ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তি এবং জাতীয় নিরাপত্তার হুমকির অভিযোগে তিন ইসরাইলি নাগরিককে আটক করেছে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনী। গোয়েন্দা সংস্থা শিন বেত-এর সহায়তায় গত ১৪ ও ১৫ জুনের মাঝামাঝি সময়ে এই তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়। এরপর বৃহস্পতিবার (সাম্প্রতিক) তাদের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠন করা হয়েছে।
আটকদের মধ্যে দুজন টাইবেরিয়াস শহরের এবং একজন জর্ডান উপত্যকার মোসাব হামরা বসতির বাসিন্দা। অভিযোগপত্রে বলা হয়, তারা গোপন টেলিগ্রাম চ্যানেলের মাধ্যমে ইরানি এজেন্টদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন, যা শুরু হয়েছিল চলতি বছরের মে মাস থেকে।
ইরানি এজেন্টরা নিজেদের পরিচয় দিত “বামপন্থী” হিসেবে এবং ইসরাইলি নাগরিকদের নানা আর্থিক প্রলোভন দিয়ে নিয়োগ করতেন। এই চক্র ক্রিপ্টোকারেন্সির মাধ্যমে অর্থ লেনদেন করত। তদন্তে উঠে আসে, অভিযুক্তরা তেল আবিব, হাইফা ও মেদানিয়া এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জনবহুল স্থাপনার বিস্তারিত তথ্য পাঠিয়েছেন, যার মধ্যে ছিল নিরাপত্তা রক্ষীদের অবস্থান, সিসিটিভি ক্যামেরার প্লেসমেন্ট ও লাইভ লোকেশন।
অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, এক অভিযুক্তকে বিদেশে সামরিক প্রশিক্ষণের লোভ দেখিয়ে পরবর্তী হত্যাকাণ্ডে অংশ নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হয়। যদিও সে তাতে পুরোপুরি সাড়া দেয়নি, তবে অন্য অ্যাসাইনমেন্টে সক্রিয় ছিল।
সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য হলো—ইরানে ইসরাইলি হামলার কয়েক ঘণ্টা আগেই ‘হ্যাপ গ্রুপ’ নামের একটি প্ল্যাটফর্ম থেকে ইরানিদের সতর্কবার্তা পাঠায় এক অভিযুক্ত। পরে হামলা শুরু হলে সে দুঃখ প্রকাশ করে পুনরায় যোগাযোগ করে এবং নির্দেশনা পায় গ্রেনেড কেনা ও গাড়িতে আগুন ধরানোর। যদিও এসব শেষ পর্যন্ত বাস্তবায়িত হয়নি।
পরবর্তী সময়ে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয় ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার ভিডিও ধারণ করে পাঠানোর জন্য, প্রতিটি ভিডিওর জন্য অর্থ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ইরানের হয়ে গুপ্তচরবৃত্তির অভিযোগ ইসরাইলে নতুন নয়। আগেও একই ধরনের মামলায় একাধিক ইসরাইলি নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছেন। অপরদিকে, ইরানেও ইসরাইলি গোয়েন্দাদের ব্যাপক তৎপরতা রয়েছে, বিশেষ করে ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’-এর সময় এই কার্যক্রম আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে।