৃত্বে সাত সদস্যের বাছাই কমিটি গঠনের বিধান রাখা হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, “আগের কমিশনের একটা সীমাবদ্ধতা ছিল—আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ কিছু ক্ষেত্রে তাদের তদন্তের এখতিয়ার ছিল না। এবার রাষ্ট্র বা সরকারের পৃষ্ঠপোষকতায় সংঘটিত সব ধরনের মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনায় কমিশন তদন্ত করতে পারবে ও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবে—এটা একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোজন।”

তিনি আরও বলেন, “গুম প্রতিরোধ ও গুমের শিকারদের সুরক্ষা আইনের মূল দায়িত্ব মানবাধিকার কমিশনকেই দেওয়া হবে। আলাদা করে গুম কমিশন করা হবে না।”

আইন উপদেষ্টা জানান, কমিশনকে হেফাজতে মৃত্যু বা অন্যান্য মানবাধিকার সংরক্ষণমূলক আইনের ঘটনাগুলিও তদন্তের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি কমিশনের আদেশ বাধ্যতামূলকভাবে প্রতিপালনের বিধান রাখা হয়েছে।

সর্বশেষে তিনি জানান, গুমবিরোধী আইন খসড়া এখনো চূড়ান্ত হয়নি, তবে আগামী সপ্তাহেই তা অনুমোদনের সম্ভাবনা রয়েছে।