বিতর্কিত ও আলোচিত কনটেন্ট ক্রিয়েটর আশরাফুল আলম, যিনি হিরো আলম নামেই পরিচিত, আবারও সংসদ সদস্য (এমপি) পদে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। তবে এবার নিজ জেলা বগুড়া নয়—তিনি লড়বেন রাজধানীর ঢাকা-১৭ আসনে, যেখানে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে রয়েছেন বাংলাদেশ জাতীয় পার্টি-বিজেপির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ।
হিরো আলম জানিয়েছেন, এবারও তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেই ভোটে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তবে একাধিক রাজনৈতিক দল তার সঙ্গে যোগাযোগ করছে বলেও দাবি করেছেন তিনি। তার ভাষায়, “অনেক দলের প্রধানের সঙ্গে কথা হচ্ছে। এখনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিইনি। যদি ব্যাটে-বলে মিলে যায়, কোনো দলে যোগ দিতে পারি; নইলে স্বতন্ত্রভাবেই লড়ব।”
নিজের প্রার্থিতা নিয়ে তিনি বলেন, “আমার কাছে নির্বাচন মানে শুধু জয় নয়—এটা প্রতিবাদের একটা মাধ্যম। আমি আগে যেমন প্রতিবাদ করেছি, এবারও করব। দেশে সুষ্ঠু নির্বাচন হোক—এটাই আমার প্রত্যাশা। আমি ১০০ ভোট পেলেও সমস্যা নেই, চাই মানুষ যেন উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দিতে পারে।”
নিজেকে ‘নিম্নবিত্ত শ্রেণির প্রতিনিধি’ হিসেবে উল্লেখ করে হিরো আলম বলেন, “আমি সংসদে যেতে চাই গরিব, প্রান্তিক ও অবহেলিত মানুষদের প্রতিনিধি হয়ে। কারণ দেশের আসল শক্তি ওই পরিশ্রমী মানুষের মধ্যেই আছে। তারা দিনরাত কাজ করে দেশটাকে এগিয়ে নিচ্ছে, অথচ রাষ্ট্রীয় সেবায় সবচেয়ে বঞ্চিত তারাই। তাদের জন্য কাজ করাই আমার লক্ষ্য।”
রাজনীতিকে ‘অসহায় মানুষের অধিকারের আন্দোলন’ হিসেবে দেখেন তিনি। তার ভাষায়, “রাজনীতি হোক সেই মানুষগুলোর জন্য, যারা এখনো ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত।”
ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান, বনানী, বারিধারা, মহাখালী ও মিরপুরের কিছু অংশ নিয়ে গঠিত ঢাকা-১৭ আসনে মোট ভোটার ৩ লাখ ২৫ হাজার ২০৫ জন। এই আসনেই এর আগে প্রয়াত অভিনেতা আকবর হোসেন পাঠান ফারুকের মৃত্যুর পর অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন হিরো আলম। সেই নির্বাচনের দিন হামলার শিকার হয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনায় আসেন তিনি। ওই হামলার নিন্দা জানিয়েছিলেন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, নেদারল্যান্ডসসহ ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতেরা। জাতিসংঘের আবাসিক সমন্বয়কারী গোয়েন লুইসও টুইট করে ঘটনার নিন্দা জানান।
এর আগে ২০১৮ সালের একাদশ সংসদ নির্বাচনে হিরো আলম বগুড়া থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দেন। যাচাই-বাছাইয়ে তা দুই দফা বাতিল হলেও পরে আদালতের আদেশে প্রার্থিতা ফিরে পান এবং ‘সিংহ’ প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নেন। তবে ভোটের দিন কারচুপির অভিযোগ তুলে ভোট বর্জনের ঘোষণা দেন তিনি।
নতুন করে নির্বাচনী মাঠে নামছেন হিরো আলম। তার ভাষায়, “আমি জিতব কিনা সেটা বড় বিষয় না—বড় বিষয় হলো মানুষ যেন দেখে, নিম্নবিত্ত ঘর থেকেও কেউ রাজনীতির মাঠে নিজের কথা বলতে পারে।”

ডেস্ক রিপোর্ট 



















