ঢাকা , বুধবার, ১২ নভেম্বর ২০২৫, ২৮ কার্তিক ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
শিরোনাম ::
রাজশাহীতে টায়ারে আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ ছাত্রদল নেতা শহীদুল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার ঢাকায় ১২ প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন, ‘লকডাউন’ ঘিরে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি দিল্লিতে শেখ হাসিনার গোপন বৈঠক: দেশ destabilize করার পরিকল্পনা ফাঁস ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ স্থাপনায় তালা ঝুলিয়ে ‘লকডাউন সফল’ আহ্বান ছাত্রলীগের 🇸🇦 ২০২৬ সালের হজচুক্তি স্বাক্ষরিত: বাংলাদেশ থেকে ৭৮ হাজার ৫০০ জন হজ পালন করবেন ১৩ নভেম্বর কী হবে ঢাকায়, চিন্তায় কলকাতার আ.লীগ নেতারাও লকডাউন’ রুখে দেয়ার ঘোষণা পুলিশের, কী করবে আওয়া’মী লী’গ? গণভোট না হলে ২০২৯ সালের নির্বাচন ফ্যাসিস্ট হাসিনার কথার মতো’ গাজীপুরে দাঁড়িয়ে থাকা যাত্রীবাহী বাসে দুর্বৃত্তদের অগ্নিসংযোগ শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরে ক্ষমা চাওয়ার আহ্বান মির্জা ফখরুলের

রাজনৈতিক বিরোধ না মিটিয়ে আরপিও সংশোধনের গেজেট

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • আপডেট সময় ০৮:৪৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫
  • ১৭২ বার পড়া হয়েছে

 

জোটবদ্ধ হয়ে এক দলের প্রতীকে অন্য দলের প্রার্থীর নির্বাচনের সুযোগ শেষ হলো। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশের গেজেট জারি করেছে সরকার। ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে।

নতুন সংশোধনে আরও এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। এখন থেকে কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে বা নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছরের মধ্যে ঋণখেলাপি হলে তাঁর আসন শূন্য হয়ে যাবে। পলাতক আসামি প্রার্থী হতে পারবেন না, অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগও বাতিল হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় যুক্ত করা হয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে— ফলে সশস্ত্র বাহিনীও এখন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। পাশাপাশি ফিরেছে আংশিক ‘না’ ভোট— একক প্রার্থী থাকলে ভোটাররা চাইলে তাঁকে ‘না’ ভোট দিতে পারবেন।

আরও পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে:

  • জামানত ৫০ হাজার টাকা,
  • দল আচরণবিধি ভাঙলে সর্বোচ্চ ১.৫ লাখ টাকা জরিমানা,
  • এআইয়ের অপব্যবহার নির্বাচনী অপরাধ,
  • আইটি-সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতি চালু,
  • অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে,
  • হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে নির্বাচনের পরও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকা প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণার প্রস্তাবটি অবশ্য বাদ গেছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
বিএনপি ও এর শরিক দলগুলো এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে, যুক্তি দিয়েছে— জোটবদ্ধ নির্বাচনে একাধিক প্রতীক থাকলে প্রচার কার্যক্রম জটিল হয়ে পড়ে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “এমন পরিবর্তনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া উচিত ছিল।”

অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদ মনে করছে, জোট রাজনীতিতে একই প্রতীক গুরুত্বপূর্ণ, তাই এ সিদ্ধান্ত জোট ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে।

তবে বিপরীতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিষয়টিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “অনেক দল মাঠে না থেকেও বড় দলের প্রতীকে নির্বাচন করে। এতে প্রকৃত রাজনীতিবিদদের জন্য সুযোগ কমে যায়। নিজস্ব প্রতীক বাধ্যতামূলক হলে এ ধরনের সমঝোতা কমবে।”

বিশ্লেষণ:
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কমিশনের বেশিরভাগ প্রস্তাবই গেজেটে উপেক্ষিত হয়েছে। দলীয় গণতন্ত্র, আর্থিক স্বচ্ছতা ও তৃণমূল পর্যায়ের মনোনয়ন প্যানেল বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব রাখা হয়নি।

নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনী আইন সংস্কারের চূড়ান্ত ধাপ সম্পন্ন করেছে সরকার। এখন নির্বাচন কমিশন দ্রুত দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি চূড়ান্ত করবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।

ট্যাগস

আপনার মতামত লিখুন

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আপনার ইমেইল ও অন্যান্য তথ্য সঞ্চয় করে রাখুন

