দীর্ঘ দেড় দশক পর রংপুরে বিভাগীয় জনসভা করেছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী। শুক্রবার (৪ জুলাই) রংপুর জিলা স্কুলমাঠে অনুষ্ঠিত এ জনসভা ঘিরে সকাল থেকেই জমতে থাকে নেতাকর্মীদের ঢল।
‘জুলাই হত্যার বিচার’, ‘রাজনৈতিক সংস্কার’, ‘নির্বাচনে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’, ‘তিস্তা মহাপরিকল্পনা’ এবং ‘মানবিক বাংলাদেশ গঠনের অঙ্গীকার’- এই পাঁচটি মূল দাবি সামনে রেখে আয়োজিত হয় জনসভাটি।
সমাবেশে বক্তব্য রাখেন জামায়াতের আমির ডা. শফিকুর রহমান, সদ্য কারামুক্ত এটিএম আজহারুল ইসলাম, নায়েবে আমির অধ্যাপক মুজিবুর রহমান, সেক্রেটারি জেনারেল মিয়া গোলাম পরওয়ার এবং আরও কয়েকজন শীর্ষ নেতা।
জমায়াত নেতাদের বক্তব্যের আগেই মাঠজুড়ে তৈরি হয় উৎসবমুখর পরিবেশ। আট জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে মাইক্রোবাস, ট্রাক, অটোরিকশা, বাইসাইকেল এমনকি পায়ে হেঁটে এসেছেন হাজারো নেতাকর্মী ও সমর্থক।
গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর, নীলফামারী, পঞ্চগড়, লালমনিরহাট এবং রংপুর জেলার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে সংগঠিতভাবে এসেছেন অংশগ্রহণকারীরা।
একজন প্রবীণ কর্মী আবুল মো. রোকন উদ্দিন বলেন, “অনেক নির্যাতনের পরও দলের প্রতি ভালোবাসা হারাইনি। নেতাদের সামনে থেকে দেখতেই কষ্ট করে চলে এসেছি।”
ছাত্রশিবিরের এক সদস্য আসাদুল্লাহ আল গালিব বলেন, “আমার বাবার মুখে এটিএম আজহারুল ইসলামের কথা শুনেছি। এবার তাকে সামনে থেকে দেখতে পেরে স্বপ্নপূরণ হয়েছে।”
সমাবেশ ঘিরে রংপুর মহানগর পুলিশ চার স্তরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। পুলিশ কমিশনার মজিদ আলী জানান, গোয়েন্দা নজরদারি ও টহলও জোরদার করা হয়েছে।
জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, দুই লক্ষাধিক মানুষের উপস্থিতি নিশ্চিত করাই তাদের লক্ষ্য ছিল। এরই ধারাবাহিকতায় বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে শহরজুড়ে প্রচারণা চালানো হয়—তোরণ নির্মাণ, পোস্টার, ব্যানার লাগানো, মাইকিং, লিফলেট বিতরণ এবং মোটরসাইকেল র্যালির মাধ্যমে।
সমাবেশ শেষে নেতারা রাজনৈতিক সংস্কার ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের ওপর জোর দেন, পাশাপাশি মানবিক বাংলাদেশ গড়ার আহ্বান জানান।