জনপ্রিয় সংবাদ

রাজশাহীতে টায়ারে আগুন দিতে গিয়ে দগ্ধ ছাত্রদল নেতা শহীদুল স্থায়ীভাবে বহিষ্কার

রাজনৈতিক বিরোধ না মিটিয়ে আরপিও সংশোধনের গেজেট

আপডেট সময় ০৮:৪৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

 

জোটবদ্ধ হয়ে এক দলের প্রতীকে অন্য দলের প্রার্থীর নির্বাচনের সুযোগ শেষ হলো। রাজনৈতিক মতবিরোধ থাকলেও উপদেষ্টা পরিষদের অনুমোদনের পর গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) সংশোধন অধ্যাদেশের গেজেট জারি করেছে সরকার। ফলে আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রত্যেক প্রার্থীকে নিজ দলের প্রতীকেই নির্বাচন করতে হবে।

নতুন সংশোধনে আরও এসেছে বেশ কিছু পরিবর্তন। এখন থেকে কোনো প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিলের সাত দিন আগে বা নির্বাচিত হয়ে পাঁচ বছরের মধ্যে ঋণখেলাপি হলে তাঁর আসন শূন্য হয়ে যাবে। পলাতক আসামি প্রার্থী হতে পারবেন না, অনলাইনে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সুযোগও বাতিল হয়েছে।

আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সংজ্ঞায় যুক্ত করা হয়েছে সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী ও বিমানবাহিনীকে— ফলে সশস্ত্র বাহিনীও এখন ভোটকেন্দ্রে দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবে। পাশাপাশি ফিরেছে আংশিক ‘না’ ভোট— একক প্রার্থী থাকলে ভোটাররা চাইলে তাঁকে ‘না’ ভোট দিতে পারবেন।

আরও পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে:

  • জামানত ৫০ হাজার টাকা,
  • দল আচরণবিধি ভাঙলে সর্বোচ্চ ১.৫ লাখ টাকা জরিমানা,
  • এআইয়ের অপব্যবহার নির্বাচনী অপরাধ,
  • আইটি-সাপোর্টেড পোস্টাল ভোটিং পদ্ধতি চালু,
  • অনিয়ম হলে পুরো আসনের ভোট বাতিলের ক্ষমতা ইসির হাতে,
  • হলফনামায় অসত্য তথ্য দিলে নির্বাচনের পরও ব্যবস্থা নেওয়া যাবে।

শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটিতে থাকা প্রার্থীদের অযোগ্য ঘোষণার প্রস্তাবটি অবশ্য বাদ গেছে।

রাজনৈতিক প্রতিক্রিয়া:
বিএনপি ও এর শরিক দলগুলো এ সিদ্ধান্তে আপত্তি জানিয়েছে, যুক্তি দিয়েছে— জোটবদ্ধ নির্বাচনে একাধিক প্রতীক থাকলে প্রচার কার্যক্রম জটিল হয়ে পড়ে। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, “এমন পরিবর্তনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত নেওয়া উচিত ছিল।”

অন্যদিকে গণঅধিকার পরিষদ মনে করছে, জোট রাজনীতিতে একই প্রতীক গুরুত্বপূর্ণ, তাই এ সিদ্ধান্ত জোট ব্যবস্থাকে দুর্বল করবে।

তবে বিপরীতে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) বিষয়টিকে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে। দলটির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব বলেন, “অনেক দল মাঠে না থেকেও বড় দলের প্রতীকে নির্বাচন করে। এতে প্রকৃত রাজনীতিবিদদের জন্য সুযোগ কমে যায়। নিজস্ব প্রতীক বাধ্যতামূলক হলে এ ধরনের সমঝোতা কমবে।”

বিশ্লেষণ:
নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কার কমিশনের প্রধান ড. বদিউল আলম মজুমদার বলেছেন, কমিশনের বেশিরভাগ প্রস্তাবই গেজেটে উপেক্ষিত হয়েছে। দলীয় গণতন্ত্র, আর্থিক স্বচ্ছতা ও তৃণমূল পর্যায়ের মনোনয়ন প্যানেল বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব রাখা হয়নি।

নতুন অধ্যাদেশের মাধ্যমে নির্বাচনী আইন সংস্কারের চূড়ান্ত ধাপ সম্পন্ন করেছে সরকার। এখন নির্বাচন কমিশন দ্রুত দল ও প্রার্থীর আচরণবিধি চূড়ান্ত করবে। আগামী ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন এবং ডিসেম্বরের প্রথমার্ধে তপশিল ঘোষণা করার পরিকল্পনা রয়েছে ইসির।